Al-Israa • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ رَّبُّكُمْ أَعْلَمُ بِمَا فِى نُفُوسِكُمْ ۚ إِن تَكُونُوا۟ صَٰلِحِينَ فَإِنَّهُۥ كَانَ لِلْأَوَّٰبِينَ غَفُورًۭا ﴾
“Your Sustainer is fully aware of what is in your hearts. If you are righteous, [He will forgive you your errors]: for, behold, He is much-forgiving to those who turn unto Him again and again.”
২৫ নং আয়াতের তাফসীর: উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা সংবাদ দিচ্ছেন যে, মানুষ অন্তরে যা কিছু গোপন করে সেগুলো তিনি অধিক জানেন। কোন কাজ প্রকাশ্যে করা হোক, অপ্রকাশ্যে করা হোক, আলোতে করা হোক আর অন্ধকারে করা হোক, মানুষ দেখুক আর না-ই দেখুক, সব খবর তিনি রাখেন। তাঁর জ্ঞান থেকে কোন কিছু লুকানোর সুযোগ নেই। অন্যত্র তিনি বলেন: (إِنَّ اللّٰهَ عَالِمُ غَيْبِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ ط إِنَّه۫ عَلِيْمٌۭ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ) “নিশ্চয়ই আল্লাহ আসমান ও জমিনের যাবতীয় অদৃশ্য বিষয় পরিজ্ঞাত। অন্তরে যা কিছু রয়েছে সে সম্বন্ধেও তিনি সবকিছু অবগত।” (সূরা ফাতির ৩৫:৩৮) اوابِيْنَ শব্দের অর্থ: অভিমুখী হওয়া, ফিরে আসা। কেউ কেউ বলেন, اوابِيْنَ বলা ঐ সমস্ত সৎ লোকদেরকে যারা মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে নফল সালাত পড়ে। কারো মতে, যারা চাশ্তের সালাত আদায় করে তাদেরকেই اوابِيْنَ বলা হয়। অন্য একদল বলেন, যারা প্রত্যেক পাপ কার্যের পর তাওবা করে তাড়াতাড়ি মঙ্গলের দিকে ফিরে আসে এবং নির্জনে নিজেদের পাপের কথা স্মরণ করে আন্তরিকতার সাথে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাদেরকে اوابِيْنَ বলা হয়। উবায়েদ (রহঃ) বলেন যে, اوابِيْنَ হচ্ছে তারাই যারা বারবারই কোন মজলিস হতে ওঠার পর এই দু‘আ পাঠ করে: اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ مَا أَصَبْتُ فِيْ مَجْلِسِيْ هَذَا হে আল্লাহ এ মজলিসে যা ভুল করেছি তা ক্ষমা করে দাও। ইমাম ইবনে জারীর (রহঃ) বলেন, সঠিক উক্তি হচ্ছে, যারা গুণাহ হতে তাওবা করে অবাধ্যতা থেকে আনুগত্যের দিকে ফিরে আসে, আল্লাহ তা‘আলার কাছে যা ঘৃণ্য তা ছেড়ে দিয়ে তাঁর সন্তুষ্টিমূলক কাজ করে তারাই হল اوابِيْنَ । (ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর) এখান থেকেই চাশতের সালাতকে আওয়াবিনের সালাত বলা হয়। কারণ এ সময় মু’মিনরা আল্লাহ তা‘আলার দিকে ফিরে আসে, যে সময় সাধারণত সকলে কাজ কর্মে ব্যস্ত থাকে। (সহীহ মুসলিম হা: ৭৪৮) আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: (১) আল্লাহ তা‘আলা মানুষের বাহ্যিক জিনিস দেখে বিচার করেন না বরং তার নিয়তের প্রতি লক্ষ্য করেন। (২) মানুষের অন্তরের খবরও আল্লাহ তা‘আলা রাখেন, তিনি অন্তরযামী।