Yusuf • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ مَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِهِۦٓ إِلَّآ أَسْمَآءًۭ سَمَّيْتُمُوهَآ أَنتُمْ وَءَابَآؤُكُم مَّآ أَنزَلَ ٱللَّهُ بِهَا مِن سُلْطَٰنٍ ۚ إِنِ ٱلْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ ۚ أَمَرَ أَلَّا تَعْبُدُوٓا۟ إِلَّآ إِيَّاهُ ۚ ذَٰلِكَ ٱلدِّينُ ٱلْقَيِّمُ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ ﴾
“"All that you worship instead of God is nothing but [empty] names which you have invented - you and your forefathers- [and] for which God has bestowed no warrant from on high. Judgment [as to what is right and what is wrong] rests with God alone-[and] He has ordained that you should worship nought but Him: this is the [one] ever-true faith; but most people know it not”
৩৯-৪০ নং আয়াতের তাফসীর হযরত ইউসুফের (আঃ) কারা-সঙ্গীদ্বয় তাঁর কাছে তাদের স্বপ্নের তাৎপর্য জিজ্ঞেস করতে এসেছে। তিনি তাদেরকে তা বলে দেয়ার ওয়াদা করেছেন। কিন্তু এর পূর্বে তিনি তাদেরকে তাওহীদের ওয়ায শুনাচ্ছেন এবং শিরক হতে ও মাখলুকের উপাসনা হতে বিরত থাকতে বলছেন। তিনি বলছেনঃ “সেই এক আল্লাহ যিনি সকল বস্তুর উপর নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন, যাঁর সামনে সমস্ত মাখলুক নত, অক্ষম ও শক্তিহীন, যার কোন অংশীদার নেই, সব কিছুরই উপর যার রাজত্ব ও আধিপত্য তিনিই উত্তম, না তোমাদের কাল্পনিক দুর্বল ও অপদার্থ বহু উপাস্য উত্তম? এরপর তিনি বলেনঃ “তোমরা যেগুলির পূজাঅর্চনা করছে সেগুলি একেবারে অকেজো। এই নামগুলি এবং এগুলির ইবাদত শুধু তোমাদের মনগড়া। খুব বেশি বললে তোমরা শুধু এতটুকুই বলতে পারবে যে, তোমাদের পূর্ব পুরুষরাও এই রোগেরই রোগী ছিল। কিন্তু এর কোন প্রমাণ তোমরা উপস্থাপন করতে পারবে না। আল্লাহ তাআ’লা এর কোন আকলী ও নকলী দলীল দুনিয়ায় তৈরীই করেন নাই। হুকুম, আধিপত্য, ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহরই। তিনি স্বীয় বান্দাদেরকে তাঁরই ইবাদত করার এবং তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করা হতে বিরত থাকার অকাট্য হুকুম দিয়ে রেখেছেন। দ্বীনে মুসতাক্কীম এটাই যে, আল্লাহর একত্ব ঘোষিত হবে, আমল ও ইবাদত হবে একমাত্র তাঁরই জন্যে এবং হুকুম চলবে শুধুমাত্র তারই। এর উপর অসংখ্য দলীল প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ লোকই এটা অবগত নয়। তারা তাওহীদ ও শিরকের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না। এ কারণেই অধিকাংশ মানুষ শিরকের পংকিলে নিমজ্জিত রয়েছে। নবীদের আকাংখা সত্ত্বেও ঈমানের সৌভাগ্য তারা লাভ করে না। স্বপ্নের তাৎপর্য বর্ণনা করার পূর্বে এই বাহাসের অবতারণার মধ্যে এক বিশেষ যৌক্তিকতাও ছিল। তা এই যে, তাদের দু’জনের মধ্যে একজনের স্বপ্নের তাৎপর্য ছিল খুবই খারাপ। তাই তিনি তাদের সাথে অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করছিলেন যেন তারা তাদের প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি না করে। কিন্তু তারা যখন পুনরায় তাৎপর্য জিজ্ঞেস করলো তখন তিনিও তাঁর ওয়াযের পুনরাবৃত্তি করলেন। তাদের বারবার প্রশ্ন উত্থাপন করার কোন প্রয়োজনই ছিল না। কেননা, তিনি তো তাদের স্বপ্নের তাৎপর্য বলে দেয়ার ওয়াদাই করেছেন। এখানে কথা শুধু এটাই যে, তারা তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা দেখেই তাকে এটা জিজ্ঞেস করেছিল। তিনি ওর জবাব দেয়ার পূর্বে ওর চেয়ে উত্তম বিষয়ের দিকে তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন এবং দ্বীন ইসলামকে তাদের সামনে দলীলসহ পেশ করেন। কেননা, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তাদের মধ্যে সত্যকে কবুল করে নেয়ার উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। তারা কথা বুঝবে, দলীল প্রমাণের উপর গবেষণা চালাবে এবং সত্যকে মেনে নেয়ার কথা কানে শ্রবণ করবে। যখন তিনি স্বীয় কর্তব্য পালন করলেন এবং আল্লাহর আহকামের তাবলীগের কাজ শেষ করলেন তখন তিনি তাদের দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করার পূর্বে তাদের স্বপ্নের তাৎপর্য বর্ণনা করতে শুরু করলেন।