Ibrahim • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ قُل لِّعِبَادِىَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ يُقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُنفِقُوا۟ مِمَّا رَزَقْنَٰهُمْ سِرًّۭا وَعَلَانِيَةًۭ مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِىَ يَوْمٌۭ لَّا بَيْعٌۭ فِيهِ وَلَا خِلَٰلٌ ﴾
“[And] tell [those of] My servants who have attained to faith that they should be constant in prayer and spend [in Our way], secretly and openly, out of what We provide for them as sustenance, ere there come a Day when there will be no bargaining, and no mutual befriending.”
আল্লাহ তাআলা স্বীয় বান্দাদেরকে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করা, তার হক মেনে নেয়া এবং তাঁর সৃষ্ট জীবের প্রতি ইহসান ও সৎ ব্যবহার করার নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি হুকুম করছেন যে, তারা যেন নামায কায়েম করে যা হচ্ছে এক ও অংশী বিহীন আল্লাহর ইবাদত এবং তারা যেন অবশ্যই আত্মীয় ও অনাত্মীয় সকলকেই যাকাত (এর মাল) দিতে থাকে। নামায কায়েম করা দ্বারা সময় সীমা, বিনয় এবং রূক ও সিজদার হিফাযত করা বুঝানো হয়েছে। আল্লাহর দেয়া সম্পদ হতে তাঁর পথে গোপনে ও প্রকাশ্যে তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কিছু কিছু অবশ্যই ব্যয় করতে হবে, যাতে এমন এক দিনে মুক্তি লাভ করা যায় যেই দিন ক্রয়-বিক্রয় ও বন্ধুত্ব-ভালবাসা কিছুই থাকবে না। সেদিন কেউ মুক্তিপণ দিয়ে আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচতে চাইলে তা মোটেই সম্ভব হবে না। ওটা হচ্ছে কিয়ামতের দিন। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “আজ তোমাদের ও কাফিরদের নিকট থেকে কোন মুক্তিপণ গ্রহণ করা হবে না।” (৫৭:১৫) সেই দিন থাকবেনা বন্ধুত্ব এই উক্তি সম্পর্কে ইমাম ইবনু জারীর (রঃ) বলেন যে, সেখানে কোন বন্ধুর বন্ধুত্বের কারণে কেউ মুক্তি পাবে না, বরং সেদিন ন্যায় বিচারই করা হবে।(আরবি) শব্দটি (আরবি) বা ক্রিয়ামূল। যেমন উক্তিকারীর উক্তিঃ (আরবি) অর্থাৎ “আমি তার সাথে বন্ধুত্ব পাতিয়েছি, সুতরাং আমি তার সাথে উত্তমরূপে বন্ধুত্ব স্থাপন করেছি। ইমরুল কায়েসের কবিতায় রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ-অশ্লীলতার ভয়ে আমি তাদের থেকে প্রবৃত্তিকে ফিরিয়ে নিয়েছি, আর আমি বন্ধুত্ব ও শত্রুতার লক্ষ্য স্থল নই। অর্থাৎ-আমি এমন কাজ করি না। যাতে বন্ধু খুশী হয় এবং শত্রু দুঃখিত হয়।”কাতাদা (রঃ) বলেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা জানেন যে, দুনিয়ায় ক্রয়-বিক্রয় ও বন্ধুত্ব-ভালবাসা চলে থাকে। দুনিয়ায় তারা পরস্পর বন্ধুত্ব ও ভালবাসা স্থাপন করে থাকে। সুতরাং মানুষের দেখা উচিত যে, সে কোন লোকের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করছে এবং কিসের উপর ভিত্তি করে করছে। যদি এটা আল্লাহর জন্যে হয় তবে যেন এটা স্থায়ীভাবে রাখে। আর যদি গায়রুল্লাহর জন্যে হয় তবে যেন তা ছিন্ন করে। আমি (ইবনু জারীর (রঃ) বলিঃ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছেঃ “আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন যে, সেখানে ক্রয়-বিক্রয় ও মুক্তিপণ কারো কোন উপকারে আসবে না। সেদিন যদি কেউ পৃথিবীপূর্ণ সোনাও মুক্তিপণ হিসেবে দিতে চায় তবুও তা গৃহীত হবে না। সেদিন কারো বন্ধুত্ব কোন উপকারে আসবে না এবং কারো সুপারিশও কোন কাজে লাগবে যদি কাফির অবস্থায় আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ করে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “তোমরা এমন দিনকে ভয় কর যেই দিন কেউ কারো কোন উপকারে আসবে না, কোন বিনিময় গ্রহণ করা হবে না, সুপারিশ কোন কাজে লাগবে না এবং সাহায্যকৃত হবে না।” (২:১২৩) আল্লাহ তাআলা আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে আমি যে জীবিকা দান করেছি তা থেকে (আমার পথে) খরচ কর এমন দিন আসার পূর্বে যেই দিন ক্রয় বিক্রয়, বন্ধুত্ব এবং সুপারিশ থাকবে না, আর কাফিররাই হচ্ছে অত্যাচারী।” (২৪:২৫৪)