An-Nisaa • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ ۞ إِنَّ ٱللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَن تُؤَدُّوا۟ ٱلْأَمَٰنَٰتِ إِلَىٰٓ أَهْلِهَا وَإِذَا حَكَمْتُم بَيْنَ ٱلنَّاسِ أَن تَحْكُمُوا۟ بِٱلْعَدْلِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ نِعِمَّا يَعِظُكُم بِهِۦٓ ۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ سَمِيعًۢا بَصِيرًۭا ﴾
“BEHOLD, God bids you to deliver all that you have been entrusted with unto those who are entitled thereto, and whenever you judge between people, to judge with justice. Verily, most excellent is what God exhorts you to do: verily, God is all-hearing, all-seeing!”
৫৮ নং আয়াতের তাফসীর: অধিকাংশ মুফাসসিরে কিরামের মতে, এ আয়াত উসমান বিন তালহা (রাঃ)-এর ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। তিনি বংশগতভাবেই কাবা শরীফের তত্ত্বাবধায়ক এবং তার চাবির রক্ষক ছিলেন। তিনি হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় ইসলাম গ্রহণ করেন। মক্কা বিজয়ের পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাবাতে উপস্থিত হয়ে তাওয়াফসহ অন্যান্য কাজ শেষ করে উসমান বিন তালহাকে ডেকে পাঠালেন। তারপর তাঁর হাতে কাবার চাবি হস্তান্তর করে দিয়ে বলেন, এগুলো তোমার চাবি। আজকের দিন অঙ্গীকার পূরণের দিন। (ইবনে কাসীর, ২/৩৭৯) এ আয়াত বিশেষ কারণে অবতীর্ণ হলেও তা সকল প্রকার আমানতকে শামিল করে। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: أَدِّ الْأَمَانَةَ إِلٰي مَنِ ائْتَمَنَكَ، وَلَا تَخُنْ مَنْ خَانَكَ যে তোমার কাছে আমানত রেখেছে তার কাছে আমানত ফিরিয়ে দাও। আর যে খিয়ানত করেছে তার সাথে খিয়ানত কর না। (আবূ দাঊদ হা: ৩৫৩৪, তিরমিযী হা: ১২৬৪, সহীহ) তারপর আল্লাহ তা‘আলা সকল শ্রেণির মানুষকে সম্বোধন করে ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচারকার্য সম্পন্ন করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: إِنَّ اللّٰهَ مَعَ الْقَاضِي مَا لَمْ يَجُرْ فَإِذَا جَارَ وَكَّلَهُ إِلَي نَفْسِهِ বিচারক যতক্ষণ পর্যন্ত জুলুম করে না ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা তার সাথে থাকেন। অতঃপর সে যখন জুলুম শুরু করে দেয়, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাকে তার নিজের ওপর ছেড়ে দেন। (ইবনু মাযাহ হা: ২৩২১, হাসান) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন: কিয়ামতের দিন ন্যায়-বিচারকারীরা দয়াময় আল্লাহ তা‘আলার ডান পাশে নূরের মিন্বারের ওপর থাকবে। আল্লাহ তা‘আলার উভয় হাত ডান হাত, যারা বিচারে, পরিবারে এবং যাদের দায়িত্ব গ্রহণ করে তাদের মাঝে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে (তারা সবাই এতে শামিল)। (সহীহ মুসলিম হা: ১৮২৭) তাই আমানত ফিরিয়ে দেয়া, ন্যায়পরায়ণতা ও সুবিচার বজায় রাখা প্রতিটি মু’মিন মুসলিমের নৈতিক দায়িত্ব। আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. আমানত রক্ষা করা ঈমানদারের বৈশিষ্ট্য। ২. বিচার-ফায়সালায় ন্যায় পন্থা অবলম্বন করা ওয়াজিব। ৩. আল্লাহ তা‘আলার হাত রয়েছে, এমনকি তার উভয় হাত ডান হাত।