An-Naml • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ أَلَمْ يَرَوْا۟ أَنَّا جَعَلْنَا ٱلَّيْلَ لِيَسْكُنُوا۟ فِيهِ وَٱلنَّهَارَ مُبْصِرًا ۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَٰتٍۢ لِّقَوْمٍۢ يُؤْمِنُونَ ﴾
“for, were they not aware that it is We who had made the night for them, so that they might rest therein, and the day, to make [them] see? In this, behold, there are messages indeed for people who will believe!”
৮৩-৮৬ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ্ তা'আলা সংবাদ দিচ্ছেন যে, যারা তাঁকে মানে না এবং তার কথা স্বীকার করে না তাদেরকে তাঁর সামনে একত্রিত করা হবে। সেখানে তাদেরকে শাসন-গর্জন করা হবে। যাতে তারা লাঞ্ছিত হয় এবং হেয় প্রতিপন্ন হয়। প্রত্যেক কওমের মধ্য হতে প্রত্যেক যুগের এ ধরনের মানুষের দলকে পৃথক পৃথকভাবে পেশ করা হবে। যেমন মহা প্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “(ফেরেশতাদেরকে বলা হবেঃ) একত্রিত কর যালিমদেরকে ও তাদের সহচরদেরকে।” (৩৭: ২২) আর এক জায়গায় তিনি বলেন (আরবি)অর্থাৎ “দেহে যখন আত্মা সংযোজিত হবে।” (৮১: ৭) তারা সবাই একে অপরকে ধাক্কা দেবে। তাদের প্রথম শেষেরদেরকে অগ্রাহ্য ও খণ্ডন করবে। অতঃপর তাদের সবকেই জন্তুর মত হাঁকিয়ে নিয়ে গিয়ে আল্লাহ্ তা'আলার সামনে হাযির করে দেয়া হবে। তাদের হাযির হওয়া মাত্রই ঐ প্রকৃত প্রতিশোধ গ্রহণকারী আল্লাহ অত্যন্ত রাগান্বিত অবস্থায় তাদেরকে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করবেন এবং হিসাব নিবেন। পুণ্য থেকে তারা সম্পূর্ণরূপে শূন্য হস্ত হবে। যেমন তাদের সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “সে বিশ্বাস করেনি এবং নামায আদায় করেনি। বরং সে সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।” (৭৫:৩১-৩২) সুতরাং ঐ সময় তাদের উপর হুজ্জত সাব্যস্ত হয়ে যাবে এবং তারা কোন কিছু পেশ করতে পারবে না। যেমন আল্লাহ তাআলা তাদের সম্পর্কে বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “এটা এমন একদিন যেদিন কারো বাক্যস্ফূর্তি হবে না এবং তাদেরকে অনুমতি দেয়া হবে না অপরাধ স্থলনের।” (৭৭: ৩৫-৩৬) অনুরূপভাবে এখানে বলেনঃ “সীমালংঘন হেতু তাদের উপর ঘোষিত শাস্তি এসে পড়বে; ফলে তারা কিছুই বলতে পারবে না। তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে। নিজেদের যুলুমের প্রতিফল তারা পূর্ণরূপেই প্রাপ্ত হবে। দুনিয়ায় তারা যালিম ছিল। এখন তারা যার সামনে দাঁড়াবে তিনি অদৃশ্যের খবর রাখেন। কোন কথা তার সামনে বানিয়ে বললে তা টিকবে না।এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ্ স্বীয় ব্যাপক ক্ষমতার বর্ণনা দিচ্ছেন এবং স্বীয় সমুন্নত মাহাত্মের কথা বলছেন। আর তিনি নিজের বিরাট সাম্রাজ্য প্রদর্শন করছেন যা তাঁর আনুগত্য অপরিহার্য হওয়া, তাঁর নির্দেশাবলী মেনে চলা ও নিষিদ্ধ কাজগুলো হতে বিরত থাকা অবশ্য কর্তব্য হওয়া এবং নবীদেরকে বিশ্বাস করার মূলের উপর সুস্পষ্ট দলীল। তা এই যে, তিনি মানুষের বিশ্রামের জন্যে রাত্রি সৃষ্টি করেছেন, যাতে তাদের সারা দিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। আর দিবসকে তিনি করেছেন উজ্জ্বল ও আলোকময়, যাতে তারা জীবিকার অনুসন্ধানে ছুটে পড়তে পারে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সফর যেন তাদের জন্যে সহজ হয়। এসবের মধ্যে তো মুমিন সম্প্রদায়ের জন্যে অবশ্যই যথেষ্ট ও পূর্ণমাত্রায় নিদর্শন রয়েছে।