Hud • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ أُو۟لَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَيْسَ لَهُمْ فِى ٱلْءَاخِرَةِ إِلَّا ٱلنَّارُ ۖ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوا۟ فِيهَا وَبَٰطِلٌۭ مَّا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ ﴾
“[yet] it is they who, in the life to come, shall have nothing but the fire -for in vain shall be all that they wrought in this [world], and worthless all that they ever did!”
১৫-১৬ নং আয়াতের তাফসীর এই আয়াতের ব্যাপারে হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রিয়াকার বা যারা মানুষকে দেখাবার জন্যে সৎ কাজ করে তাদের সৎ কাজের প্রতিদান তাদেরকে এই দুনিয়াতেই দিয়ে দেয়া হয়, একটুও কম করা হয় না। সুতরাং যে ব্যক্তি মানুষকে দেখাবার উদ্দেশ্যে নামায পড়ে বা রোযা রাখে অথবা তাহাজ্জুদ গুযারী করে, তার বিনিময় সে দুনিয়াতেই পেয়ে যায়। আখেরাতে সে সম্পূর্ণ শূন্য হস্ত ও আমলহীন অবস্থায় উঠবে।হযরত আনাস ইবনু মা’লিক (রাঃ) এবং হযরত হাসান (রঃ) বলেন যে, এই আয়াত দু’টি ইয়াহুদী ও খৃস্টানদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। আর হযরত মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, রিয়াকারদের ব্যাপারে এ দু’টি আয়াত অবতীর্ণ হয়। মোট কথা, যার উদ্দেশ্য যেটা হবে সেটা অনুযায়ী তার সাথে ব্যবহার করা হবে। যে আমল দুনিয়া সন্ধানের উদ্দেশ্যে হবে আখেরাতে তা বিফল হয়ে যাবে। যেহেতু মু’মিনের আমল আখেরাত সন্ধানের উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে সেই হেতু আল্লাহ তাআ’লা তাকে আখেরাতে উত্তম প্রতিদান প্রদান করবেন এবং দুনিয়াতেও তার সৎকার্যাবলী তার উপকারে আসবে। একটি মারফূ’ (যে হাদীসের সনদ রাসূলুল্লাহ (সঃ) পর্যন্ত পৌঁছে গেছে সেই হাদীসকে মারফূ’ হাদীস বলে) হাদীসেও অনুরূপ কথা বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ “যে ব্যক্তি দুনিয়ার নিয়্যত রাখবে, আমি তাকে ইহজগতে যতটুকু ইচ্ছা, যাকে ইচ্ছা, সত্ত্বরই প্রদান করবো, অতঃপর তার জন্যে দুযখ নির্ধারণ করবে, সে তাতে দুর্দশাগ্রস্ত (ও) বিতাড়িত অবস্থায় প্রবেশ করবে। পক্ষান্তরে যেই ব্যক্তি আখেরাতের নিয়্যত রাখবে এবং ওর জন্যে যেমন চেষ্টার প্রয়োজন তেমন চেষ্টাও করবে, যদি যে মু’মিন হয়, এইরূপ লোকের চেষ্টা গৃহীত হবে। তোমার প্রতিপালকের দান হতে তো আমি এদেরকেও সাহায্য করে থাকি এবং ওদেরকেও; আর তোমার প্রতিপালকের (এই পার্থিব) দান (কারো জন্যে) বন্ধ নয়। তুমি লক্ষ্য কর, আমি একজনকে অপরজনের উপর কিরূপে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি; আর নিশ্চয় পরকাল মর্যাদার হিসেবেও অনেক বড় এবং ফযীলতের হিসেবেও অতি শ্রেষ্ঠ।” আল্লাহ তাআ’লা আর এক জায়গায় বলেনঃ “যে ব্যক্তি পরকালের কৃষিক্ষেত্র চায়, আমি তার জন্যে তার কৃষি ক্ষেত্রে বরকত দান করে থাকি, পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি দুনিয়ার কৃষিক্ষেত্র কামনা করে, আমি তাকে তার থেকে প্রদান করে থাকি, কিন্তু পরকালে তার জন্যে কোনই অংশ নেই।”