Yunus • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ أَكَانَ لِلنَّاسِ عَجَبًا أَنْ أَوْحَيْنَآ إِلَىٰ رَجُلٍۢ مِّنْهُمْ أَنْ أَنذِرِ ٱلنَّاسَ وَبَشِّرِ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ أَنَّ لَهُمْ قَدَمَ صِدْقٍ عِندَ رَبِّهِمْ ۗ قَالَ ٱلْكَٰفِرُونَ إِنَّ هَٰذَا لَسَٰحِرٌۭ مُّبِينٌ ﴾
“Do people deem it strange that We should have inspired a man from their own midst [with this Our message]: "Warn all mankind, and give unto those who have attained to faith the glad tiding that in their Sustainer's sight they surpass all others in that they are completely sincere-? [Only] they who deny the truth say, "Behold. he is clearly but a spellbinder!"”
১-২ নং আয়াতের তাফসীর: যেগুলো সূরাসমূহের শুরুতে এসে থাকে সেগুলোর উপর আলোচনা ইতিপূর্বে হয়ে গেছে এবং সূরায়ে বাকারায় এর পুরোপুরি ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। আবু যুহা (রঃ) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, (আরবী) আল্লাহ তা'আলার এই উক্তির ভাবার্থ হচ্ছে (আরবী)অর্থাৎ আমি আল্লাহ, আমি সব কিছু দেখতে রয়েছি। যহ্হাক (রঃ) প্রমুখ গুরুজনও এ কথাই বলেছেন।এটা হচ্ছে অতি সূক্ষ্ম তত্ত্বপূর্ণ কিতাবের আয়াতসমূহ। মুজাহিদ (রঃ)-এরও এটাই উক্তি। হাসান (রঃ) বলেন যে, কিতাব দ্বারা তাওরাত ও যনূরকে বুঝানো হয়েছে। কাতাদা (রঃ)-এর ধারণা এই যে, কিতাব দ্বারা কুরআনের পূর্ববর্তী সমস্ত আসমানী কিতাবকে বুঝানো হয়েছে। কিন্তু তাঁর এ ধারণা ভিত্তিহীন। আল্লাহ তাআলার উক্তিঃ (আরবী) অর্থাৎ কাফিরদের বিস্ময়ের প্রতি লক্ষ্য করে আল্লাহ পাক বলেন, মানুষের মধ্য হতেই যদি রাসূল নির্বাচিত হয়। তাতে বিস্ময়ের কি আছে? যেমন মহান আল্লাহ অতীত যুগের কাফিরদের উক্তি নকল করে বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “কোন মানুষ কি আমাদেরকে হিদায়াত করবে?” (৬৪:৬) এখানে কাফিররা হুদ (আঃ) ও সালিহ (আঃ)-কে উদ্দেশ্য করে ঐ কথা বলেছিল । হুদ (আঃ) ও সালিহ (আঃ) তাদের কওমকে সম্বোধন করে বলেছিলেনঃ “তোমাদের মধ্যকার এক ব্যক্তির উপর তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে অহী অবতীর্ণ করা হয়েছে এতে কি তোমরা বিস্মিত হয়েছো?”কুরায়েশ কাফিরদের সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “(কাফিররা বলে) সে (মুহাম্মাদ সঃ) কি এতগুলো উপাস্যের স্থলে মাত্র একজন উপাস্য করে দিলো? বাস্তবিকই এটা তো বড় বিস্ময়কর ব্যাপার বটে!”যহহাক (রঃ) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ তা'আলা যখন মুহাম্মাদ (সঃ)-কে রাসূল করে পাঠালেন তখন আরবরা তাঁকে অস্বীকার করে বসলো এবং বলতে লাগলো- আল্লাহ তো এর চেয়ে অনেক বড় যে তিনি মুহাম্মাদের ন্যায় মানুষকে রাসূল করে পাঠাবেন। তখন আল্লাহ তা'আলা বললেন যে, এতে বিস্ময়ের কিছুই নেই।(আরবী) এই উক্তির ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রথম বর্ণনাতেই সত্যতা স্বীকার করে নেয়া এবং সৌভাগ্য লাভ করা। আর নিজের আমলের উত্তম প্রতিদান লাভ করা। এটা সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ তা'আলার (আরবী) (১৮:২) এই উক্তির সঙ্গে সাদৃশ্যযুক্ত অর্থাৎ “যেন তিনি তাদেরকে যুদ্ধ ও কঠিন শাস্তি হতে ভয় প্রদর্শন করেন।” (আরবী) (আরবী) -এর ব্যাপারে মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, এর দ্বারা উত্তম আমল বুঝানো হয়েছে। যেমন সালাত, সিয়াম, সাদকা, তাসবীহ এবং রাসূল (সঃ)-এর শাফাআত। যায়েদ ইবনে আসলাম (রঃ) এবং মুকাতিল ইবনে হাইয়ান (রঃ) এরূপই বলেছেন। কাতাদা (রঃ) বলেন যে, এর দ্বারা (আরবী) উদ্দেশ্য। ইবনে জারীর (রঃ) মুজাহিদ (রঃ)-এর অভিমত সমর্থন করে এর দ্বারা (আরবী) ‘উত্তম আমল’ ভাবার্থ নিয়েছেন। যেমন (আরবী) এ কথা বলা হয়। যেমন হাসসান (রাঃ)-এর কবিতায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমাদের আমল এবং আমাদের রীতিনীতি আপনার সাথে সত্য ও সঠিকভাবে রয়েছে, আর আল্লাহর আনুগত্যের ব্যাপারে আমাদের পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের অনুসারী। আল্লাহপাকের উক্তিঃ (আরবী) অর্থাৎ যদিও আমি তাদেরই মধ্য হতে একজন লোককে সুসংবাদদাতা ও ভয়প্রদর্শনকারী রূপে প্রেরণ করেছি তবুও ঐ কাফিররা বলে-এই ব্যক্তি তো অবশ্যই একজন প্রকাশ্য যাদুকর। এই ব্যাপারে তারা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যাবাদী।