Al-Baqara • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ ٱلشَّهْرُ ٱلْحَرَامُ بِٱلشَّهْرِ ٱلْحَرَامِ وَٱلْحُرُمَٰتُ قِصَاصٌۭ ۚ فَمَنِ ٱعْتَدَىٰ عَلَيْكُمْ فَٱعْتَدُوا۟ عَلَيْهِ بِمِثْلِ مَا ٱعْتَدَىٰ عَلَيْكُمْ ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلْمُتَّقِينَ ﴾
“Fight during the sacred months if you are attacked: for a violation of sanctity is [subject to the law of] just retribution. Thus, if anyone commits aggression against you, attack him just as he has attacked you - but remain conscious of God, and know that God is with those who are conscious of Him.”
ষষ্ঠ হিজরীর যীলকদ মাসে রাসূলুল্লাহ (সঃ) সাহাবীগণ (রাঃ) সমভিব্যহারে উমরা (ছোট হজ্ব) করার জন্যে মক্কা শরীফের দিকে যাত্রা করেন। কিন্তু মুশরিকরা তাদেরকে হুদায়বিয়া’ প্রান্তরে বাধা দিতে এগিয়ে আসে। অবশেষে এই শর্তের উপর তাদের সাথে সন্ধি হয় যে, তারা আগামী বছর উমরা করবেন এবং এ বছর ফিরে যাবেন। যুকা'দাহ্ও নিষিদ্ধ মাস ছিল বলে এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। মুসনাদ-ই-আহমাদের মধ্যে হাদীস রয়েছে যে, নিষিদ্ধ মাসসমূহে রাসূলুল্লাহ (সঃ) যুদ্ধ করতেন না। তবে যদি তার উপর কেউ আক্রমণ করতে তাহলে সেটা অন্য কথা। এমনকি যুদ্ধ করতে করতে নিষিদ্ধ মাস এসে পড়লে তিনি যুদ্ধ বন্ধ করে দিতেন। হুদায়বিয়ার প্রান্তরেও যখন রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট এ সংবাদ পৌছে যে, হযরত উসমান (রাঃ)-কে মুশরিকরা শহীদ করে ফেলেছে যিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর বাণী নিয়ে মক্কায় গিয়েছিলেন; তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর চৌদ্দশো সাহাবী (রাঃ)-এর নিকট একটি বৃক্ষের নীচে মুশরিকদের সাথে জিহাদ করার বায়'আত গ্রহণ করেন। অতঃপর যখন তিনি জানতে পারেন যে, ওটা ভুল সংবাদ তখন তিনি তাঁর ইচ্ছা স্থগিত রাখেন এবং সন্ধির দিকে ঝুঁকে পড়েন। এর পরে যা ঘটবার তা ঘটেছিল। অনুরূপভাবে ‘হাওয়াযিন গোত্রের সাথে হুনায়েনের যুদ্ধ হতে যখন তিনি অবকাশ লাভ করেন তখন মুশরিকরা তায়েফে গিয়ে দুর্গের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদেরকে অবরোধ করেন। চল্লিশ দিন পর্যন্ত এই অবরোধ স্থায়ী হয়। অবশেষে কয়েকজন সাহাবীর (রাঃ) শাহাদাতের পর এই অবরোধ উঠিয়ে নেয়া হয় এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ) মক্কার দিকে ফিরে যান। জাআররানা’ নামক স্থান হতে তিনি উমরাহর ইহরাম বাঁধেন। এখানে যুদ্ধ লব্ধ দ্রব্য বন্টন করেন। তাঁর এই উমরাহ যুকা’দাহ মাসে সংঘটিত হয়। এটা ছিল হিজরী অষ্টম সনের ঘটনা। অতঃপর বলা হচ্ছে যে, যারা তোমাদের প্রতি অত্যাচার করে তোমরাও তাদের প্রতি ঐ পরিমাণই অত্যাচার কর। অর্থাৎ মুশরিকদের ব্যাপারেও ন্যায়ের প্রতি খেয়াল রেখো। এখানেও অত্যাচারের বিনিময় অত্যাচার দ্বারাই ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যেমন অন্যান্য জায়গায় শাস্তির বিনিময়কেও শাস্তি' শব্দের দ্বারাই ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং অন্যায়ের বিনিময়কে অন্যায় দ্বারাই বর্ণনা করা হয়েছে।হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, এই আয়াতটি মক্কা শরীফে অবতীর্ণ হয়, যেখানে মুসলমানদের কোন মর্যাদা বা সম্মান ছিল না। সেখানে তাদের প্রতি জিহাদেরও নির্দেশ ছিল না। অতঃপর এই আয়াতটি মদীনা শরীফের জিহাদ সম্পৰ্কীয় নির্দেশের দ্বারা রহিত হয়। কিন্তু ইবনে জারীর (রঃ) এটা অগ্রাহ্য করেছেন এবং বলেছেন যে, এই আয়াতটি মাদানী যা উমরাহ পুরো করার পর অবতীর্ণ হয়েছিল। হযরত মুজাহিদেরও (রঃ) উক্তি এটাই। অতঃপর বলা হয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার কর ও তাঁকে ভয় কর এবং জেনে রেখো যে, এরূপ লোকের উপরেই ইহকালে ও পরকালে আল্লাহ তা'আলার সহায়তা ও সাহায্য রয়েছে।