Hud • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ يَوْمَ يَأْتِ لَا تَكَلَّمُ نَفْسٌ إِلَّا بِإِذْنِهِۦ ۚ فَمِنْهُمْ شَقِىٌّۭ وَسَعِيدٌۭ ﴾
“When that Day comes, not a soul will speak. unless it be by His leave; and of those [that are gathered together], some will be wretched and some, happy.”
১০৩-১০৫ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ কাফিরদেরকে ধ্বংস করা এবং মুমিনমু’মিনদেরকে মুক্তি দেয়ার মধ্যে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে আমার ওয়াদার সত্যতার, যে ওয়াদা আমি কিয়ামতের দিন সম্পর্কে করেছি। তিনি বলেন নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে এবং মুমিনমু’মিনদেরকে সাহায্য করবো পার্থিব জীবনে এবং সকলের হাযির হওয়ার দিন; অর্থাৎ কিয়ামতের দিন। আর এক জায়গায় তিনি বলেনঃ তাদের কাছে তাদের প্রতিপালক ওয়াহী পাঠালেনঃ “আমি অবশ্যই যালিমদেরকে ধ্বংস করবো।”মহান আল্লাহ বলেন যে, এটা এমন একটা দিন হবে যেই দিন সমস্ত মানুষকে অর্থাৎ প্রথম ও শেষের সব মানুষকে একত্রিত করা হবে, একজনও ছুটে যাবে না। ওটা হবে বড়ই কঠিন দিন। ঐ দিন হবে সকলের উপস্থিতির দিন। সেই দিন ফেরেশতা ও রাসূলদেরকে হাযির করা হবে এবং সমুদয় সৃষ্ট জীবকে একত্রিত করা হবে। তারা হচ্ছে মানব, দানব, পাখী, বন্য জন্তু এবং ভূ-পৃষ্টে বিচরণকারী সমস্ত কিছু। প্রকৃত ন্যায় বিচারক উত্তম রূপে ন্যায় বিচার করবেন। তিনি তিল পরিমাণও অত্যাচার করবেন না। যদি কিছু পুণ্য থাকে তবে তিনি তা বহু গুণে বাড়িয়ে দেবেন।কিয়ামত সংঘটিত হতে বিলম্ব হওয়ার কারণ এই যে, একটা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত দুনিয়া বনী আদম দ্বারা আবাদ হতে থাকবে এটা মহান আল্লাহ পূর্ব হতেই নির্ধারণ করে রেখেছেন। এতে মোটেই আগা পিছা হবে না। অতঃপর এই নির্দিষ্ট সময় শেষে কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাবে। যেই দিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেই দিন আল্লাহ তাআ’লার অনুমতি ছাড়া কেউই মুখ খুলতে পারবে না। কিন্তু রহমান (আল্লাহ) যাকে অনুমতি দেবেন সে-ই কথা বলবে এবং সে-ও সঠিক কথাই বলবে। রহমানের (আল্লাহর) সামনে সমস্ত শব্দ নীচু হয়ে যাবে। সহীহ্ বুখারী ও সহীহ্ মুসলিমের শাফা’আতের হাদীসে রয়েছে যে, সেই দিন রাসূলগণ ছাড়া কেউই কথা বলবে না এবং তাঁদের কথা হবেঃ “হে আল্লাহ! নিরাপদে রাখুন, নিরাপত্তা দান করুন।” হাশরের ময়দানে বহু হতভাগ্য লোকও থাকবে এবং বহু ভাগ্যবান লোকও থাকবে। যেমন আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ এক দল বেহেশ্তে থাকবে এবং একদল দুযখে থাকবে। (৪২: ৭) হযরত ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, যখন (আরবি) অবতীর্ণ হয় তখন হযরত উমার (রাঃ) জিজ্ঞেস করেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ) আমরা কিসের উপর আমল করবো? আমাদের আমল কি এর উপর হবে যা পূর্বে শেষ হয়ে গেছে (অর্থাৎ পূর্বেই লিখিত আছে), না এর উপর যা পূর্বে শেষ হয় নাই (বরং নতুনভাবে লিখিত হবে)?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) উত্তরে বলেনঃ “হে উমার (রাঃ)! তোমাদের আমল এর উপর ভিত্তি করেই হবে যা পূর্বেই লিখা হয়ে গেছে। (নতুনভাবে আর লিখা হবে না) তবে প্রত্যেকের জন্যে ওটাই সহজ হবে যার জন্যে (অর্থাৎ যে কাজের জন্যে) তার জন্ম হয়েছে।” (এ হাদীসটি হা’ফিয আবু ইয়ালা (রঃ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)