Al-Baqara • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَقَالَ ٱلَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ لَوْلَا يُكَلِّمُنَا ٱللَّهُ أَوْ تَأْتِينَآ ءَايَةٌۭ ۗ كَذَٰلِكَ قَالَ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِم مِّثْلَ قَوْلِهِمْ ۘ تَشَٰبَهَتْ قُلُوبُهُمْ ۗ قَدْ بَيَّنَّا ٱلْءَايَٰتِ لِقَوْمٍۢ يُوقِنُونَ ﴾
“AND [only] those who are devoid of knowledge say, "Why does God not speak unto us, nor is a [miraculous] sign shown to us?" Even thus, like unto what they, say, spoke those who lived before their time their hearts are all alike. Indeed, We have made all the signs manifest unto people who are endowed with inner certainty.”
এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাফে' বিন হুরাইমালা নামক একটি লোক রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে বলেঃ “হে মুহাম্মদ (সঃ)! আপনি যদি সত্যই আল্লাহর (রাসূল) হন তবে আল্লাহ তা'আলা স্বয়ং আমাদেরকে বলেন না কেন? তাহলে স্বয়ং আমরা তাঁর কথা শুনতে পাই” তখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, একথা খ্রীষ্টানেরা বলেছিল। ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) এটাকে সঠিক বলেছেন। কেননা, এ আলোচনা তাদের সম্পর্কেই; কিন্তু এ উক্তিও খুব বেশী নির্ভরযোগ্য নয়। কুরতুবী (রঃ) বলেন যে, তারা বলেছিলঃ * হে মুহাম্মদ (সঃ)! আপনার নবুওয়াতের সংবাদ স্বয়ং আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দেন না কেন?' বাহ্যতঃ এটাই সঠিক বলে মনে হচ্ছে। অন্যান্য কয়েকজন মুফাসির বলেন যে, একথা আরবের কাফিরেরা বলেছিল। তারপরে যে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “এরকম উক্তি তাদের পূর্ববর্তী লোকেরাও করেছিল” এর দ্বারা ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বুঝানো হয়েছে। কুরআন মাজীদের অন্য জায়গায় আছেঃ (আরবী)অর্থাৎ “যখন তাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে তখন তারা বলে- আমরা মানব না, যে পর্যন্ত না আমাদেরকে ঐ জিনিস দেয়া হয় যা রাসূলগণকে (আঃ) দেয়া হয়েছে। অন্যত্র বলেছেনঃ “তারা বলে আমরা কখনও আপনার উপর। ঈমান আনবো না, যে পর্যন্ত না আপনি আমাদের জন্যে ঝরণা প্রবাহিত করেন।" আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ “যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না তারা বলে আমাদের উপর ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় না কেন কিংবা আমরা আমাদের প্রভুকে দেখতে পাই না কেন?" অন্যত্র রয়েছেঃ “তাদের প্রত্যেকেই চাচ্ছে যে,তাদেরকে কোন কিতাব দেয়া হোক।" এ সব আয়াত স্পষ্টভাবে প্রকাশ করছে যে, আরবের মুশরিকরা শুধুমাত্র অহংকার ও অবাধ্যতার বশবর্তী হয়েই রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট এসব জিনিস চেয়েছিল। এভাবে এ দাবীও মুশরিকদেরই ছিল। তাদের পূর্বে আহলে কিতাবও এরকম বাজে প্রার্থনা জানিয়েছিল। যেমন ইরশাদ হচ্ছেঃ “আহলে কিতাব তোমার নিকট চাচ্ছে যে, তুমি তাদের উপর আকাশ হতে কোন কিতাব অবতীর্ণ করবে, তারা তো মূসার (আঃ) নিকট এর চেয়ে বড় প্রার্থনা জানিয়েছিল, তারা তাঁকে বলেছিল-“আল্লাহকে আমাদের সামনে এনে দেখাও।' আল্লাহ পাক আরও বলেনঃ “যখন তোমরা বলেছিলে (বানী ইসরাঈল)- হে মূসা (আঃ)! আমরা তোমার উপর ঈমান আনবো না যে পর্যন্ত না তুমি তোমার প্রভুকে আমাদের সামনে এনে দেখাবে। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ এদের অন্তর ও ওদের অন্তর সাদৃশ্য পূর্ণ হয়েছে। অর্থাৎ এই মুশরিকদের অন্তর পূর্বযুগের কাফিরদের মত হয়ে গেছে।' অপর এক জায়গায় আছেঃ পূর্বযুগের লোকেরাও তাদের নবীগণকে যাদুকর ও পাগল বলেছিল এবং এরাও তাদের অনুকরণ করছে।তারপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ আমি বিশ্বাস স্থাপনকারীদের জন্যে নিদর্শনাবলী বর্ণনা করেছি যেগুলো দ্বারা রাসূলের (সঃ) সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। অন্য কোন জিনিস চাওয়ার প্রয়োজন বাকী নেই। ঈমান আনয়নের জন্যে এই নিদর্শনগুলোই যথেষ্ট। তবে যাদের অন্তরের উপর মোহর লাগানো রয়েছে তাদের জন্যে কোন আয়াতই ফলদায়ক হবে না। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ “যাদের উপর তোমার প্রভুর কথা সাব্যস্ত হয়ে গেছে,তারা ঈমান আনবে না, যদিও তাদের নিকট সমস্ত নিদর্শন এসে যায়,যে পর্যন্ত না তারা বেদনাদায়ক শাস্তি দেখে নেয়।