Al-Kahf • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ وَلَقَدْ صَرَّفْنَا فِى هَٰذَا ٱلْقُرْءَانِ لِلنَّاسِ مِن كُلِّ مَثَلٍۢ ۚ وَكَانَ ٱلْإِنسَٰنُ أَكْثَرَ شَىْءٍۢ جَدَلًۭا ﴾
“THUS, INDEED, have We given in this Qur'an many facets to every kind of lesson [designed] for [the benefit of] mankind. However, man is, above all else, always given to contention:”
৫৪ নং আয়াতের তাফসীর: মানুষের কাছে সঠিক পথ তুলে ধরার জন্য কুরআনে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। কখনো ওয়াজ-নসিহত করার পথ অবলম্বন করা হয়েছে, কখনো ঘটনাবলী উল্লেখ করা হয়েছে, আবার কখনো উদাহরণ বর্ণনা করা হয়েছে। উপমা একটি ভাষা অলংকার, প্রত্যেক ভাষায় উপমার ব্যবহার পাওয়া যায়। উপমার দ্বারা উপমিত বস্তু বা বিষয়কে সহজে বুঝানোর চেষ্টা করা হয়। তাই বলা হয়- ضرب الامثال لتقريب الاذهان উপমা বর্ণনা করা হয় সহজে বুঝানোর জন্য। তাই আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে প্রত্যেক প্রকার উপমা বর্ণনা করেছেন, যাতে মানুষ সঠিক পথ সহজে বুঝতে পেরে তার অনুসরণ করে। কুরআনে অনেক উপমা সম্বলিত আয়াত রয়েছে। যেমন- মু’মিন মুনাফিকদের উপমা সূরা বাকারার শুরুর দিকে রয়েছে, যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করে তাঁর সন্তুষ্টির জন্য ও যারা মানুষকে দেখানোর জন্য ব্যয় করে তাদের উপমা সূরা বাকারার ২৬১ নং আয়াতে, যারা সুদ খায় তাদের উপমা সূরা বাকারার ২৭৫ নং আয়াতে, দুনিয়ার জীবনের উপমা সূরা ইউনুসের ২৪ নং আয়াতে, জান্নাতের উপমা সূরা মুহাম্মাদের ১৫ নং আয়াতে; এভাবে যারা সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত ও যারা পথভ্রষ্ট তাদের উপমা, যারা আল্লাহ তা‘আলার সাথে শির্ক করে তাদের উপমা কুরআনে বর্ণিত আছে। (وَكَانَ الْإِنْسَانُ أَكْثَرَ شَيْءٍ جَدَلًا) এই আয়াতের তাফসীরে ইমাম বুখারী (রহঃ) উল্লেখ করেন “একদা রাত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাতেমা ও আলীর (রাঃ) বাড়িতে আগমন করেন এবং তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন: তোমরা যে শুয়ে রয়েছ, সালাত আদায় করছ না কেন? উত্তরে আলী (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহ তা‘আলার রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাদের প্রাণ আল্লাহ তা‘আলার হাতে রয়েছে। যখন তিনি ইচ্ছা করেন তখনই আমাদের উঠিয়ে থাকেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলীর মুখে এ কথা শুনে আর কিছু না বলে ফিরে যেতে উদ্যত হন। ফেরবার পথে তিনি হাঁটুর ওপর হাত মেরে বলতে বলতে যাচ্ছিলেন: মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্ক করে। (মুসনাদ আহমাদ ১/১১২, সহীহ বুখারী: ৪৭২৪) আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. কোন বিষয়ে বেশি বেশি তর্ক-বিতর্ক করা যাবে না। ২. কুরআনে প্রত্যেক প্রকার উপমা বর্ণনা করা হয়েছে যাতে সঠিক পথ চিনতে ভুল না হয়।