Al-Muminoon • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَلَقَدْ خَلَقْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعَ طَرَآئِقَ وَمَا كُنَّا عَنِ ٱلْخَلْقِ غَٰفِلِينَ ﴾
“And, indeed, We have created above you seven [celestial] orbits: and never are We unmindful of [any aspect of Our] creation.”
মানব সৃষ্টি সম্পর্কে আলোচনা করার পর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা আকাশসমূহের সৃষ্টির বর্ণনা দিচ্ছেন। মানব সৃষ্টির তুলনায় আকাশসমূহের সৃষ্টি বহুগুণে বেশী শিল্প চাতুর্যের পরিচায়ক। সূরায়ে আলিফ-লাম-মীম সাজদাহতেও এরই বর্ণনা রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) জুমআর দিন ফজরের নামাযের প্রথম রাকআতে এই সূরাটি পাঠ করতেন। সেখানে প্রথমে আসমান ও যমীনের সষ্টি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তারপর মানব সৃষ্টির বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এরপর পুরস্কার ও শাস্তি প্রদান সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে।এখানে মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি তো তোমাদের উর্ধ্বে সৃষ্টি করেছি সপ্তস্তর। যেমন তিনি অন্য জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “সপ্ত আকাশ ও যমীন এবং এতোদুভয়ের মধ্যে যত কিছু রয়েছে সবই তার মহিমা কীর্তন করে।” (১৭:৪৪) অন্য এক স্থানে রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “তারা কি দেখেনি যে, কিভাবে আল্লাহ সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন?” (৭১:১৫) আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ এবং পৃথিবীও ওগুলোর মতই, ওগুলোর মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ; ফলে তোমরা বুঝতে পার যে, আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং জ্ঞানে আল্লাহ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে আছেন।” (৬৫: ১২)আল্লাহ পাক বলেনঃ আমি সৃষ্টি বিষয়ে অসতর্ক নই। অর্থাৎ তিনি জানেন যা কিছু ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা কিছু তা হতে বের হয় এবং আকাশ হতে যা কিছু নামে ও আকাশে যা কিছু উথিত হয়। তোমরা যেখানেই থাক না কেন তিনি তোমাদের সাথে আছেন; তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন। আকাশের উচ্চ হতে উচ্চতম স্থানে অবস্থিত জিনিস, যমীনের গোপনীয় জিনিস, পর্বতের শৃঙ্গ, সমুদ্রের তলদেশ ইত্যাদি সবকিছুই তাঁর সামনে প্রকাশমান। পাহাড়-পর্বত-টিলা, মরুভূমি, সমুদ্র, ময়দান ইত্যাদি সবকিছুরই খবর তিনি রাখেন। গাছের এমন কোন পাতা ঝরে পড়ে না যা তাঁর জানা থাকে না, যমীনের অন্ধকারে এমন বীজ নেই যা তাঁর অজানা রয়েছে এবং এমন কোন আর্দ্র ও শুষ্ক জিনিস নেই যা প্রকাশ্য কিতাবে বিদ্যমান নেই।