Al-Kahf • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَرَءَا ٱلْمُجْرِمُونَ ٱلنَّارَ فَظَنُّوٓا۟ أَنَّهُم مُّوَاقِعُوهَا وَلَمْ يَجِدُوا۟ عَنْهَا مَصْرِفًۭا ﴾
“And those who were lost in sin will behold the fire, and will know that they are bound to fall into it, and will find no way of escape therefrom.”
৫২-৫৩ নং আয়াতের তাফসীর: সমস্ত মুশরিককে কিয়ামতের দিন লজ্জিত করার উদ্দেশ্যে সবারই সামনে বলা হবেঃ আজ তোমরা তোমাদের ঐ শরীকদেরকে আহবান কর যাদেরকে দুনিয়ায় আহবান করতে, যাতে তারা তোমাদেরকে আজকের বিপদ হতে রক্ষা করে। তারা তখন আহবান করবে, কিন্তু কোন সাড়া পাবে না। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি এভাবে তোমাদেরকে একক ভাবে এনেছি যেমন ভাবে তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম। দুনিয়ায় আমি তোমাদেরকে যা কিছু দিয়ে রেখেছিলাম সে সবগুলি তোমরা তোমাদের পিছনে ছেড়ে এসেছে। আজ তো আমি তোমাদের সাথে তোমাদের ঐ সব শরীককে দেখছি না যাদেরকে তোমরা আল্লাহর শরীক বানিয়ে রেখেছিলে এবং বিশ্বাস রেখেছিলে যে, তারা তোমাদের জন্যে শাফাআত করবে। তোমাদের মধ্যকার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তোমাদের ধারণা মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে গেছে।” (৬:৯৪) অন্য আয়াতে আছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “বলা হবে তোমাদের দেবতাগুলিকে আহ্বান কর। তারা তখন আহ্বান করবে কিন্তু তারা তাদের আহ্বানে কোন সাড়া দেবে।” (২৮ :৬৪) এই বিষয়েরই আয়াত। হতে দু’আয়াত পর্যন্ত। সূরায়ে মারইয়ামে আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “তারা। আল্লাহ ছাড়া অন্য মাবুদ গ্রহণ করে নিয়েছে এই জন্যে, যাতে তারা তাদের সহায় হয় না, এই ধারণা অবাস্তব, তারা তাদের ইবাদত অস্বীকার করবে এবং তাদের বিরোধী হয়ে যাবে। তাদের মধ্যে ও তাদের বাতিল মাবুদের মধ্যে পর্দা ও ধ্বংসের গর্ত বানিয়ে দেবো; যেন তারা পরস্পর মিলিত হতে না পারে। যেন সুপথ প্রাপ্ত ও পথভ্রষ্টরা পৃথক পৃথক ভাবে থাকে। জাহান্নামের এই উপত্যকা তাদেরকে পরস্পরে মিলিত হতে দেবে না। বর্ণিত আছে যে, এটা হবে রক্ত ও পূজের উপত্যকা। তাদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা হয়ে যাবে। বাহ্যতঃ জানা যাচ্ছে যে, এর দ্বারা ধ্বংস উদ্দেশ্য। আবার এটাও হতে পারে যে, এর দ্বারা জাহান্নামের কোন উপত্যকাকে বুঝানো হয়েছে। কিংবা প্রভেদ ও ব্যবধান সষ্টিকারী অন্য কোন উপত্যকা হবে। উদ্দেশ্য এই যে, ঐ উপাস্যরা ঐ উপাসকদেরকে জবাব পর্যন্ত দিবে না। তাদের পরস্পরের মধ্যে মিলনও ঘটবে না। কেননা, তাদের মাঝে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছেঃ আমি ঐ মুশরিক ও মুসলমানদের মাঝে আড়াল করে দেবে। যেমন- (আরবী) (৩০:১৪) (আরবী) ও (৩০:৪৩) এবং (আরবী) ইত্যাদি আয়াতসমূহে রয়েছে। এই পাপী ও অপরাধীরা এমন অবস্থায় জাহান্নাম দেখবে যে, সত্তর হাজার লাগামে তারা আবদ্ধ থাকবে। প্রত্যেক লাগামের উপর সত্তর হাযার করে ফেরেশতা থাকবে। দেখেই তারা বুঝতে পারবে যে, ওটাই তাদের কয়েদখানা। জাহান্নামে প্রবেশের পূর্বেই তাদের উপর কঠিন বিপদ, দুঃখ-কষ্ট ও যন্ত্রণা শুরু হয়ে যাবে। এগুলো হবে প্রকৃত শাস্তির পর্বের শাস্তি। কিন্তু তারা তার থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোন উপায় খুঁজে পাবে না। হাদীস শরীফে আছে যে, পাঁচ হাজার বছর পর্যন্ত কাফিররা ঐ ভয়াবহ ও কম্পমান অবস্থাতেই থাকবে যে, তাদের সামনেই রয়েছে জাহান্নাম, আর ওর পূর্বেই তারা ঐরূপ শাস্তি ভোগ করতে রয়েছে।