Al-Baqara • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ لِّلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۗ وَإِن تُبْدُوا۟ مَا فِىٓ أَنفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُم بِهِ ٱللَّهُ ۖ فَيَغْفِرُ لِمَن يَشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَن يَشَآءُ ۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌ ﴾
“Unto God belongs all that is in the heavens and all that is on earth. And whether you bring into the open what is in your minds or conceal it, God will call you to account for it; and then He will forgive whom He wills, and will chastise whom He wills: for God has the power to will anything.”
২৮৪ নং আয়াতের তাফসীর: শানে নুযূল: আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: (لِلّٰهِ ما فِي السَّمَاواتِ...... قَدِيرٌ) এ আয়াত নাযিল হলে বিষয়টি সাহাবীদের ওপর খুব কঠিন হয়ে যায়। তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসল এবং জানু ভরে বসে পড়ে বলল: হে আল্লাহর রাসূল! আমাদেরকে সালাত, সিয়াম, জিহাদ এবং দানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে যা আমাদের সাধ্যের মধ্যে রয়েছে, কিন্তু এখন যে আয়াত নাযিল হয়েছে তা পালন করার শক্তি আমাদের নেই। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তোমরা কি ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানদের মত বলতে চাও আমরা শুনলাম আর মানলাম না? বরং তোমাদের বলা উচিত: আমরা শুনলাম ও মানলাম। হে আমাদের রব! আমাদের ক্ষমা করুন, আপনার কাছেই আমাদের প্রত্যাবর্তন। (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান হা:১২৭) অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলার রুবুবিয়্যাহর আলোচনা করা হয়েছে। তিনি যেমনি আকাশ ও জমিনের একচ্ছত্র মালিক। সকল কর্তৃত্ব, ক্ষমতা ও রাজত্ব তাঁর হাতে, তেমনি কাউকে ক্ষমা করা আর না করার কর্তৃত্বও তাঁর হাতে। তিনি যাকে ইচ্ছা তার অপরাধ ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাত দিতে পারেন, এটা আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ। আবার যাকে ইচ্ছা তার অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি দিতে পারেন, এতে তিনি জালিম হবেন না বরং তিনি ন্যায়পরায়ণ। কাউকে ক্ষমা করা আর না করার কর্তৃত্ব কোন নাবী-রাসূল, ওলী-আউলিয়া ও পীর-বুযুর্গকে দেয়া হয়নি। ইবনু উমার (রাঃ) বলেন: (إنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ.... ) এ আয়াতটি তার পরের আয়াত তথা ২৮৬ নং আয়াত দ্বারা মানসূখ বা রহিত করা হয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৪৬) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: অবশ্যই আল্লাহ তা‘আলা আমার উম্মতের অন্তরে উদীয়মান খেয়ালের কোন বিচার করবেন না, যে পর্যন্ত না তা কাজে পরিণত করবে অথবা মুখে উচ্চারণ করবে। (সহীহ বুখারী হা: ১৫১৮, সহীহ মুসলিম হা: ১২৭) এ থেকে বুঝা যায় যে, অন্তরে উদিত খেয়ালের কোন হিসেব হবে না। কেবল সেই খেয়ালের হিসেব হবে যা কাজে পরিণত করা হয়েছে। তবে অন্তরে ভাল চিন্তা জাগলে এর বিনিময়ে ছাওয়াব পাওয়া যাবে।