Ar-Ra'd • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ لِلَّذِينَ ٱسْتَجَابُوا۟ لِرَبِّهِمُ ٱلْحُسْنَىٰ ۚ وَٱلَّذِينَ لَمْ يَسْتَجِيبُوا۟ لَهُۥ لَوْ أَنَّ لَهُم مَّا فِى ٱلْأَرْضِ جَمِيعًۭا وَمِثْلَهُۥ مَعَهُۥ لَٱفْتَدَوْا۟ بِهِۦٓ ۚ أُو۟لَٰٓئِكَ لَهُمْ سُوٓءُ ٱلْحِسَابِ وَمَأْوَىٰهُمْ جَهَنَّمُ ۖ وَبِئْسَ ٱلْمِهَادُ ﴾
“of those who have responded to their Sustainer with a goodly response, and of those who did not respond to Him. [As for the latter,] if they possessed all that is on earth, and twice as much, they would surely offer it as ransom [on the Day of Judgment]: a most evil reckoning awaits them, and their goal is hell: and how evil a resting-place!”
১৮ নং আয়াতের তাফসীর: উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রতিদানের কথা বর্ণনা করছেন যারা তাঁর ডাকে সাড়া দেয় আর যারা তাঁর ডাকে সাড়া দেয়া না। যারা আল্লাহ তা‘আলার ডাকে সাড়া দেয় তথা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমান আনে ও সৎ আমল করে তারা উভয়কালে শান্তিতে থাকবে। তাদের কোন ভয় থাকবে না এবং তারা দুশ্চিন্তা গ্রস্তও হবে না। আল্লাহ তা‘আলার বাণী: (إنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَأَقَامُوا الصَّلوٰةَ وَاٰتَوُا الزَّكوٰةَ لَهُمْ أَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ ج وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُوْنَ) “নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে, সৎকাজ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত আদায় করে তাদের রবের কাছে এসব আমলের প্রতিদান মওজুদ রয়েছে। আর তাদের কোন ভয় নেই, চিন্তাও নেই।” (সূরা বাক্বারা ২:২৭৭) الْحُسْنٰي অর্থ দুনিয়াতে সহযোগিতা করা এবং আখিরাতে চিরস্থায়ী নেয়ামত ভোগ করা। আর যারা আল্লাহ তা‘আলার ডাকে সাড়া দেয়া না তথা আল্লাহ তা‘আলার সাথে কুফরী করে, রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তাদের অবস্থা এমন হবে যে, যদি তারা সমস্ত পৃথিবী ও তার সমপরিমাণ সম্পদের মালিক হত, তাহলে তা বিনিময়স্বরূপ দিয়ে শাস্তি থেকে মুক্তি পেতে চায়তো। বস্তুত কিয়ামতের দিন কারো নিকট থেকে কোন কিছুই গ্রহণ করা হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَمَاتُوْا وَهُمْ كُفَّارٌ فَلَنْ يُّقْبَلَ مِنْ أَحَدِهِمْ مِّلْءُ الْأَرْضِ ذَهَبًا وَّلَوِ افْتَدٰي بِه۪) “নিশ্চয়ই যারা কুফরী করেছে এবং কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে তাদের পক্ষ থেকে পৃথিবী ভরা স্বর্ণও বিনিময় স্বরূপ প্রদান করতে চাইলে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না।” (সূরা আলি ইমরান ৩:৯১) আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, (إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لَوْ أَنَّ لَهُمْ مَّا فِي الْأَرْضِ جَمِيْعًا وَّمِثْلَه۫ مَعَه۫ لِيَفْتَدُوْا بِه۪ مِنْ عَذَابِ يَوْمِ الْقِيٰمَةِ مَا تُقُبِّلَ مِنْهُمْ ج وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ) “নিশ্চয়ই যারা কুফরী করেছে, যদি তাদের কাছে পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ থাকে এবং তার সাথে সমপরিমাণ আরও থাকে আর এগুলোর বিনিময়ে কিয়ামাতের দিন শাস্তি থেকে রেহাই পেতে চায়, তবুও তাদের নিতট হতে তা কবূল করা হবে না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” (সূরা মায়েদা ৫:৩৬) তাদের হিসাব হবে খুবই কঠিন। তাদের ছোট-বড় প্রত্যেকটি কর্মের হিসাব নেয়া হবে। আর যাদের হিসাব চাওয়া হবে তারা মুক্তি পাবে না। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যার হিসাব চাওয়া হবে, সে ধ্বংস হয়ে যাবে। (সহীহ বুখারী হা: ১০৩, সহীহ মুসলিম হা: ৭৪০৮) সুতরাং যারা আল্লাহ তা‘আলার ডাকে সাড়া দিবে না তারা দুনিয়াতেও লাঞ্ছিত হবে এবং আখিরাতেও কঠিন শাস্তি ভোগ করবে। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: (১) যারা মু’মিন তারা আখিরাতে নিষ্কৃতি লাভ করবে আর যারা কাফির তারা কঠিন শাস্তি ভোগ করবে। (২) আল্লাহ তা‘আলা যার হিসাব নিবেন সে শাস্তি থেকে রেহাই পাবে না। (৩) জাহান্নাম বড় কষ্টের জায়গা, সেখানে আরামে থাকা যাবে না।