Ar-Ra'd • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ ۞ مَّثَلُ ٱلْجَنَّةِ ٱلَّتِى وُعِدَ ٱلْمُتَّقُونَ ۖ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ ۖ أُكُلُهَا دَآئِمٌۭ وَظِلُّهَا ۚ تِلْكَ عُقْبَى ٱلَّذِينَ ٱتَّقَوا۟ ۖ وَّعُقْبَى ٱلْكَٰفِرِينَ ٱلنَّارُ ﴾
“THE PARABLE of the paradise promised to those who are conscious of God [is that of a garden] through which running waters flow: [but, unlike an earthly garden,] its fruits will be everlasting, and [so will be] its shade. Such will be the destiny of those who remain conscious of God-just as the destiny of those who deny the truth will be the fire.”
৩৫ নং আয়াতের তাফসীর: পূর্বের আয়াতে কাফিরদের অশুভ পরিণামের পর অত্র আয়াতে মু’মিনদের শুভ পরিণামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যাতে জান্নাত লাভের প্রতি আগ্রহ ও আকাক্সক্ষা সৃষ্টি হয়। মু’মিনদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে তার উপমা হল তার তলদেশে নদী প্রবাহিত। জান্নাতের খাবার ও ছায়া চিরস্থায়ী যা কখনো শেষ হবে না। সেখানে থাকবে দুধের, মধুর এবং শরাবের নহর যা কখনো নষ্ট হবে না। আল্লাহ তা‘আলার বাণী: “মুত্তাকীদের জন্য এমন জান্নাতের ওয়াদা করা হয়েছে, যার মধ্যে বহমান থাকবে পরিস্কার পানির নহর, এমন দুধের নহর যার স্বাদ অপরিবর্তনীয় এবং আছে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু শরাবের নহর, আরো আছে এমন মধুর নহর যা খাঁটি ও স্বচ্ছ। তাদের জন্য আরো থাকবে সব রকমের ফল এবং তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত। (যে এমন জান্নাতের ভাগী হবে সে কি) তাদের মত হতে পারে, যারা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে এবং যাদেরকে এমন ফুটন্ত পানি পান করানো হবে যা তাদের নাড়ি-ভুঁড়ি পর্যন্ত কেটে ফেলবে?” (সূরা মুহাম্মদ ৪৭:১৫) তাদের জন্য তথায় আরো থাকবে ফলমূল ও সন্নিহিত বৃক্ষ ছায়া। আল্লাহ তা‘আলার বাণী: (وَّفَاكِهَةٍ كَثِيْرَةٍ لا لَّا مَقْطُوْعَةٍ وَّلَا مَمْنُوْعَةٍ) “প্রচুর ফলমূল, যা শেষ হবে না ও যা নিষিদ্ধও হবে না।” (সূরা ওয়াক্বিয়া ৫৬:৩২-৩৩) আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন: (وَدَانِيَةً عَلَيْهِمْ ظِلَالُهَا وَذُلِّلَتْ قُطُوْفُهَا تَذْلِيْلًا) “জান্নাতের বৃক্ষছায়া তাদের উপর ঝুঁকে থাকবে এবং ওর ফলমূল সম্পূর্ণরূপে তাদের আয়ত্বাধীন থাকবে।” (সূরা দাহর ৭৬:১৪) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: সর্বশেষ যে ব্যক্তি জান্নাতে যাবে তাকে দুনিয়া ও দশটি দুনিয়া সমপরিমাণ জান্নাত দেয়া হবে। (সহীহ বুখারী হা: ৬৫৭১) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেন: জান্নাতে এমন একটি গাছ আছে যার তলদেশ দিয়ে একজন আরোহী একশত বছর চলাচল করেও শেষ করতে পারবে না। (সহীহ বুখারী হা: ৩২৫২) এ ছাড়াও জান্নাতে নেয়ামত সম্পর্কে অসংখ্য আয়াত ও হাদীস রয়েছে যা যথাস্থানে আলোচনা করা হবে, ইনশাআল্লাহ। সুতরাং এ নেয়ামতপূর্ণ জান্নাত পেতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই ঈমানের সাথে সৎ আমল করতে হবে। অন্যথায় আশা করে বসে থাকলে হবে না। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. জান্নাতে চার ধরনের নহর থাকবে। তা হল- দুধের, মধুর, পানির ও শরাবের। ২. মু’মিনদের জন্য জান্নাতে সকল প্রকার ফলমূল থাকবে।