Al-Ahzaab • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ إِنَّ ٱلْمُسْلِمِينَ وَٱلْمُسْلِمَٰتِ وَٱلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَٰتِ وَٱلْقَٰنِتِينَ وَٱلْقَٰنِتَٰتِ وَٱلصَّٰدِقِينَ وَٱلصَّٰدِقَٰتِ وَٱلصَّٰبِرِينَ وَٱلصَّٰبِرَٰتِ وَٱلْخَٰشِعِينَ وَٱلْخَٰشِعَٰتِ وَٱلْمُتَصَدِّقِينَ وَٱلْمُتَصَدِّقَٰتِ وَٱلصَّٰٓئِمِينَ وَٱلصَّٰٓئِمَٰتِ وَٱلْحَٰفِظِينَ فُرُوجَهُمْ وَٱلْحَٰفِظَٰتِ وَٱلذَّٰكِرِينَ ٱللَّهَ كَثِيرًۭا وَٱلذَّٰكِرَٰتِ أَعَدَّ ٱللَّهُ لَهُم مَّغْفِرَةًۭ وَأَجْرًا عَظِيمًۭا ﴾
“VERILY, for all men and women who have surrendered themselves unto God, and all believing men and believing women, and all truly devout men and truly devout women, and all men and women who are true to their word, and all men and women who are patient in adversity, and all men and women who humble themselves [before God], and all men and women who give in charity, and all self-denying men and self-denying women, and all men and women who are mindful of their chastity, and all men and women who remember God unceasingly: for [all of] them has God readied forgiveness of sins and a mighty reward.”
৩৫ নং আয়াতের তাফসীর: শানে নযূল: উম্মে আম্মারাহ আল আনসারী (رضي الله عنها) হতে বর্ণিত, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলেন এবং বললেন: (কুরআনে) যা কিছু বলা হয় শুধুমাত্র পুরুষদের সম্পর্কেই বলা হয় মহিলাদের উদ্দেশ্যে কিছুই বলা হয় না বা আলোচনা করা হয় না। তখন এ আয়াতটি নাযিল হয়। (তিরমিযী হা: ৩২১১, সহীহ) উম্মুল মু’মিনীন উম্মে সালামাহ (رضي الله عنها) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন। কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা পুরুষদের কথা উলে¬খ করেছেন, আর আমাদের কথা আলোচনা করা হয়নি কেন? উম্মে সালামাহ (رضي الله عنها) বলেন: একদিন আমি আমার ঘরে বসে থাকা অবস্থায় মিম্বর হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শব্দ শুনতে পেলাম। ঐ সময় তিনি মিম্বরে এ আয়াতটি পাঠ করলেন অর্থাৎ এ ঘটনার প্রেক্ষাপটে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (নাসায়ী হা: ১১৪০৫) এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের ১১টি গুণাবলী উল্লেখ করেছেন। যারা এসব গুণে গুণান্বিত হবে তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা ও মহা প্রতিদান প্রস্তুত করে রেখেছেন। ইসলাম নারীদের সৎ আমল ও পুরুষের সৎ আমলের প্রতিদানের মাঝে কোন পার্থক্য করেনি। বরং উভয়ের প্রতিদান সমান করে দিয়েছেন। الْقَانِتِيْنَ শব্দের অর্থ হল শান্তভাবে আনুগত্য করা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (أَمَّنْ هُوَ قَانِتٌ اٰنَا۬ءَ اللَّيْلِ سَاجِدًا وَّقَآئِمًا يَّحْذَرُ الْاٰخِرَةَ وَيَرْجُوْا رَحْمَةَ رَبِّه۪ ط قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِيْنَ يَعْلَمُوْنَ وَالَّذِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ ط إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُوا الْأَلْبَابِ) “তারা কি ঐ ব্যক্তির সমান, যে ব্যক্তি রাতে সিজদারত অবস্থায় অথবা দাঁড়িয়ে ‘ইবাদত করে’ আখিরাতকে ভয় করে এবং তার প্রতিপালকের রহমত প্রত্যাশা করে? তুমি বল! যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি সমান হতে পারে? জ্ঞানবান লোকেরাই শুধু উপদেশ গ্রহণ করে।” (সূরা যুমার ৩৯:৯) “صادقين” অর্থাৎ কথা বলার সময় সত্য কথা বলা। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: তোমরা অবশ্যই সত্য কথা বলবে: কেননা সত্য কল্যাণের দিকে পথ প্রদর্শন করে। আর কল্যাণ জান্নাতের দিকে পথ প্রদর্শন করে। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬০৭) (وَالذّٰكِرِيْنَ اللّٰهَ كَثِيْرًا) অধিক পরিমাণে আল্লাহ তা‘আলার যিকির করার নির্দেশ এবং তার যৌক্তিকতা ও তাৎপর্য: কুরআনুল কারীমের একাধিক স্থানে আল্লাহ তা‘আলার যিকিরের কথা বলা হয়েছে। কখনো যিকিরের নির্দেশ, কখনো উৎসাহ, কখনো যিকিরকারীদেরকে আল্লাহ তা‘আলা ভালবাসেন, কখনো আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে স্মরণ করেন বিভিন্নভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তাই সর্বদা আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করা আল্লাহ তা‘আলা ভালবাসেন। সে জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন; সর্বোত্তম সম্পদ হলন কৃতজ্ঞ আত্মা, আল্লাহ তা‘আলার যিকির করে এমন জিহ্বা এবং এমন মু’মিন স্ত্রী যে ঈমানে সহযোগিতা করে। (মুসনাদ আহমাদ হা: ২২৩৯২) তাছাড়া যাবতীয় ইবাদতের মধ্যে যিকির অধিকতর সহজ। এটা আদায় করতে অন্যান্য ইবাদতের মত শরীয়ত তেমন কোন শর্তারোপ করেনি। অযুসহ বা বিনা অযুতে উঠতে-বসতে, চলতে-ফিরতে সব সময় আল্লাহ তা‘আলার যিকির করতে পারা যায়। তবে কিভাবে করতে হবে তা সূরা সামনে বর্ণনা করা হবে ইনশাআল্লাহ। সুতরাং প্রত্যেক মু’মিনের এসব গুণে গুণান্বিত হওয়া উচিত। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. ইবাদতের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সকলেই সমান, কারো মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।