Al-Hujuraat • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَٰكُم مِّن ذَكَرٍۢ وَأُنثَىٰ وَجَعَلْنَٰكُمْ شُعُوبًۭا وَقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوٓا۟ ۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ ٱللَّهِ أَتْقَىٰكُمْ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌۭ ﴾
“O men! Behold, We have created you all out of a male and a female, and have made you into nations and tribes, so that you might come to know one another. Verily, the noblest of you in the sight of God is the one who is most deeply conscious of Him. Behold, God is all-knowing, all-aware.”
১৩ নম্বর আয়াতের তাফসীর : এতক্ষণ সামাজিক বিধি-বিধান আলোচনা করার পর আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে সৃষ্টির সূচনার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, তোমরা একজন মাত্র নর-নারী তথা আদম ও হাওয়া (আঃ) থেকে সৃষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা মানুকে চারটি পদ্ধতিতে সৃষ্টি করেছেন। (১) কোন নারী-পুরুষ ছাড়াই সৃষ্টি করেছেন, যেমন আদম (আঃ)। (২) পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছেন নারী ছাড়া, যেমন হাওয়া (আঃ), (৩) নারী থেকে সৃষ্টি করেছেন কোন পুরুষ ছাড়াই, যেমন ঈসা (আঃ), (৪) নারী-পুরুষের মাধ্যমে সৃষ্টি করেছেন যেমন সকল মানুষ। আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করার পর বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছেন যাতে একে অপরকে চিনতে পারে। যেমন সে অমুকের ছেলে, সে অমুক গোত্রের লোক ইত্যাদি। এ জন্য বিভিন্ন গোত্র ও জাতিতে বিভক্ত করেন যে, অমুক গোত্র অমুক গোত্র থেকে, অমুক জাতি অমুক জাতি থেকে শ্রেষ্ঠ। আর শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি একটিই, তা হলো তাকওয়া। সে কৃষ্ণাঙ্গ হোক বা শ্বেতাঙ্গ হোক, আরবি হোক আর অনারবি হোক, প্রাচুর্যশালী হোক আর নিঃস্ব হোক। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো : কোন্ ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি সম্মানিত? জবাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বেশি আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করেছে সে বেশি সম্মানিত.....। (সহীহ বুখারী হা. ৩৩৮৩) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : إِنَّ اللّٰهَ لَا يَنْظُرُ إِلَي صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ، وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَي قُلُوبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের আকৃতি ও সম্পদের দিকে লক্ষ্য করেন না। বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমল দেখবেন। (সহীহ মুসলিম হা. ২৫৬৩) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায় হাজ্জে বলেছেন : তাকওয়া ব্যতীত অন্য কোন কিছুর কারণে আরবের ওপর কোন অনারবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া- অধ্যায় : বিদায় হাজ্জ) আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় : ১. মানব জাতির উৎস আদম ও হাওয়া (আঃ)। ২. মানব জাতিকে বিভিন্ন গোত্রে ও জাতিতে বিভক্ত করা হয়েছে পরস্পরে পরিচয় লাভের জন্য । ৩. শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি একমাত্র তাকওয়া। গোত্র, জাতি বা দেশ নয়।