🕋 تفسير سورة الأنبياء
(Al-Anbiya) • المصدر: BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
يَوْمَ نَطْوِي السَّمَاءَ كَطَيِّ السِّجِلِّ لِلْكُتُبِ ۚ كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ ۚ وَعْدًا عَلَيْنَا ۚ إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ
📘 ১০৪ নং আয়াতের তাফসীর:
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমতা, মহত্ব ও বড়ত্বের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা সাত আকাশকে তাঁর ডান হাতে গুটিয়ে নেবেন। লেখক লেখার পর খাতাপত্র যেমন গুটিয়ে নেয় তেমনি আল্লাহ তা‘আলা আকাশকে গুটিয়ে নেবেন।
তারকা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে যাবে, চন্দ্র-সূর্য আলোহীন হয়ে যাবে। ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা জনৈক ইয়াহূদী পন্ডিত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আগমন করে বলল: হে মুহাম্মাদ! আমরা পাই যে, আল্লাহ তা‘আলা আকাশসমূহ এক আঙ্গুলের ওপর রাখবেন, জমিন এক আঙ্গুলের ওপর রাখবেন, গাছ-পালা এক আঙ্গুলের ওপর রাখবেন, পানি এক আঙ্গুলের ওপর রাখবেন, কাদা এক আঙ্গুলের ওপর রাখবেন এবং সারা সৃষ্টি এক আঙ্গুলের ওপর রাখবেন; অতঃপর বলবেন আমিই রাজাধিরাজ। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কথার সত্যতার কারণে হেসে দিলেন এমনকি তার দাঁত প্রকাশ পেয়ে গিয়েছিল। তখন তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করেন:
(وَمَا قَدَرُوا اللّٰهَ حَقَّ قَدْرِه۪ وَالْأَرْضُ جَمِيْعًا قَبْضَتُه۫ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّمَاوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِه۪ سُبْحَانَه۫ وَتَعَالٰي عَمَّا يُشْرِكُوْنَ)
“তারা আল্লাহর যথাযথ সম্মান করে না। সমস্ত পৃথিবী কিয়ামতের দিন থাকবে তাঁর হাতের মুষ্ঠিতে এবং আকাশমন্ডলী থাকবে ভাঁজকৃত তাঁর ডান হাতে। পবিত্র ও মহান তিনি, তারা যাকে তাঁর সাথে শরীক করে তিনি তার থেকে ঊর্ধ্বে।” (সূরা যুমার ৩৯:৬৭) (সহীহ বুখারী হা: ৪৮১১, সহীহ মুসলিম হা: ২৭৮৬)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন: যেভাবে আমি সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবে পুনরায় আবার সৃষ্টি করব। আর আমি এতে পূর্ণমাত্রায় সক্ষম। যেমন হাদীসে এসেছে: ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমাদেরকে আল্লাহ তা‘আলার সামনে উলঙ্গ পায়ে ও উলঙ্গ দেহে এবং খাৎনাবিহীন অবস্থায় একত্রিত করা হবে। তারপর তিনি তেলাওয়াত করেন:
(كَمَا بَدَأْنَآ أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيْدُه۫ ط وَعْدًا عَلَيْنَا ط إِنَّا كُنَّا فٰعِلِيْنَ)
‘যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব; এ আমার কৃত ওয়াদা, আমি এটা পালন করবই।” (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৪৭, সহীহ মুসলিম হা: ১০১৭)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা সাত আকাশ গুটিয়ে নেবেন। অতঃপর সকল বস্তু পুনরায় আবার সৃষ্টি করা হবে।
২. আল্লাহ তা‘আলা মহা শক্তি ও ক্ষমতার মালিক যা এ আয়াত থেকে বুঝা যায়।
وَالَّتِي أَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَنَفَخْنَا فِيهَا مِنْ رُوحِنَا وَجَعَلْنَاهَا وَابْنَهَا آيَةً لِلْعَالَمِينَ
📘 ৯১ নং আয়াতের তাফসীর:
উক্ত আয়াতে মারইয়াম (عليه السلام)-এর কথা আলোচনা করা হয়েছে। তিনি তাঁর সতীত্বকে হেফাযত করেছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা জিবরীল (عليه السلام)-এর মাধ্যমে তাঁর মাঝে রূহ ফুঁকে দিয়েছিলেন, এর মাধ্যমেই তিনি গর্ভবতী হয়েছিলেন। বিনা স্বামীতে সন্তান জন্ম দেয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা তাকে এবং সন্তান ঈসা (عليه السلام)কে শিশুকালে কথা বলা ও অন্যান্য মুজিযাহ দিয়ে উভয়কে বিশ্ববাসীর জন্য নিদর্শন করেছিলেন। তাঁর স¤পর্কে সূরা মারইয়ামে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মারইয়াম (আলাইহাস সালাম) নিজের সতীত্বকে হেফাযত করেছিলেন, কোন পরপুরুষের সাথে খারাপ কাজ করেন নি।
২. মারইয়াম (আলাইহাস সালাম) ও ঈসা (عليه السلام) উভয়ে বিশ্ববাসীর জন্য নিদর্শন।