Aal-i-Imraan • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ ٱللَّهِ وَأَيْمَٰنِهِمْ ثَمَنًۭا قَلِيلًا أُو۟لَٰٓئِكَ لَا خَلَٰقَ لَهُمْ فِى ٱلْءَاخِرَةِ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ ٱللَّهُ وَلَا يَنظُرُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ ﴾
“Behold, those who barter away their bond with God and their own pledges for a trifling gain - they shall not partake in the blessings of the life to come; and God will neither speak unto them nor look upon them on the Day of Resurrection, nor will He cleanse them of their sins; and grievous suffering awaits them.”
৭৭ নং আয়াতের তাফসীর: শানে নুযূল: আশআস বিন কায়েস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার ও একজন ইয়াহূদীর মাঝে একখণ্ড জমি অংশীদারীত্বে ছিল। কিন্তু সে আমার অংশ অস্বীকার করে। আমি বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পেশ করলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমার প্রমাণ আছে? আমি বললাম, না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইয়াহূদীকে বলেন, তুমি শপথ কর। আমি বললাম, হে আল্লাহ তা‘আলার রাসূল! সে তো শপথ করে আমার সম্পদ নিয়ে যাবে। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ২৬৬৭, ২৪১৭) অন্য বর্ণনায় আবদুল্লাহ বিন আওফা (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি বিক্রি করার জন্য বাজারে কিছু জিনিস আনল এবং কসম করে বলতে শুরু করল যে, আমাকে লোকে এ জিনিসের দাম এতো এতো দিতে চেয়েছিল। অথচ কেউ এরূপ বলেনি। এ মিথ্যা বলার উদ্দেশ্য হলো, মুসলিমরা যাতে তার এ কথা বিশ্বাস করে তার নিকট থেকে জিনিসটা বেশি মূল্যে ক্রয় করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াত নাযিল হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৫১) যারা দুনিয়ার স্বল্পমূল্যের বিনিময়ে নিজেদের দীনকে বিসর্জন দেয় তাদের জন্য চার প্রকার শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ১. পরকালে তাদের জন্য কল্যাণের কোন অংশ নেই। ২. আল্লাহ তা‘আলা তাদের সাথে কথা বলবেন না। ৩. আল্লাহ তা‘আলা তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না। ৪. তাদেরকে পবিত্রও করবেন না। হাদীসেও এ ব্যাপারে অনেক বর্ণনা এসেছে: যেমন- ১. আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তিন শ্রেণির লোকের সাথে আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাতের দিন কথা বলবেন না, পবিত্র করবেন না এবং তাদের প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে দেখবেন না। তারা হল: (১) যে ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরে, (২) মিথ্যা শপথ করে পণ্য বিক্রি করে, (৩) কারো প্রতি অনুগ্রহ করার পর তা বলে বেড়ায়। (আবূ দাঊদ হা: ৪০৮৭, তিরমিযী হা: ১৬১১, সহীহ) ২. আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তিন শ্রেণির মানুষের সাথে আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাতের দিন কথা বলবেন না, তাদের পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি: (১) যার নিকট প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি রয়েছে কিন্তু কোন মুসাফিরকে সে তা প্রদান করে না। (২) যে মিথ্যা শপথ করে স্বীয় মাল বিক্রি করে এবং (৩) যে মুসলিম বাদশার হাতে বায়আত গ্রহণ করে, অতঃপর যদি বাদশা তাকে সম্পদ প্রদান করে তাহলে বাইআতে বহাল থাকে, আর সম্পদ না দিলে বাইয়াত ভঙ্গ করে। (তিরমিযী হা: ১৫৯৫, সহীহ) আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. যারা দীনকে দুনিয়ার স্বল্পমূল্যে বিনিময় করে তাদের শাস্তির কথা জানলাম। ২. টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরিধান করার শাস্তি সম্পর্কে জানলাম। ৩. শরীয়তে বাইয়াত আছে, তবে তা করতে হবে ইসলামী সরকারের হাতে; কোন পীর-ফকিরের হাতে নয়। ৪. মিথ্যা কসম করে পণ্য বিক্রির শাস্তি সম্পর্কে জানলাম।