Al-Baqara • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ ٱلْحَقُّ مِن رَّبِّكَ ۖ فَلَا تَكُونَنَّ مِنَ ٱلْمُمْتَرِينَ ﴾
“the truth from thy Sustainer! Be not, then, among the doubters:”
১৪৬-১৪৭ নং আয়াতের তাফসীর ইরশাদ হচ্ছে যে, আহলে কিতাবের আলেমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ) কর্তৃক আনীত কথাগুলোর সত্যতা সম্বন্ধে এমনই জ্ঞাত রয়েছে যেমন জ্ঞাত রয়েছে পিতা ছেলেদের সম্বন্ধে। এটা একটা দৃষ্টান্ত ছিল যা আরবের লোকেরা পূর্ণ বিশ্বাসের সময় বলে থাকতো। একটি হাদীসে রয়েছে একটি লোকের সঙ্গে ছোট একটি শিশু ছিল। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “এটা কি তোমার ছেলে?” সে বলেঃ হাঁ’, হে আল্লাহর রাসূল! আপনিও সাক্ষী থাকুন। তিনি বলেনঃ “সেও তোমার উপর গোপন নেই এবং তুমিও তার উপর গোপন নও।'কুরতুবী (রঃ) বলেন যে, হযরত উমার ফারূক (রাঃ) ইয়াহুদীদের একজন বিখ্যাত পণ্ডিত হযরত আবদুল্লাহ বিন সালামকে (রাঃ) জিজ্ঞেস করেনঃ ‘আপনি কি হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-কে এমনই চিনেন, যেমন চিনেন আপনার সন্তানদেরকে?' তিনি উত্তরে বলেনঃ 'হাঁ', বরং তার চেয়েও বেশী চিনি। কেননা, আকাশের বিশ্বস্ত ফেরেশতা পৃথিবীর একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তির উপর অবতীর্ণ হন এবং তিনি তার সঠিক পরিচয় বলে দিয়েছেন। অর্থাৎ হযরত জিবরাঈল (আঃ) হযরত ঈসার (আঃ) নিকট আগমন করেন, অতঃপর বিশ্বপ্রভু তাঁর গুণাবলী বর্ণনা করেন এবং ঐ সবগুলোই তার মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। এর পরে তিনি যে সত্য নবী এতে আমাদের আর কি সন্দেহ থাকতে পারে। তাকে এক নজর দেখেই চিনতে পারবো না কেন? আমাদের বরং আমাদের ছেলেদের সম্বন্ধে সন্দেহ থাকতে পারে কিন্তু তাঁর নবুওয়াত সম্বন্ধে কোনই সন্দেহ থাকতে পারে না।মোট কথা এই যে, যেমন একটি বিরাট জনসভায় কোন লোক তার ছেলেকে অতি সহজেই চিনে থাকে ঠিক তেমনই আহলে কিতাবও হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-কে তাঁর প্রতি দৃষ্টিপাত মাত্রই চিনে থাকে। কেননা তাদের কিতাবে নবী (সঃ) সম্বন্ধে যে গুণাবলী বর্ণিত আছে তা সবই তার মধ্যে হুবহু বিদ্যমান রয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেন যে, এই সত্য জানা সত্ত্বেও তারা ওটা গোপন করছে। তারপর আল্লাহ তা'আলা স্বীয় নবী (সঃ) ও মুসলমানদেরকে সত্যের উপর অটল ও স্থির থাকার নির্দেশ দিচ্ছেন এবং তাদেরকে সতর্ক করছেন যে, তারা যেন সত্যের ব্যাপারে মোটেই সন্দেহ পোষণ না করে।