Al-An'aam • BN-TAFISR-FATHUL-MAJID
﴿ هَلْ يَنظُرُونَ إِلَّآ أَن تَأْتِيَهُمُ ٱلْمَلَٰٓئِكَةُ أَوْ يَأْتِىَ رَبُّكَ أَوْ يَأْتِىَ بَعْضُ ءَايَٰتِ رَبِّكَ ۗ يَوْمَ يَأْتِى بَعْضُ ءَايَٰتِ رَبِّكَ لَا يَنفَعُ نَفْسًا إِيمَٰنُهَا لَمْ تَكُنْ ءَامَنَتْ مِن قَبْلُ أَوْ كَسَبَتْ فِىٓ إِيمَٰنِهَا خَيْرًۭا ۗ قُلِ ٱنتَظِرُوٓا۟ إِنَّا مُنتَظِرُونَ ﴾
“Do they, perchance, wait for the angels to appear unto them, or for thy Sustainer [Himself] to appear, or for some of thy Sustainer's [final] portents to appear? [But] on the Day when thy Sustainer's [final] portents do appear, believing will be of no avail to any human being who did not believe before, or who, while believing, did no good works. Say: "Wait, [then, for the Last Day, O unbelievers:] behold, we [believers] are waiting, too!"”
১৫৮ নং আয়াতের তাফসীর: এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদেরকে ধমক দিয়ে বলছেন, তারা কি নিদর্শনের অপেক্ষায় রয়েছে? জেনে রেখ! যেদিন নিদর্শন চলে আসবে সেদিন ঈমান আনলে কারো ঈমান কোন কাজে আসবে না যদি পূর্ব থেকে ঈমান না থাকে। কেননা তাওবাহ কবূল বা ঈমানের জন্য অন্যতম শর্ত হল: গরগরা আসার বা সূর্য পশ্চিম দিকে উদিত হবার পূর্বে তাওবাহ বা ঈমান আনতে হবে। সহীহ হাদীস প্রমাণ করে যে, আয়াতে উল্লেখিত “তোমার প্রতিপালকের কোন নিদর্শন” দ্বারা উদ্দেশ্য হল পশ্চিামাকাশে সূর্য উদয়, এটাই অধিকাংশ মুফাসসিরদের উক্তি। (তাফসীর তাবারী ৮/৯৬-১০২, ইবনু কাসীর ৩/৩৩৬-৩৭১ ও কুরতুবী) ইমাম ত্বাবারী (রহঃ) উক্ত আয়াতের ব্যাপারে মুফাসসিরদের উক্তি উল্লেখ করার পর বলেন: এ মতগুলোর মধ্যে সর্বাধিক সঠিক মত হচ্ছে যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত হাদীস সমর্থিত, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: এ ব্যাপারটি তখনই হবে যখন পশ্চিমাকাশে সূর্য উদয় হবে। (তাফসীর তাবারী ৮/১০৩) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: পশ্চিমাকাশে সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না। যখন সূর্য পশ্চিমাকাশে উদয় হবে তখন মানুষ তা দেখতে পাবে এবং সকলেই ঈমান আনবে। কিন্তু তখন কারো ঈমান উপকারে আসবে না, যদি পূর্ব থেকে ঈমান না এনে থাকে অথবা ঈমান আনার পর কোন সৎ আমল না করে থাকে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৬৩৫, ৬৫০৬) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন: أَنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ جَعَلَ بِالْمَغْرِبِ بَابًا مَسِيرَةُ عَرْضِهِ سَبْعُونَ عَامًا لِلتَّوْبَةِ لَا يُغْلَقُ مَا لَمْ تَطْلُعْ الشَّمْسُ مِنْ قِبَلِهِ وَذَلِكَ قَوْلُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ { يَوْمَ يَأْتِي بَعْضُ آيَاتِ رَبِّكَ لَا يَنْفَعُ نَفْسًا إِيمَانُهَا } আল্লাহ তা‘আলা তাওবার জন্য পশ্চিমে একটি দরজা খুলে রেখেছেন যার প্রস্থ সত্তর বছরের সমান। সেদিক থেকে (অর্থাৎ পশ্চিম) সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত তা বন্ধ করা হবে না। এদিকেই আল্লাহ তা‘আলা ইঙ্গিত করে বলেন: “যেদিন তোমার প্রতিপালকের কোন নিদর্শন আসবে সেদিন তার ঈমান কাজে আসবে না।”(তিরমিযী, হা: ৩৫৩৫, সহীহ। ইবনে কাসীর ৩/৩৬৯.) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি সূর্য পশ্চিম আকাশে উদয়ের পূর্বে তাওবাহ করবে তার তাওবাহ কবূল করা হবে। (মুসনাদ আহমাদ হা: ৭৬৯৭) তাই সময় ফুরিয়ে যাবার পূর্বে সময়ের মূল্যায়ন করা উচিত। আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন ফায়সালা করার জন্য আসবেন, এখানে আল্লাহ তা‘আলার আগমন সিফাত বা গুণ প্রমাণিত হল, তবে আল্লাহ তা‘আলার আগমন কিরূপ তা তিনিই ভাল জানেন, আমরা জানিনা। ২. কিয়ামতের অন্যতম একটি বড় আলামত পশ্চিমাকাশে সূর্যোদয় হওয়া, এ আলামত প্রকাশ হবার পর ঈমান আনলে কোন কাজে আসবে না। ৩. আল্লাহ তা‘আলা উপরে আছেন, যদি সর্বত্র থাকতেন তাহলে আসার কথা উল্লেখ করা হত না।