Al-Kahf • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ كَذَٰلِكَ وَقَدْ أَحَطْنَا بِمَا لَدَيْهِ خُبْرًۭا ﴾
“thus [We had made them, and thus he left them; and We did encompass with Our knowledge all that he had in mind”
৮৯-৯১ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা বলেন যে, যুলকারনাইন পশ্চিম দিক থেকে ফিরে এসে পূর্ব দিকে চলতে শুরু করেন। পথে যে সম্প্রদায়ের সাথে সাক্ষাৎ হতো, তাদেরকে তিনি আল্লাহর ইবাদত ও তার একত্ববাদের দাওয়াত দিতেন। তারা স্বীকার করলে তো ভালই, অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতেন। আল্লাহর ফজলে তাদের উপর বিজয় লাভ করে তিনি তাদেরকে নিজের। অধীনস্থ করতঃ তথাকার ধন-সম্পদ, গৃহ পালিত পশু, খাদেম প্রভৃতি নিয়ে সামনে অগ্রসর হতেন। বাণী ইসরাঈলের খবরে রয়েছে যে, তিনি একহাজার ছয় শ' বছর জীবিত ছিলেন এবং বরাবরই ভূ-পৃষ্ঠে আল্লাহর দ্বীনের তবলীগের কাজ চালিয়ে যান। সাথে সাথে তাঁর সাম্রাজ্যের আয়তনও বিস্তৃত হয়। সূর্য উদিত হওয়ার স্থানে যখন তিনি পৌঁছেন তখন সেখানে দেখতে পান যে, একটি জনবসতি রয়েছে। কিন্তু তথাকার লোকেরা প্রায় চতুষ্পদ জন্তুর মত ছিল। না তারা ঘরবাড়ী তৈরী করে, না তথায় কোন গাছপালা রয়েছে, না রৌদ্র থেকে রক্ষা পাওয়ার কোন কিছু সেখানে বিদ্যমান রয়েছে। তাদের দেহের রঙ ছিল লাল এবং তারা বেঁটে আকৃতির লোক ছিল। তাদের সাধারণ খাদ্য ছিল মাছ। সূর্য উদিত হওয়ার সময় তারা পানিতে নেমে যেতো এবং সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর তারা চতুষ্পদ জুলুর মত এদিক ওদিক ছড়িয়ে পড়তো। এটা হযরত হাসানের (রাঃ) উক্তি। হযরত কাতাদার (রঃ) উক্তি এই যে, সেখানে কিছুই উৎপন্ন হতো না। সূর্য উদিত হওয়ার সময় তারা পানিতে চলে যেতো এবং সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়ার পর তারা তাদের দূরবর্তী ক্ষেত খামারের দিকে ছড়িয়ে পড়তো। সালমার (রঃ) উক্তি এই যে, তাদের কান ছিল বড় বড়। একটা কান দ্বারা নিজেদের লজ্জাস্থান আবৃত করতো আর একটি বিছিয়ে দিতো। কাতাদা (রঃ) বলেন, তারা ছিল অসভ্য ও বর্বর। ইমাম ইবনু জারীর (রঃ) বলেন যে, সেখানে কখনো কোন ঘরবাড়ী এবং প্রাচীর নির্মিত হয় নাই। সূর্যোদয়ের সময় ঐ লোকগুলি পানিতে নেমে যেতো। সেখানে কোন পাহাড় পর্বতও নেই। অতীতে কোন এক সময় তাদের কাছে এক সেনাবাহিনী আগমন করে। তারা তথাকার লোকদেরকে বলেঃ “দেখো, তোমরা সূর্যোদয়ের সময় বাইরে চলে যেয়ো না।" তারা বললোঃ “না, এটা হতে পারে না, আমরা বরং রাতে রাতেই এখান থেকে চলে যাবো।” তখন ঐ সেনাবাহিনী তাদেরকে বললোঃ “আচ্ছা বলতো, এই চকচকে হাড়গুলির ঢেরীটা কিরূপ?” উত্তরে তারা বললোঃ “পূর্বে এখানে এক সেনাবাহিনী এসেছিল। সূর্যোদয়ের সময় তারা এখানেই অবস্থান করেছিল। ফলে তারা সবাই মৃত্যুবরণ করেছিল। এগুলি তাদেরই অস্থি।” একথা শোনা মাত্রই এই সেনাবাহিনী সেখান থেকে বিদায় গ্রহণ করে।এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ ‘প্রকৃত ঘটনা এটাই, তার বৃত্তান্ত আমি সম্যক অবগত আছি।' তাঁর ও তাঁর সঙ্গীদের কোন কাজ, কোন কথা এবং কোন চালচলন আল্লাহ তাআলার অজানা ছিল না। যদিও তাঁর সৈন্য সংখ্যা অনেক ছিল এবং যমীনের প্রতিটি অংশে তারা ছড়িয়ে পড়েছিলেন, তবুও কোন কিছুই মহান আল্লাহর অগোচরে ছিল না। তার জ্ঞান যমীন ও আসমানের সব কিছুকেই পরিবেষ্টনকারী। তাঁর কাছে কিছুই গোপন নেই।