Yusuf • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَقَالَ لِلَّذِى ظَنَّ أَنَّهُۥ نَاجٍۢ مِّنْهُمَا ٱذْكُرْنِى عِندَ رَبِّكَ فَأَنسَىٰهُ ٱلشَّيْطَٰنُ ذِكْرَ رَبِّهِۦ فَلَبِثَ فِى ٱلسِّجْنِ بِضْعَ سِنِينَ ﴾
“And [thereupon Joseph] said unto the one of the two whom he considered saved: "Mention me unto thy lord [when thou art free]!" But Satan caused him to forget to mention [Joseph] to his lord, and so he remained in prison a few [more] years.”
হযরত ইউসুফ (আঃ) যার স্বপ্নের তাৎপর্য অনুযায়ী স্বীয় ধারণায় জেলখানা হতে মুক্তি পাবেন বলে মনে করেছিলেন তাকে তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তি অর্থাৎ বাবুর্চির অগোচরে গোপনে বলেছিলেন যে, সে যেন বাদশাহর সামনে তাঁর সম্পর্কে আলোচনা করে। কিন্তু লোকটি তাঁর এ কথাটি সম্পূর্ণরূপে ভুলে যায়। এটাও ছিল শয়তানেরই চক্রান্ত। এ কারণে হযরত ইউসুফকে (আঃ) কয়েক বছর কারাগারে কাটাতে হয়েছিল। সুতরাং সঠিক কথা এটাই যে, (আরবি) এর ‘(আরবি)’ সর্বনামটি মুক্তিপ্রাপ্ত লোকটির দিকেই প্রত্যাবর্তিত। তবে কেউ কেউ এ কথাও বলেছেন যে, ‘(আরবি)' সর্বনামটি হযরত ইউসুফের (আঃ) দিকে ফিরেছে।হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে মারফূ’ রূপে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যদি হযরত ইউসুফ (আঃ) এ কথা না বলতেন তবে তাঁকে এতো দীর্ঘদিন জেলখানায় থাকতে হতো না। তিনি আল্লাহ তাআ’লাকে ছেড়ে অন্যের কাছে নিজের জীবনের প্রশস্ততা কামনা করেছিলেন।” কিন্তু এই রিওয়াইয়াতটি অত্যন্ত দুর্বল। কেননা, সুফইয়ান ইবনু ওয়াকী’ এবং ইবরাহীম ইবনু ইয়াযীদ এ দু'জন বর্ণনাকারী দুর্বল। হাসান (রঃ) ও কাতাদা’ (রঃ) হতে মুরসাল রূপে হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যদিও কোন কোন ক্ষেত্রে মুরসাল হাদীস গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকে, তথাপি এরূপ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এরূপ মুরসাল হাদীস কখনোই গ্রহণযোগ্য দলীল হতে পারে না। এসব ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তাআ’লারই রয়েছে।(আরবি) শব্দটি তিন থেকে নয় পর্যন্ত সংখ্যার জন্যে এসে থাকে। হযরত অহাব ইবনু মুনাববাহ (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আইয়ুব (আঃ) সাত বছর যাবৎ রোগে ভুগেছিলেন, হযরত ইউসুফ (আঃ) সাত বছর কারাগারে অবস্থান করেছিলেন এবং বাখ্তে নাসারের শাস্তিও সাত বছর ধরে চলেছিল। হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, হযরত ইউসুফের (আঃ) কারাগারে অবস্থানের সময়কাল ছিল বারো বছর। যহ্হাক (রঃ) বলেন যে চৌদ্দ বছর তিনি জেলখানায় অবস্থান করেছিলেন।