Al-Baqara • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ زُيِّنَ لِلَّذِينَ كَفَرُوا۟ ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا وَيَسْخَرُونَ مِنَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ۘ وَٱلَّذِينَ ٱتَّقَوْا۟ فَوْقَهُمْ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِ ۗ وَٱللَّهُ يَرْزُقُ مَن يَشَآءُ بِغَيْرِ حِسَابٍۢ ﴾
“Unto those who are bent on denying the truth the life of this world [alone] seems goodly; hence, they scoff at those who have attained to faith: but they who are conscious of God shall be above them on Resurrection Day. And God grants sustenance unto whom He wills, beyond all reckoning.”
২১১-২১২ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা দেখ, বানী ইসরাঈলকে আমি বহু মু'জিযা প্রদর্শন করেছি। হযরত মূসার (আঃ) হাতের লাঠি, তার হাতের ঔজ্জ্বল্য, তাদের সমুদ্রকে দ্বিখণ্ডিত করা, কঠিন গরমের সময় তাদের উপর মেঘের ছায়া দান করা, তাদের উপর মান্না’ ও ‘সালওয়া' অবতীর্ণ করা, ইত্যাদি। যার দ্বারা আমার যা ইচ্ছে করা এবং সব কিছুরই উপর ক্ষমতাবান হওয়া স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে। এর দ্বারা আমার নবী হযরত মূসার (আঃ) নবুয়াতের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু তবু বানী ইসরাঈল আমার নিয়ামতের উপর অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে এবং ঈমানের পরিবর্তে কুফরীর উপরই স্থির থেকেছে। কাজেই তারা আমার কঠিন শাস্তি হতে কিরূপে রক্ষা পাবে: কুরাইশ কাফিরদের সম্বন্ধেও এই সংবাদ দেয়া হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে (আরবি)অর্থাৎ তুমি কি ঐ লোকদেরকে দেখনি যারা আল্লাহর নিয়ামতকে কুফর দ্বারা পরিবর্তন করেছে এবং নিজেদের সম্প্রদায়কে ধ্বংসের ঘরে নিক্ষেপ করেছে। অর্থাৎ জাহান্নাম, যা অতি জঘন্য অবস্থান স্থল।' (১৪:২৮-২৯) অতঃপর বর্ণনা করা হচ্ছে যে, এই কাফিরেরা শুধুমাত্র ইহলৌকিক জগতের উপরই সন্তুষ্ট রয়েছে। সম্পদ জমা করা এবং আল্লাহর পথে খরচ করতে কার্পণ্য করাই তাদের স্বভাব। বরং যেসব মু'মিন এই নশ্বর জগত হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির কাজে সম্পদ বিলিয়ে দিয়েছে তাদেরকে এরা উপহাস করে থাকে। অথচ প্রকৃতপক্ষে ভাগ্যবানতো এই মু'মিনরাই। কিয়ামতের দিন এই মুমিনদের মর্যাদা দেখে এই কাফিরদের চক্ষু খুলে যাবে। সেদিন নিজেদের দুর্ভাগ্য ও মু'মিনদের সৌভাগ্য লক্ষ্য করে তারা অনুধাবন করতে পারবে যে, কারা উচ্চ পদস্থ ও কারা নিম্ন পদস্থ।ইহকালে আল্লাহ তাআলা যাকে ধন-মাল দেয়ার ইচ্ছে করেন তাকে তিনি অপরিমিতভাবে দিয়ে থাকেন। আবার তিনি যাকে ইচ্ছে করেন এখানেও দেন এবং পরকালেও দেবেন। যেমন হাদীস শরীফে এসেছে, (আল্লাহ তাআলা বলেন) হে আদম সন্তান! তুমি আমার পথে খরচ কর আমি তোমাকে দিতেই থাকবো।' রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত বেলাল (রাঃ) কে বলেন, 'হে বেলাল (রাঃ)! তুমি আল্লাহর পথে খরচ করতে থাকো এবং আরশের অধিকারী হতে সঙ্কীর্ণতার ভয় করো না।' কুরআন কারীমের মধ্যে রয়েছে -(আরবি) অর্থাৎ ‘তোমরা যা কিছু খরচ করবে, আল্লাহ পাক তার প্রতিদান দেবেন। (৩৪:৩৯) সহীহ হাদীসে রয়েছে, সকালে দু’জন ফেরেস্তা অবতরণ করেন। একজন প্রার্থনা করেন, “হে আল্লাহ! আপনার পথে ব্যয়কারীকে আপনি বরকত দান করুন।' অপরজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণের মাল ধ্বংস করে দিন।অন্য হাদীসে রয়েছে, মানুষ বলে-“আমার মাল, আমার মাল। অথচ তোমার মাল তো ঐগুলোই যা তুমি খেয়ে ধ্বংস করেছে আর যা তুমি দান করে বাকী রেখেছে। অন্য যত কিছু রয়েছে সেগুলো সবই তুমি অন্যদের জন্যে ছেড়ে এখান হতে বিদায় গ্রহণ করবে।' মুসনাদ-ই-আহমাদের হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, “দুনিয়া তারই ঘর যার কোন ঘর নেই, দুনিয়া তারই মাল যার কোন মাল নেই এবং দুনিয়া শুধু ঐ ব্যক্তি সংগ্রহ করে থাকে যার বিবেক নেই।