Al-Maaida • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيهَآ أَنَّ ٱلنَّفْسَ بِٱلنَّفْسِ وَٱلْعَيْنَ بِٱلْعَيْنِ وَٱلْأَنفَ بِٱلْأَنفِ وَٱلْأُذُنَ بِٱلْأُذُنِ وَٱلسِّنَّ بِٱلسِّنِّ وَٱلْجُرُوحَ قِصَاصٌۭ ۚ فَمَن تَصَدَّقَ بِهِۦ فَهُوَ كَفَّارَةٌۭ لَّهُۥ ۚ وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ ﴾
“And We ordained for them in that [Torah]: A life for a life, and an eye for an eye, and a nose for a nose, and an ear for an ear, and a tooth for a tooth, and a [similar] retribution for wounds; but he who shall forgo it out of charity will atone thereby for some of his past sins. And they who do not judge in accordance with what God has revealed - they, they are the evildoers!,”
৪৫ নং আয়াতের তাফসীর: তাওরাতে আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের ওপর ফরয করে দিয়েছিলেন যে, কোন ব্যক্তি কাউকে হত্যা করলে কিসাসস্বরূপ তাকেও হত্যা করা হবে, কেউ কারো চোখ, নাক, কান বা দাঁত ক্ষতি করলে কিসাসস্বরূপ তারও অনুরূপ ক্ষতি করা হবে। এ বিধান আমাদের জন্যও প্রযোজ্য। কেননা পূর্ববতীদের শরীয়ত আমাদের জন্যও শরীয়ত যদি আমাদের শরীয়ত তা রহিত না করে। হাসান বাসরী (রহঃ) বলেন: এ বিধান তাদের জন্য এবং সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য। (وَالْجُرُوْحَ قِصَاصٌ) ‘জখমের বদলে অনুরূপ জখম’এতে সকল মুসলিম সমান। নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই সমান যখন তা স্বেচ্ছায় করা হবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: الْمُسْلِمُونَ تَتَكَافَأُ دِمَاؤُهُمْ মুসলিমরা রক্তের অধিকারে সবাই সমান। (আবূ দাঊদ হা: ২৭৫১, ইবনু মাযাহ হা: ২৬৮৫, সহীহ) (فَمَنْ تَصَدَّقَ بِه۪ فَهُوَ كَفَّارَةٌ لَّه۫) ‘তবে কেউ তা ক্ষমা করে দিলে তা তার (ক্ষমাকারীর) জন্য পাপের কাফফারা হবে।’অর্থাৎ ক্ষমাকারীর জীবনের অতীতের গুনাহ আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দিবেন। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তাঁর ফুফু রুবাঈ এক দাসীর একটি দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছিল। ফলে দাসীর মালিকের কাছে ক্ষমা চাওয়া হল কিন্তু ক্ষমা করল না। তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আগমন করল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কিসাস আদায় কর। রুবাঈ এর ভাই আনাস বিন নযর বলল: ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! অমুকের দাঁত ভাঙ্গা হবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ: আল্লাহ তা‘আলার কিতাবে যেহেতু কিসাস আছে। তিনি বললেন: যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন তাঁর শপথ, কখনো তার দাঁত ভাঙ্গা হবে না। বর্ণনাকারী আনাস (রাঃ) বলেছেন: পরে দাসীর মালিক/সম্প্রদায় বিষয়টি ক্ষমা করে দিলো এবং কিসাস ছেড়ে দিলো। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللّٰهِ مَنْ لَوْ إِقْتَسَمَ عَلَي اللّٰهِ لَأَبَرَّهُ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলার কতক বান্দা এমন রয়েছে যদি আল্লাহ তা‘আলার নামে তারা শপথ করে আল্লাহ তা‘আলা তা পূর্ণ করেন। (সহীহ বুখারী হা: ২৭০৩, সহীহ মুসলিম হা: ১৯০৩) সুতরাং কিসাস আদায় করলে একদিক দিয়ে যেমন ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে অন্য দিকে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. হত্যা, যখম ও আঘাতের কিসাস আদায় করা ওয়াজিব। ২. কিসাস আদায় করতে গিয়ে জুলুম করা হারাম। ৩. কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হবার পর ক্ষমা করে দিলে এতে তার গুনাহ মাফ হবে।