Al-Furqaan • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَهُوَ ٱلَّذِى جَعَلَ ٱلَّيْلَ وَٱلنَّهَارَ خِلْفَةًۭ لِّمَنْ أَرَادَ أَن يَذَّكَّرَ أَوْ أَرَادَ شُكُورًۭا ﴾
“And He it is who causes the night and the day to succeed one another, [revealing Himself in His works] unto him who has the will to take thought - that is has the will to be grateful.”
৬১-৬২ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআলা স্বীয় বড়ত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব, ব্যাপক ক্ষমতা এবং উচ্চ মর্যাদার কথা বলছেন যে, তিনি আকাশে রাশিচক্র বানিয়েছেন। এর দ্বারা উদ্দেশ্য বড় বড় তারকাও হতে পারে, আবার পাহারা দেয়ার বুরূজও হতে পারে। প্রথম উক্তিটিই বেশী প্রকাশমান। বড় বড় তারকা দ্বারাও এই বুজই উদ্দেশ্য হতে পারে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা দ্বারা।” (৬৭: ৫) (আরবি) দ্বারা সূর্যকে বুঝানো হয়েছে যা ঔজ্জ্বল্য প্রকাশ করতে থাকে। এটা প্রদীপের মত। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “আমি উজ্জ্বল প্রদীপ বানিয়েছি।” (৭৮:১৩) এর দ্বারা সূর্যকেই বুঝানো হয়েছে।আল্লাহ পাক বলেনঃ আর আমি সৃষ্টি করেছি জ্যোতির্ময় চন্দ্র। অর্থাৎ উজ্জ্বল ও আলোকময় করেছি সূর্যের আলো ছাড়া অন্যের আলো দ্বারা। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “তিনি এমনই যিনি সূর্যকে উজ্জ্বল বানিয়েছেন এবং চন্দ্রকে বানিয়েছেন জ্যোতির্ময়।” (১০:৫) আল্লাহ তা'আলা হযরত নূহ (আঃ) সম্পর্কে খবর দিতে গিয়ে বলেন যে, তিনি স্বীয় কওমকে বলেছিলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “তোমরা কি লক্ষ্য করনি? আল্লাহ কিভাবে সৃষ্টি করেছেন সপ্তস্তরে বিন্যস্ত আকাশমণ্ডলী? এবং সেখানে চন্দ্রকে স্থাপন করেছেন আলোরূপে ও সূর্যকে স্থাপন করেছেন প্রদীপরূপে।” (৭১:১৫-১৬) যারা উপদেশ গ্রহণ করতে ও কৃতজ্ঞ হতে চায় তাদের জন্যে তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি এবং দিবসকে পরস্পরের অনুগামীরূপে। এটা আল্লাহ তা'আলার সু ব্যবস্থাপনা যে, দিবস ও রজনী একের পরে এক আসছে ও যাচ্ছে। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “তিনি তোমাদের জন্যে সূর্য ও চন্দ্রকে একে অপরের অনুগামীরূপে বানিয়েছেন।” (১৪:৩৩) আরো বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “রাত দিনকে আচ্ছন্ন করে ফেলে এবং তাড়াতাড়ি ওকে কামনা করে।” (৭:৫৪) আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চন্দ্রের নাগাল পাওয়া এবং রজনীর পক্ষে সম্ভব নয় দিবসকে অতিক্রম করা।” (৩৬:৪০)এর মাধ্যমেই আল্লাহর বান্দারা তাঁর ইবাদতের সময় জানতে পারে এবং রাত্রির ছুটে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ দিনে সমাপ্ত করতে ও দিনের অসমাপ্ত কাজ রাত্রে সমাপ্ত করতে পারে। সহীহ হাদীসে আছে যে, আল্লাহ তা'আলা রাত্রে স্বীয় হস্ত সম্প্রসারিত করেন যাতে দিনের পাপীরা তাওবা করতে পারে এবং দিনে তিনি স্বীয় হস্ত সম্প্রসারিত করেন যাতে রাত্রের পাপীরা তাওবা করার সুযোগ পায়। হযরত হাসান (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একদা হযরত উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) চাশতের নামাযে খুবই বিলম্ব করেন। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি উত্তরে বলেনঃ “রাত্রের কিছু অযীফা আমার বাকী থেকে গিয়েছিল, ওটাই এখন আদায় করলাম।” অতঃপর(আরবি) এ আয়াতটি তিনি পাঠ করেন। (এটা আবু দাউদ তায়ালেসী (রঃ) বর্ণনা করেছেন)(আরবি)-এর অর্থ কেউ(আরবি) ও করেছেন। অর্থাৎ দিন উজ্জ্বল ও রাত্রি অন্ধকার। এতে ঔজ্জ্বল্য এবং ওতে অন্ধকার। এটা আলোকময় এবং ওটা অন্ধকারাচ্ছন্ন।