Yunus • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ ۞ لِّلَّذِينَ أَحْسَنُوا۟ ٱلْحُسْنَىٰ وَزِيَادَةٌۭ ۖ وَلَا يَرْهَقُ وُجُوهَهُمْ قَتَرٌۭ وَلَا ذِلَّةٌ ۚ أُو۟لَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلْجَنَّةِ ۖ هُمْ فِيهَا خَٰلِدُونَ ﴾
“For those who persevere in doing good there is the ultimate good in store, and more [than that]. No darkness and no ignominy will overshadow their faces [on Resurrection Day]: it is they who are destined for paradise, therein to abide.”
আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন যে, যে ব্যক্তি ভাল কাজ করলো সে পরকালে উত্তম প্রতিদান পাবে। কেননা, পুণ্যের বিনিময়ে পুণ্য পাওয়া যায়। বরং আরো কিছু বেশী পাওয়া যাবে। অর্থাৎ কমপক্ষে দশগুণ এমন কি সাতশ' গুণ পর্যন্ত প্রাপ্ত হবে, বরং এর চেয়েও কিছু বেশী, যেগুলো আল্লাহ তা'আলার অন্যান্য দানের অন্তর্ভুক্ত। যেমন জান্নাতে সে পাবে হুর ও প্রাসাদ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর এমন মনোমুগ্ধকর জিনিস যা এই পর্যন্ত তার কাছে অজানা রয়েছে। কিন্তু সর্বোপরি নিয়ামত হচ্ছে মহান আল্লাহর দর্শন লাভ। এটা হবে সমস্ত করুণার মধ্যে বড় করুণা। কেননা, সে তার আমলের কারণে এর যোগ্য হবে না, বরং এটা হবে একমাত্র আল্লাহ পাকের সীমাহীন দয়ার কারণে। পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বিভিন্ন মনীষী হতে (আরবী) শব্দের যে তাফসীর বর্ণিত হয়েছে, তা হচ্ছে আল্লাহ পাকের পবিত্র চেহারার প্রতি দৃষ্টিপাত। ঐ মনীষীগণ হচ্ছেন আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ), হুযাইফা ইবনে ইয়ামান (রাঃ), আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ), সাঈদ ইবনে মুসাইয়াব (রাঃ), আবদুর রহমান ইবনে আবি লাইলা (রাঃ), আবদুর রহমান ইবনে সাবিত (রাঃ), মুজাহিদ (রঃ), ইকরামা (রঃ), আমির ইবনে সাদ (রঃ), আতা (রঃ), যহ্হাক (রঃ), হাসান (রঃ), কাতাদা (রঃ), সুদ্দী (রঃ), মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (রঃ) প্রমুখ। এই মতের সমর্থনে নবী (সঃ) হতে বহু হাদীসও বর্ণিত আছে। সুহাইব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) (আরবী)-এই আয়াতটি পাঠ করে বলেন, যখন জান্নাতবাসী জান্নাতে এবং জাহান্নামবাসী জাহান্নামে প্রবেশ করবে, তখন একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবেনঃ “হে জান্নাতবাসীরা! আল্লাহ তাআলা তোমাদের সাথে যে ওয়াদা করেছিলেন তা তিনি পূরণ করতে চান।” তখন জান্নাতবাসীরা বলবেঃ “সেই ওয়াদা কি? দাঁড়িপাল্লায় আমাদের (পুণ্যের) ওজন ভারী হয়েছে, আমাদের চেহারা উজ্জ্বল করা হয়েছে, আমরা জান্নাতে প্রবেশ করেছি এবং জাহান্নাম হতে মুক্তি পেয়েছি। (সুতরাং আল্লাহ পাকের ওয়াদা পূরণ হতে আর বাকী থাকলো কি?)।" এমন সময় হঠাৎ তাদের উপর থেকে পর্দা উঠিয়ে নেয়া হবে এবং তাদের দষ্টি আল্লাহ তা'আলার উপর পড়ে যাবে। আল্লাহর শপথ! জান্নাতীদের জন্যে এর চেয়ে বড় দান আর কিছুই হবে না। এটাই হবে সবচেয়ে বেশী চক্ষু ঠান্ডাকারী ও মনে শান্তিদায়ক। (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন) মোটকথা, বিভিন্ন হাদীসে রয়েছে যে, (আরবী) শব্দ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার দর্শন বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ হাশরের ময়দানে জান্নাতাবাসীদের মুখমণ্ডল মলিন ও কালিমাময় হবে না। পক্ষান্তরে কাফিরদের চেহারা হবে ধূলিমলিন ও কালিমাযুক্ত। জান্নাতীরা কোনক্রমেই লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে না, প্রকাশ্যেও না, অপ্রকাশ্যেও না। বরং আল্লাহ পাক তো এই জান্নাতীদের সম্পর্কেই বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আল্লাহ তাদেরকে ঐ দিবসের কঠোরতা হতে নিরাপদে রাখবেন এবং তাদেরকে স্ফুর্তি ও আনন্দ দান করবেন।” (৭৬:১১) আল্লাহ দয়া করে আমাদেরকে এই লোকদেরই অন্তর্ভুক্ত করুন। আমীন।