Yunus • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ قُل لَّوْ شَآءَ ٱللَّهُ مَا تَلَوْتُهُۥ عَلَيْكُمْ وَلَآ أَدْرَىٰكُم بِهِۦ ۖ فَقَدْ لَبِثْتُ فِيكُمْ عُمُرًۭا مِّن قَبْلِهِۦٓ ۚ أَفَلَا تَعْقِلُونَ ﴾
“Say: "Had God willed it [otherwise], I would not have conveyed this [divine writ] unto you, nor would He have brought it to your knowledge. Indeed. a whole lifetime have I dwelt among you ere this [revelation came unto me]: will you not, then, use your reason?””
১৫-১৬ নং আয়াতের তাফসীর: মুশরিক কুরায়েশদের মধ্যে যারা উদ্ধত কাফির ছিল এবং যারা সব কথাই অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যান করতো, আল্লাহ তা'আলা তাদেরই সংবাদ দিচ্ছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন তাদেরকে আল্লাহর কিতাব শুনিয়ে দেন এবং তাদের সামনে সুস্পষ্ট দলীল পেশ করেন তখন তারা বলে- এই কুরআন ছাড়া অন্য কোন কুরআন নিয়ে এসো, যা অন্য ধারায় লিখিত। এখন আল্লাহ তা'আলা স্বীয় নবী (সঃ)-কে ইরশাদ করছেন- তুমি তাদেরকে বলে দাও, আচ্ছা বলতো আমার কি অধিকার আছে যে, আমি নিজের পক্ষ থেকে কুরআনকে পরিবর্তন করতে পারি? আমি তো শুধু আল্লাহর একজন আদিষ্ট বান্দা এবং তার বার্তাবাহক। এসব যা কিছু আমি তোমাদের সামনে পেশ করছি, সব কিছুই আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা অনুযায়ী হচ্ছে। আমার উপর যা কিছু অহী করা হচ্ছে, আমি শুধু ওগুলোই বলছি। আমি যদি আল্লাহর অবাধ্য হয়ে যাই তবে আমি কিয়ামতের কঠিন শাস্তির ভয় করি। এগুলো যে আমার নিজের রচিত নয়, তার স্পষ্ট প্রমাণ এই যে, আমি যদি এটা (এই কুরআন) রচনা করতে পারতাম তবে তোমরাও পারতে। কিন্তু তোমরা তো রচনা করতে সক্ষম নও। তাহলে আমি কিরূপে সক্ষম হতে পারি? সুতরাং এটা সুস্পষ্ট কথা যে, এটা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কালাম হতে পারে না। তাছাড়া তোমরা আমার সত্যবাদিতা ও বিশ্বস্ততার কথা তখন থেকে অবগত আছ যখন থেকে আমি তোমাদেরই কওমের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছি। আর যখন থেকে আমি তোমাদের কাছে রাসূলরূপে প্রেরিত হয়েছি তখন থেকেও তোমরা আমার সত্যবাদিতা ও ঈমানদারীর উপর কোন কটাক্ষ করতে পার না। এ জন্যেই আল্লাহ পাক বলেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি তাদেরকে বলে দাও আমি এক দীর্ঘজীবন তোমাদের সাথে অতিবাহিত করেছি। তোমাদের কি এতটুকুও জ্ঞান নেই যে, তোমরা সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করতে পার? এজন্যেই যখন রোমক সম্রাট হিরাক্লিয়াস আবু সুফিয়ান (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদেরকে নতুন নবী (সঃ)-এর অবস্থা জিজ্ঞেস করতে গিয়ে প্রশ্ন করেনঃ “তোমাদের কাছে তিনি কখনো মিথ্যা কথা বলেছেন এরূপ কোন প্রমাণ আছে কি?" আবু সুফিয়ান উত্তরে বলেনঃ “না।” আবু সুফিয়ান (রাঃ) তো ঐ সময় কাফিরদের সরদার ও মুশরিকদের নেতা ছিলেন । তথাপি তাঁকে এই নবী (সঃ)-এর সত্যবাদিতার কথা স্বীকার করতেই হয়। সে সময় হিরাক্লিয়াস মন্তব্য করেছিলেনঃ “মানুষের ব্যাপারে যিনি কখনও মিথ্যা কথা বলেননি, আল্লাহর ব্যাপারে কিরূপে তিনি মিথ্যা কথা বলতে পারেন।জা'ফর ইবনে আবি তালিব (রাঃ) হাবশার বাদশাহ নাজ্জাশীর সামনে বলেছিলেনঃ “আল্লাহ তা'আলা আমাদের নিকট এমন একজন রাসূল (সঃ) পাঠিয়েছেন যার স্বভাবগত সত্যবাদিতা, বংশগত মর্যাদা এবং আমানতদারী। সম্পর্কে আমরা পূর্ণ ওয়াকিফহাল। নবুওয়াতের পূর্বে সুদীর্ঘ চল্লিশ বছর তিনি আমাদের সাথে অবস্থান করেছেন।” সাঈদ ইবনুল মুসাইয়াব (রাঃ) তেতাল্লিশ বছর পর্যন্ত বলেছেন। তবে প্রথম উক্তিটিই সঠিকতর।