Al-Hadid • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِٱلْبَيِّنَٰتِ وَأَنزَلْنَا مَعَهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْمِيزَانَ لِيَقُومَ ٱلنَّاسُ بِٱلْقِسْطِ ۖ وَأَنزَلْنَا ٱلْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌۭ شَدِيدٌۭ وَمَنَٰفِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ ٱللَّهُ مَن يَنصُرُهُۥ وَرُسُلَهُۥ بِٱلْغَيْبِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ قَوِىٌّ عَزِيزٌۭ ﴾
“Indeed, [even aforetime] did We send forth Our apostles with all evidence of [this] truth; and through them We bestowed revelation from on high, and [thus gave you] a balance [wherewith to weigh right and wrong], so that men might behave with equity; and We bestowed [upon you] from on high [the ability to make use of] iron, in which there is awesome power as well as [a source of] benefits for man: and [all this was given to you] so that God might mark out those who would stand up for him and His Apostle, even though He [Himself] is beyond the reach of human perception. Verily, God is powerful, almighty!”
২৫ নম্বর আয়াতের তাফসীর : بِالْبَيِّنٰتِ (প্রমাণসমূহ) অর্থাৎ মুজিযাহ, দলীল-প্রমাণাদি ও ঐসব আলামত যা রাসূলের সত্যতার প্রমাণ বহন করে তা দিয়ে রাসূল প্রেরণ করছি। وَالْمِيْزَانَ (তুলাদণ্ড) বলতে ন্যায়নীতি বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা লোকদের মাঝে সুবিচার করার নির্দেশ দিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, এর অর্থ হল দাড়িপাল্লা। দাঁড়িপাল্লা অবতীর্ণ করার অর্থ হল মানুষের মাঝে সঠিক ওজন প্রতিষ্ঠা করা। (وَأَنْزَلْنَا الْحَدِيْدَ) হাসান বাসরী (রহঃ) বলেন : এখানে انزال অর্থ সৃষ্টি করা, তৈরি করা। যেমন সূরা আন‘আমের ১৪৩ নম্বর আয়াতে انزال দ্বারা সৃষ্টি করার অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। ভাষাবিদগণ বলেন : খনিজ থেকে লোহা বের করেছেন, অতঃপর ওয়াহীর মাধ্যমে তা তৈরির জ্ঞান দান করেছেন। (ইবনু কাসীর) হাদীদ শব্দটি কুরআনে ৬ জায়গায় ব্যবহার হয়েছে। সূরা ইসরার ৫০ নম্বর, সূরা কাহফের ৯৬ নম্বর, সূরা হাজ্জের ২১ নম্বর, সূরা সাবার ১০ নম্বর, সূরা ক্বাফের ২২ নম্বর এবং সূরা হাদীদের অত্র আয়াত। প্রত্যেকটিতেই লোহার উপরকরণ অর্থে ব্যবহার হয়েছে। তবে সূরা ক্বাফের আয়াতে প্রত্যক্ষ করা অর্থে ব্যবহার হয়েছে। অত্র আয়াতের তাফসীরে ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন : যাদের কাছে প্রমাণ পৌঁছার পরেও সত্য গ্রহণে অবাধ্য হবে এবং সত্যের বিরোধিতা করবে তাদের প্রতিরোধক হিসাবে লোহা দিয়েছেন। এজন্য নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নবুওয়াত পাওয়ার পর তের বছর মক্কায় অবস্থান করে তাওহীদের দাওয়াত দিয়ে সত্যের প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তারপর হিজরত করার অনুমতি দিয়েছেন এবং কেউ ইসলামের বিরোধিতা করলে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণের বিধান দিয়েছেন। (وَّمَنَافِعُ لِلنَّاسِ) অর্থাৎ মানুষের জীবন-যাপনে এর অনেক উপকারিতা রয়েছে, যেমন লোহা দ্বারা কৃষি কাজের উপকরণ তৈরি করা, দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত দা, চাকু ইত্যাদি তৈরি করা। যুদ্ধ-জিহাদের অস্ত্র তৈরি হয় এ লোহা দ্বারাই। (ইবনু কাসীর) আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় : ১. আল্লাহ লোহা অবতীর্ণ করেছেন মানুষের নানাবিধ উপকারের জন্য।