Al-Israa • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ وَمَا مَنَعَنَآ أَن نُّرْسِلَ بِٱلْءَايَٰتِ إِلَّآ أَن كَذَّبَ بِهَا ٱلْأَوَّلُونَ ۚ وَءَاتَيْنَا ثَمُودَ ٱلنَّاقَةَ مُبْصِرَةًۭ فَظَلَمُوا۟ بِهَا ۚ وَمَا نُرْسِلُ بِٱلْءَايَٰتِ إِلَّا تَخْوِيفًۭا ﴾
“And nothing has prevented Us from sending [this message, like the earlier ones,] with miraculous signs [in its wake], save [Our knowledge] that the people of olden times [only too often] gave the lie to them: thus, We provided for [the tribe of] Thamud the she-camel as a light-giving portent, and they sinned against it. And never did We send those signs for any other purpose than to convey a warning.”
৫৯ নং আয়াতের তাফসীর: শানে নুযূল: ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: মক্কাবাসী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আবেদন করল সাফা পাহাড় তাদের জন্য স্বর্ণে পরিণত করে দেয়ার জন্য এবং মক্কা থেকে পাহাড়-পর্বত সরিয়ে দেয়ার জন্য, তারা সেখানে আবাদ করবে। ঐ সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ওয়াহী আসল। এতে তাকে বলা হল, আপনি যদি তাদেরকে অবকাশ দেন তাহলে অবকাশ দেয়া হবে আর যদি তারা যা চায় তা দিতে বলেন, তাহলে তা-ই দেব কিন্তু এর পরেও যদি তারা অস্বীকার করে তাহলে তারা তাদের পূর্ববর্তী জাতির মত ধ্বংস হয়ে যাবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে অবকাশ দেয়ার কথা বললেন। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতটি অবতীর্ণ করেন। (আহমাদ হা: ২৫৮, বাইহাক্বী ফিল কুবরা হা: ৩৮০) (লুবাবুন নুকুল ফি আসবাবিন নুযূল-পৃ.১৭০) এই আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করছেন যে, মানুষের ইচ্ছা অনুযায়ী নিদর্শন প্রেরণ করা আল্লাহ তা‘আলার জন্য কোন কঠিন কাজ নয়। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা এ থেকে বিরত থাকেন এ জন্য যে, পূর্বের জাতিরাও এরূপ নিদর্শন দাবী করেছিল তাদের তা দেয়ার পর তারা তাতে ঈমান আনার বিপরীতে কুফরী করল। ফলে তারা ধ্বংস হয়ে যায়। অনুরূপভাবে তাদেরকেও যদি তিনি নিদর্শন দিয়ে দেন আর তারা তাতে কুফরী করে তাহলে তাদেরকেও ধ্বংস করা হবে। যার ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের ইচ্ছানুযায়ী নিদর্শন অবতীর্ণ করেন না। উদাহরণস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা সামূদ জাতির কথা উল্লেখ করেছেন, তাদের দাবী অনুযায়ী দশমাসের গর্ভবতী উষ্ট্রী দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এ নিদর্শন পাওয়ার পরেও নাবীর প্রতি ঈমান না আনা ও আল্লাহ তা‘আলার এ নিদর্শনকে হত্যার কারণে ভীষণ ভূমিকম্প এবং ওপর থেকে বিকট ও ভয়াবহ এক গর্জন দ্বারা তাদের ধ্বংস করে দেয়া হয়। ফলে সবাই যার যার স্থানে একযোগে অধোমুখী হয়ে ভূতলশায়ী হল (সূরা আ‘রাফ ৭:৭৮, হূদ ১১::৬৭-৬৮) এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত হল এমনভাবে, যেন তারা কোনদিন সেখানে বসবাস করেনি। এদের সম্পর্কে সূরা আ‘রাফের ৭৩-৭৯ নং আয়াতের আলোচনা করা হয়েছে। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. নিদর্শন প্রেরণ করার একমাত্র উদ্দেশ্য হল মানুষকে সতর্ক করা। ২. নিদর্শন প্রেরণ করা আল্লাহ তা‘আলার নিকট কোন কঠিন কাজ নয়। ৩. নিদর্শন অমান্য করলে সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলার শাস্তি এসে যায়।