Al-Israa • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَإِذَا مَسَّكُمُ ٱلضُّرُّ فِى ٱلْبَحْرِ ضَلَّ مَن تَدْعُونَ إِلَّآ إِيَّاهُ ۖ فَلَمَّا نَجَّىٰكُمْ إِلَى ٱلْبَرِّ أَعْرَضْتُمْ ۚ وَكَانَ ٱلْإِنسَٰنُ كَفُورًا ﴾
“And whenever danger befalls you at sea, all those (powers] that you are wont to invoke forsake you, [and nothing remains for you] save Him: but as soon as He has brought you safe ashore, you turn aside [and forget Him]-for, indeed, bereft of all gratitude is man!”
আল্লাহ তাবারাক ওয়া তাআলা বলছেনঃ বান্দা বিপদের সময় তো আন্তরিকতার সাথে তাদের প্রতিপালকের দিকে ঝুঁকে পড়ে এবং অনুনয় বিনয়ের সূরে তাঁর কাছেই প্রার্থনা করে থাকে। কিন্তু যখনই মহান আল্লাহ তাদেরকে এ বিপদ থেকে উদ্ধার করেন, তখনই সে মুখ ফিরিয়ে নেয়। মক্কা বিজয়ের সময় যখন আবু জেহেলের পুত্র ইকরামা (রাঃ) আবিসিনিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছায় বেরিয়ে পড়েন এবং একটি নৌকায় আরোহণ করেন তখন ঘটনাক্রমে সমুদ্রে ঝড় তুফান শুরু হয়ে যায় এবং প্রতিকূল বায়ু নৌকাকে পাতার মত হেলাতে থাকে। ঐ সময় ঐ নৌকায় যত কাফির ছিল তারা একে অপরকে বলতে থাকেঃ “এই সময় আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ কোনই উপকার করতে পারবে না। সুতরাং এসো, আমরা তাকেই ডাকি।” তৎক্ষণাৎ ইকরামার (রাঃ) মনে খেয়াল জাগলো যে, সমুদ্রে যখন একমাত্র তিনিই উপকার করতে পারেন ,তখন এটা স্পষ্ট কথা যে, স্থলেও তিনি উপকারে লাগবেন। তখন তিনি প্রার্থনা করতে লাগেনঃ “হে আল্লাহ! আমি অঙ্গীকার করছি যে, যদি আপনি আমাকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করেন তবে আমি সরাসরি গিয়ে মুহাম্মদের (সঃ) হাতে হাত দিবো। নিশ্চয়ই তিনি আমার উপর দয়া করবেন।” অতঃপর সমুদ্র পার হয়েই তিনি সরাসরি রাসূলুল্লাহর (সঃ) খিদমতে গিয়ে হাজির হন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন। পরবর্তী কালে তিনি ইসলামের একজন বড় বীর পুরুষরূপে খ্যাতি লাভ করেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হোন ও তাঁকে সন্তুষ্ট রাখুন।তাই মহান আল্লাহ বলেনঃ “তোমাদের অভ্যাস তো এই যে, সমুদ্রে যখন তোমরা বিপদে পতিত হও, তখন আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য মাবূদদেরকে তোমরা ভুলে যাও এবং আন্তরিকতার সাথে একমাত্র আল্লাহকেই ডাকতে থাকো। কিন্তু যখনই তিনি ঐ বিপদ সরিয়ে দেন তখনই তোমরা আবার অন্যদের কাছে প্রার্থনা শুরু করে দাও। সত্যি মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ যে, সে আল্লাহর নিয়ামত রাশির কথা ভুলে যায়, এমন কি অস্বীকার করে বসে। হাঁ, তবে আল্লাহ তাআ’লা যাকে বাঁচিয়ে নেন ও ভাল হওয়ার তাওফীক দান করেন সে ভাল হয়ে যায়।”