Al-Israa • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ قُل لَّوْ أَنتُمْ تَمْلِكُونَ خَزَآئِنَ رَحْمَةِ رَبِّىٓ إِذًۭا لَّأَمْسَكْتُمْ خَشْيَةَ ٱلْإِنفَاقِ ۚ وَكَانَ ٱلْإِنسَٰنُ قَتُورًۭا ﴾
“Say: "If you were to own' all the treasure-houses of my Sustainer's bounty, lo! you would still try to hold on [to them] tightly for fear of spending [too much]: for man has always been avaricious [whereas God is limitless in His bounty].”
১০০ নং আয়াতের তাফসীর: উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা অধিকাংশ মানুষের একটি বদ-অভ্যাসের কথা বর্ণনা করছেন। মানুষ মনে করে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ধন সম্পদের অভাব নেই, তিনি তো আমাদেরকে অঢেল সম্পদ দিলেই পারেন। আমাদের দূরবস্থা ও অভাব অনটনে থাকতে হতো না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আমার কাছে ধন-সম্পদের যে ভাণ্ডার রয়েছে যা কখনো ফুরিয়ে যাবে না, তা যদি তোমাদেরকে দেয়া হয় তাহলে তোমরা এ কথা জানা সত্ত্বেও মানুষকে দান করবে না এ আশংকায় যে, যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে আমরা অভাবে পড়ে যাব। অথচ আমি সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষকে ধন-সম্পদ ও নেয়ামত দান করেই আসছি। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: يَدُ اللّٰهِ مَلْأَي لاَ يَغِيضُهَا نَفَقَةٌ، سَحَّاءُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ، وَقَالَ: أَرَأَيْتُمْ مَا أَنْفَقَ مُنْذُ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ، فَإِنَّهُ لَمْ يَغِضْ مَا فِي يَدِهِ আল্লাহ তা‘আলার হাত ধন-সম্পদে পরিপূর্ণ, দিন-রাত ব্যয় করাতেও তা কমে না। তোমরা কি লক্ষ্য করেছ, আকাশ-জমিন সৃষ্টির পর থেকে কত ব্যয় করে আসছেন, কিন্তু তার পরেও তাঁর হাতে যা রয়েছে তা কমে না। (সহীহ বুখারী হা: ৪৭১১) কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা পরিমিতভাবে দিয়ে থাকেন। অধিক দিলে ফাসাদ সৃষ্টি হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (وَلَوْ بَسَطَ اللہُ الرِّزْقَ لِعِبَادِھ۪ لَبَغَوْا فِی الْاَرْضِ وَلٰکِنْ یُّنَزِّلُ بِقَدَرٍ مَّا یَشَا۬ئُ اِنَّھ۫ بِعِبَادِھ۪ خَبِیْرٌۭ بَصِیْرٌ) “আল্লাহ তাঁর (সকল) বান্দাদের রুযী বাড়িয়ে দিলে তারা পৃথিবীতে অবশ্যই সীমালঙ্ঘন করত; কিন্তু তিনি তাঁর ইচ্ছামত পরিমাণেই দিয়ে থাকেন। তিনি তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক জানেন ও দেখেন।” (সূরা শুরা ৪২:২৭) (خَشْيَةَ الْإِنْفَاقِ) অর্থ- خشية ان ينفقوا فيفتقروا অর্থাৎ এ ভয়ে যে, দান করলে ধন শেষ হয়ে যাবে, ফলে তারা নিঃস্ব হয়ে যাবে। মানুষ সংকীর্ণ চিত্তের অধিকারী হওয়ায় কার্পণ্য করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (أَمْ لَهُمْ نَصِيْبٌ مِّنَ الْمُلْكِ فَإِذًا لَّا يُؤْتُوْنَ النَّاسَ نَقِيْرًا ) “তাদের কি রাজত্বে কোন অংশ আছে? যদি তাদের কোন অংশ থাকত তাহলে লোকদের তিল পরিমাণও দিত না।” (সূরা নিসা ৪:৫৩) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন: (إِنَّ الْإِنْسَانَ خُلِقَ هَلُوْعًا لا إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوْعًا لا وَّإِذَا مَسَّهُ الْخَيْرُ مَنُوْعًا ) “নিশ্চয়ই মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে অস্থিরমনা রূপে; যখন তাকে বিপদ স্পর্শ করে তখন সে হয় হা-হুতাশকারী। আর যখন কল্যাণ তাকে স্পর্শ করে তখন সে হয় অতি কৃপণ।” (সূরা মাআ‘রিজ ৭০:১৯-২১) সুতরাং আল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার আগে নিজের অবস্থানের দিকে লক্ষ্য করা উচিত। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. দান করার ব্যাপারে কোন কৃপণতা করা যাবে না। আল্লাহ তা‘আলা যা কিছু দিবেন তা থেকে সাধ্যমত দান করতে হবে।