Al-Israa • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِۦ عِلْمٌ ۚ إِنَّ ٱلسَّمْعَ وَٱلْبَصَرَ وَٱلْفُؤَادَ كُلُّ أُو۟لَٰٓئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْـُٔولًۭا ﴾
“And never concern thyself with anything of which thou hast no knowledge: verily, [thy] hearing and sight and heart - all of them - will be called to account for it [on Judgment Day]!”
৩৬ নং আয়াতের তাফসীর: قفا-يقفو এর অর্থ পেছনে পড়া। অর্থাৎ যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই তার পেছনে পড়ো না, আন্দাজে কথা বলো না। ইবনু আব্বাস ও কাতাদাহ (রহঃ) বলেন: যা দেখনি বলো না, দেখেছি। যা শোননি বলো না, শুনেছি। আর যা জান না বলো না, জানি। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন: এমন কাউকে তিরস্কার করো না যার ব্যাপারে তোমার কোন জ্ঞান নেই। সুতরাং যে বিষয়ে জ্ঞান নেই সে বিষয়ে কথা বলা, যা সঠিকভাবে শোনা নেই তা বলা সম্পূর্ণ নিষেধ। তা দুনিয়ার কোন ব্যাপারে হোক আর ধর্মীয় কোন ব্যাপারে হোক। ধর্মীয় ব্যাপারে আরো কঠোরভাবে নিষেধ রয়েছে। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: كَفَي بِالْمَرْءِ كَذِبًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِعَ একজন ব্যক্তি মিথ্যুক হওয়ার জন্য এতটুকুই যতেষ্ট যে, সে যা শুনবে (যাচাই বাছাই না করে) তাই বলে বেড়ায়। (সহীহ মুসলিম হা: ৫) আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اجْتَنِبُوْا كَثِيْرًا مِّنَ الظَّنِّ ز إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ) “ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা বেশি বেশি অনুমান করা থেকে বিরত থাক। কারণ, কোন কোন অনুমান গুনাহের কাজ।” (সূরা হুজরাত ৪৯:১২) হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: তোমরা ধারণা করা থেকে বেঁচে থাক, ধারণা হচ্ছে জঘন্য মিথ্যা কথা। (সহীহ বুখারী হা: ৫১৪৩, সহীহ মুসলিম হা: ১৪১৩) কারণ কিয়ামতের দিন মানুষের চক্ষু, কর্ণ ও অন্তরকে জিজ্ঞেস করা হবে। চক্ষুকে জিজ্ঞেস করা হবে সে কী দেখেছিল, কর্ণকে জিজ্ঞেস করা হবে সে কী শুনেছিল, আর অন্তরকে জিজ্ঞেস করা হবে সে কী চিন্তা ভাবনা করেছে। কিয়ামতের দিন এদের বাকশক্তি দেয়া হবে আর এরা তখন স্বাক্ষী দেবে। এ আয়াত থেকে অনেক বিদ্বানগণ তাকলীদ করা নিষেধ করেছেন, কারণ যিনি তাকলীদ করেন তিনি বিনা জ্ঞানে যার তাকলীদ করা হয় তার অনুসরণ করে থাকেন। অথচ যে বিষয়ে জ্ঞান নেই সে বিষয়ে আমল করতে আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন। (আযওয়াউল বায়ান, অত্র আয়াতের তাফসীর) অতএব কোন কিছু বলার পূর্বে আমাদের ভেবেচিন্তে বলা উচিত, যা বলছি তা কি আমি সঠিকভাবে জানি? যদি না জানা থাকে তাহলে বিরত থাকাই কল্যাণকর। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. কোন বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকলে সে বিষয়ে কথা বলা নিষেধ। ২. ধারণা করে কথা বলা একটি জঘন্যতম পাপ। ৩. চক্ষু, কর্ণ, অন্তর এদের জবান কিয়ামতের দিন খুলে দেয়া হবে আর এরা তখন সাক্ষ্য দেবে।