Al-Ahzaab • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍۢ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥٓ أَمْرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ ٱلْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ ۗ وَمَن يَعْصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَٰلًۭا مُّبِينًۭا ﴾
“Now whenever God and His Apostle have decided a matter, it is not for a believing man or a believing woman to claim freedom of choice insofar as they themselves are concerned: for he who [thus] rebels against God and His Apostle has already, most obviously, gone astray.”
৩৬ নং আয়াতের তাফসীর: শানে নুযূল: ইবনে জারীর আত-তাবারী সহীহ সনদে কাতাদাহ থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যয়নব বিনতে জাহশ -কে যায়েদ বিন হারেসা (রাঃ)-এর জন্য বিবাহের প্রস্তাব দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন: আমি মনে করলাম যে, তিনি তাকে তাঁর নিজের বিবাহের জন্য প্রস্তাব দিলেন। কিন্তু যয়নব যখন জানতে পারলেন যে, যায়েদের জন্য এ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তখন যয়নব (রাঃ) এ প্রস্তাব অস্বীকার করলেন। তখন এ আয়াতটি নাযিল হয়। (কুরতুবী, লুবানুন নুকুল ফী আসবাবে নুযুল:পৃঃ ২২২) এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মু’মিন পুরুষ ও নারীদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বলছেন, তারা কখনো আল্লাহ তা‘আলা এবং তাঁর রাসূলের ফয়সালার অবাধ্য হয় না এবং এটা তাদের উচিতও না। আল্লাহ তা‘আলা এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিধান পাওয়া মাত্রই সাথে সাথে তা আমলে পরিণত করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُوْنَ حَتّٰي يُحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوْا فِيْٓ أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا) “কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা মু’মিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবদমান বিষয়াদির বিচারভার তোমার ওপর অর্পণ না করে; অতঃপর তোমার সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে তাদের মনে কোন দ্বিধা থাকে এবং সম্পূর্ণরূপে তা মেনে না নেয়।” (সূরা নিসা ৪:৬৫) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন: (فَلْيَحْذَرِ الَّذِيْنَ يُخَالِفُوْنَ عَنْ أَمْرِه۪ٓ أَنْ تُصِيْبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيْبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ) “সুতরাং যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদের ওপর পতিত হবে অথবা পতিত হবে তাদের ওপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” (সূরা নূর ২৪:৬৩) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ঐ সত্ত্বার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি যা নিয়ে এসেছি তার প্রবৃত্তি সে অনুগামী হয়।” (সরহুস সুন্নাহ, মিশকাত হা: ১৬৭) সুতরাং দল, তরীকা ও মাযহাবের দোহাই দিয়ে কোন অবস্থাতেই আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের ফয়সালার অবাধ্য হওয়া যাবে না। বরং প্রত্যেক মু’মিন আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের ফয়সালা মাথা পেতে মেনে নিবে এবং সাথে সাথে তা পালন করবে। কারণ যারা আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ অমান্য করবে তারা প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলা এবং তাঁর রাসূলের বিধান ও ফয়সালা মোতাবেক জীবন পরিচালনা করতে হবে। ২. আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের সিদ্ধান্তের ওপর কোন কথা বলা যাবে না। ৩. আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশের অবাধ্য হওয়া সুস্পষ্ট কুফরী।