Al-Kahf • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ قُلِ ٱللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا لَبِثُوا۟ ۖ لَهُۥ غَيْبُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۖ أَبْصِرْ بِهِۦ وَأَسْمِعْ ۚ مَا لَهُم مِّن دُونِهِۦ مِن وَلِىٍّۢ وَلَا يُشْرِكُ فِى حُكْمِهِۦٓ أَحَدًۭا ﴾
“Say: "God knows best how long they remained [there]. His [alone] is the knowledge of the hidden reality of the heavens and the earth: how well does He see and hear! No guardian have they apart from Him, since He allots to no one a share in His rule!"”
২৫-২৬ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবীকে (সঃ) ঐ সময়কালের খবর দিচ্ছেন, যে সময়কাল পর্যন্ত গুহাবাসীরা তাদের গুহার মধ্যে নিদ্রিত অবস্থায় অবস্থান করে ছিলেন। ঐ সময়কাল ছিল সূর্যের হিসেবে তিন শ' বছর এবং চন্দ্রের হিসেবে তিনি শ’ নয় বছর। প্রকৃতপক্ষে শামসী ও কামরী বছরের মধ্যে প্রতি একশ বছরের তিন বছরের পৃথকভাবে বর্ণনা করার পর নয় বছর আলাদাভাবে বর্ণনা করেছেন।এরপর মহান আল্লাহ স্বীয় নবীকে (সঃ) সম্বোধন করে বলছেনঃ “হে বী (সঃ)! যদি তোমাকে গুহাবাসীদের শয়নকাল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় এবং তোমার এর সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকে এবং আল্লাহ তাআলাও তোমাকে তা জানিয়ে না থাকেন, তবে তুমি সামনে বেড়ে যেয়ো না এবং এরূপ স্থলে উত্তর দাওঃ এর সঠিক জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর রয়েছে। আসমান ও যমীনের গায়েবের খবর তিনিই রাখেন। তবে তিনি যাকে জানিয়ে দেন সে জানতে পারে।”কাতাদা (রঃ) বলেন যে, তারা গুহায় তিন শ’ বছর ছিলেন এটা আহলে কিতাবের উক্তি। আল্লাহ তাআলা এই উক্তিটি খণ্ডন করেছেন এবং বলেছেনঃ এরপূর্ণ ও সঠিক জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর রয়েছে। হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ)। হতেও এই অর্থের কিরআত বর্ণিত আছে। কিন্তু কাতাদার (রঃ) উক্তিটি বিবেচনাধীন। কেননা, আহলে কিতাবের মধ্যে শামসী বছরের প্রচলন রয়েছে। এবং তারা গুহাবাসীদের অবস্থানের সময়কাল তিন শ’বছর মেনে থাকে। তিন শ’ নয় বছর তাদের উক্তি নয়। যদি এটা তাদেরই উক্তি হতো, তবে আল্লাহ তাআলা একথা বলতেন না যে, তারা তিনশ’ বছর ঘুমিয়েছিল এবং আরো নয় বছর বেশী করেছিল। বাহ্যতঃ তো এটাই ঠিক মনে হচ্ছে যে, স্বয়ং আল্লাহ তাআলা এটার খবর দিচ্ছেন, কারো উক্তি তিনি বর্ণনা করছেন না। এটাই ইমাম ইবনু জারীর (রাঃ) গ্রহণ করেছেন। কাতাদার (রাঃ) রিওয়াইয়াত এবং হযরত ইবনু মাসউদের (রঃ) কিরআত দু'টোই ছেদ কাটা এবং অতি বিরলও বটে জমহূরের কিরআত ওটাই যা কুরআনে রয়েছে। তিনি বিরল দলীলের পক্ষপাতি নন।আল্লাহ তাআলা স্বীয় বান্দাদেরকে খুবই দেখতে রয়েছেন এবং তাদের কথাও তিনি বেশ শুনতে রয়েছেন। এই দু'টি শব্দে প্রশংসার আধিক্য রয়েছে। অর্থাৎ “খুব বেশী শ্রোতা ও খুব বেশী দ্রষ্টা। প্রত্যেক বিদ্যমান জিনিস তিনি দেখতে রয়েছেন এবং সমস্ত কথা তিনি শুনতে রয়েছেন। কোন কাজ ও কোন কথা তার কাছে গোপন নেই। তাঁর চেয়ে বেশী কেউ শ্রবণকারীও নেই এবং দর্শনকারীও নেই। প্রত্যেকের আমল তিনি দেখতে রয়েছেন এবং প্রত্যেকের কথা তিনি শুনতে রয়েছেন। সৃষ্টির স্রষ্টা এবং হুকুমের মালিক তিনিই। কেউ তার আদেশকে প্রতিরোধ করতে পারে না। তার কোন উযীর ও সাহায্যকারী নেই। তাঁর কোন অংশীদারও নেই এবং কোন পরামর্শদাতাও নেই। তিনি এই সমূদয় অভাব হতে মুক্ত ও পবিত্র। এই সব ত্রুটি হতে তিনি সম্পূর্ণরূপে মুক্ত।