An-Nahl • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ لِيَكْفُرُوا۟ بِمَآ ءَاتَيْنَٰهُمْ ۚ فَتَمَتَّعُوا۟ ۖ فَسَوْفَ تَعْلَمُونَ ﴾
“[as if] to prove their ingratitude for all that We have granted them! Enjoy, then, your [brief] life: but in time you will come to know [the truth]!”
৫১-৫৫ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেনঃ “এক আল্লাহ ছাড়া আর কেউই ইবাদতেরযোগ্য নেই। তিনি শরীক বিহীন। তিনি প্রত্যেক জিনিসের সৃষ্টি কর্তা, মালিক এবং প্রতিপালক। আন্তরিকতার সাথে সদা-সর্বদা তাঁরই ইবাদত করা অবশ্য কর্তব্য। তিনি ছাড়া অন্যের ইবাদতের পন্থা অবলম্বন করা মোটেই। উচিত নয়। আসমান ও যমীনের সমস্ত কিছু ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায় তারই অনুগত। সকলকেই তাঁরই কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। সুতরাং তোমরা খাঁটিভাবে তারই ইবাদত করতে থাকো। তার সাথে অন্যকে শরীক করা হতে বিরত থাকো। নিখুঁত দ্বীন একমাত্র আল্লাহরই। আসমান ও যমীনের সমস্ত কিছুর একক মালিক তিনিই।লাভ ও ক্ষতি তাঁরই ইচ্ছাধীন। যত কিছু নিয়ামত বান্দার হাতে রয়েছে সবই তাঁরই নিকট হতে এসেছে। জীবিকা, নিয়ামত, নিরাপত্তা এবং সাহায্য সবই তার পক্ষ হতে আগত। তাঁরই দয়া ও অনুগ্রহ বান্দার উপর রয়েছে। জেনে রেখো, এতগুলো নিয়ামত পাওয়ার পরেও তোমরা এখনো তাঁরই মুখাপেক্ষী। রয়েছে। বিপদ-আপদ এখনো তোমাদের মাথার উপর ঘুরপাক খাচ্ছে। দুঃখ ও বিপদ-আপদের সময় তোমরা তাঁকেই স্মরণ করে থাকো। কঠিন বিপদের সময় কেঁদে কেঁদে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে তোমরা তাঁরই দিকে ঝুঁকে পড়। স্বয়ং মক্কার মুশরিকদের অবস্থাও এরূপই ছিল। যখন তারা সমুদ্রে পরিবেষ্টিত হয়ে পড়তো, বিপরীত বাতাস যখন নৌকা ঝুকিয়ে দিতো এবং নৌকা টলমল করে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হতো তখন তোমরা তোমাদের ঠাকুর, দেবতা, প্রতিমা, পীর, ফকীর, ওয়ালী, নবী সবকেই ভুলে যেতে এবং অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে ঐ বিপদ হতে মুক্তি পাওয়ার জন্যে আল্লাহর নিকটই প্রার্থনা করতে। কিন্তু যখন নৌকা নদীর তীরে পৌঁছে যেতো তখন ঐ পুরাতন মা'বুদগুলির আবার তারা স্মরণ করতো। আর প্রকৃত মা’ৰূদের সাথে পুনরায় ঐ মা'বুদের পূজা শুরু করে দিতো। এর চেয়ে বড় অকৃতজ্ঞ ও বিশ্বাসঘাকতা আর কি হতে পারে? এখানেও আল্লাহ পাক বলেন যে, উদ্দেশ্য সফল হওয়া মাত্রই অনেক লোক চক্ষু ফিরিয়ে নেয়। শব্দটি সমাপ্তিবোধক লাম। আবার এটাকে আমি তাদের এই স্বভাব এজন্যেই করেছি যে, তারা আল্লাহর নিয়ামতের উপর পর্দা ফেলে দেয় এবং তা অস্বীকার করে, অথচ প্রকৃত পক্ষে নিয়ামত দানকারী এবং বিপদ-আপদ দূরকারী আমি ছাড়া আর কেউ নেই।এরপর মহান আল্লাহ তাদেরকে ধমকের সুরে বলছেনঃ “আচ্ছা, দুনিয়ায় তোমরা নিজেদের কাজ চালিয়ে যাও এবং সুখ ভোগ করতে থাকো। কিন্তু এর পরিণাম ফল সত্বরই জানতে পারবে।