Ar-Ra'd • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ كَذَٰلِكَ أَرْسَلْنَٰكَ فِىٓ أُمَّةٍۢ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهَآ أُمَمٌۭ لِّتَتْلُوَا۟ عَلَيْهِمُ ٱلَّذِىٓ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ وَهُمْ يَكْفُرُونَ بِٱلرَّحْمَٰنِ ۚ قُلْ هُوَ رَبِّى لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ مَتَابِ ﴾
“Thus have We raised thee [O Muhammad] as Our Apostle amidst a community [of unbelievers] before whose time [similar] communities have come and gone, so that thou might propound to them what We have revealed unto thee: for [in their ignorance] they deny the Most Gracious! Say: "He is my Sustainer. There is no deity save Him. In Him have I placed my trust, and unto Him is my recourse!"”
৩০ নং আয়াতের তাফসীর: উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন যে, তোমাকে যেমনভাবে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হচ্ছে অনুরূপভাবে তোমার পূর্ববর্তী নবীদেরকেও মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়েছিল। সুতরাং তুমি মন খারাপ কর না। তোমাকে যেরূপ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তাদেরকেও অনুরূপ তাদের উম্মতদেরকে আমার বিধান পাঠ করে শুনানোর ও তাদের সতর্ক করার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা তা শুনেনি বরং মিথ্যা মনে করেছে। ফলে তাদেরকে শাস্তি পেয়ে বসেছে। অতএব তাদেরও তাদের পূর্ববর্তীদের শাস্তির কথা লক্ষ্য করা উচিৎ। তারা এ শাস্তি থেকে রেহাই পাবে না। আল্লাহ তা‘আলার বাণী: (تَاللّٰهِ لَقَدْ أَرْسَلْنَآ إِلٰٓي أُمَمٍ مِّنْ قَبْلِكَ فَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطٰنُ أَعْمَالَهُمْ فَهُوَ وَلِيُّهُمُ الْيَوْمَ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ - وَمَآ أَنْزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتٰبَ إِلَّا لِتُبَيِّنَ لَهُمُ الَّذِي اخْتَلَفُوْا فِيْهِ لا وَهُدًى وَّرَحْمَةً لِّقَوْمٍ يُّؤْمِنُوْنَ) “শপথ আল্লাহর! আমি তোমার পূর্বেও বহু জাতির নিকট রাসূল প্রেরণ করেছি; কিন্তু শয়তান ঐসব জাতির কার্যকলাপ তাদের দৃষ্টিতে শোভন করেছিল; সুতরাং সে-ই আজ তাদের অভিভাবক এবং তাদেরই জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আমি তো তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি যারা এ বিষয়ে মতভেদ করে তাদেরকে সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেবার জন্য এবং মু’মিনদের জন্য পথনির্দেশ ও দয়াস্বরূপ।” (সূরা নাহল ১৬:৬৩-৬৪) অতএব, তুমি মানুষকে এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করার দিকে দা‘ওয়াত দিয়ে যাও এবং তাদের কথার উপর ধৈর্য ধারণ কর, নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ তা‘আলাই তোমাকে সাহায্য করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (وَلَقَدْ كُذِّبَتْ رُسُلٌ مِّنْ قَبْلِكَ فَصَبَرُوْا عَلٰي مَا كُذِّبُوْا وَأُوْذُوْا حَتّٰي أَتٰهُمْ نَصْرُنَا ج وَلَا مُبَدِّلَ لِكَلِمٰتِ اللّٰهِ ج وَلَقَدْ جَا۬ءَكَ مِنْ نَّبَاْئِ الْمُرْسَلِيْنَ) “মিথ্যা প্রতিপন্ন করা ও কষ্ট দেয়া সত্ত্বেও তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল যে পর্যন্ত না আমার সাহায্য তাদের নিকট এসেছে। আল্লাহর আদেশ কেউ পরিবর্তন করতে পারে না, রাসূলগণের সম্বন্ধে কিছু সংবাদ তো তোমার নিকট এসেছেই।” (সূরা আনয়াম ৬:৩৪) অত্র আয়াত থেকে তাদের এটা লক্ষ্য করা উচিৎ যে, কিভাবে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অনুগত লোকদেরকে সাহায্য করেছিলেন এবং কিভাবে তাদেরকে জয়যুক্ত করেছিলেন এবং কিভাবে অস্বীকারকারীদেরকে শাস্তি প্রদান করেছিলেন। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. মানুষের তিরস্কারমূলক কথাবার্তার কারণে ইসলামের দিকে মানুষকে আহ্বান করা বন্ধ করা যাবে না। বরং দাওয়াতী কাজ চালিয়ে যেতে হবে। ২. সর্বাবস্থায় ধৈর্য ধারণ ও আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা করতে হবে।