Al-Ankaboot • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَإِن تُكَذِّبُوا۟ فَقَدْ كَذَّبَ أُمَمٌۭ مِّن قَبْلِكُمْ ۖ وَمَا عَلَى ٱلرَّسُولِ إِلَّا ٱلْبَلَٰغُ ٱلْمُبِينُ ﴾
““And if you give [me] the lie - well, [other] communities have given the lie [to Gods prophets] before your time: but no more is an apostle bound to do than clearly deliver the message [entrusted to him].””
১৬-১৮ নং আয়াতের তাফসীর একত্ববাদীদের ইমাম, রাসূলদের পিতা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ (আঃ)-এর বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, তিনি স্বীয় কওমকে তাওহীদের দাওয়াত দেন, রিয়াকারী হতে বেঁচে থাকা এবং পরহেযগারী কায়েম করার হুকুম দেন। তিনি তাদেরকে আল্লাহর নিয়ামতরাজির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে বলেন। আর এর উপকারের কথাও তিনি তাদেরকে বলে দেন যে, এর দ্বারা দুনিয়া ও আখিরাতের অকল্যাণ দূর হয়ে যাবে এবং দুই জাহানের নিয়ামত তারা লাভ করবে। সাথে সাথে তিনি তাদেরকে বলেনঃ যে মূর্তিগুলোর তোমরা উপাসনা করছে ওগুলো তো তোমাদের লাভ বা ক্ষতি কিছুই করতে পারে না। তোমরা নিজেরাই ওদের নাম রেখেছে এবং দেহ তৈরী করেছে। এরা তো তোমাদের মতই সৃষ্ট। এমন কি এরা তোমাদের চেয়েও দুর্বল। এরা তো তোমাদের জীবনোপকরণেরও মালিক নয়। আল্লাহ তাআলার নিকটই তোমরা রিযিক যাঞা কর, আর কারো কাছে নয়। যেমন আল্লাহ তাআলা বলতে শিখিয়ে দিয়েছেনঃ(আরবি) অর্থাৎ “আমরা শুধু আপনারই ইবাদত করি এবং আপনারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি।” (১:৪) এই সীমাবদ্ধতা হযরত আসিয়া (রাঃ)-এর প্রার্থনাতেও রয়েছে। তিনি প্রার্থনা করেছিলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “হে আমার প্রতিপালক! আমার জন্যে আপনার নিকট জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করুন।” (৬৬:১১) আল্লাহ ছাড়া কেউ রিযিক দিতে পারে না, সুতরাং তোমরা একমাত্র তাঁরই কাছে রিযিক যাজ্ঞা কর। আর যখন তাঁরই রিযিক ভক্ষণ কর তখন তার ছাড়া আর কারো ইবাদত করো না এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ কর। তোমাদের প্রত্যেকেই তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। তিনি প্রত্যেক আমলকারীকে তার আমলের প্রতিদান প্রদান করবেন। দেখো, আমাকে মিথ্যাবাদী বলে তোমরা আত্মপ্রসাদ লাভ করো না। চিন্তা করে দেখো যে, তোমাদের পূর্বে যারা নবীদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল তাদের পরিণতি কি হয়েছে! জেনে রেখো যে, নবীদের কাজ শুধু আল্লাহর বাণী মানুষের নিকট পৌঁছিয়ে দেয়া। হিদায়াত করা ও না করা আল্লাহরই হাতে। নিজেদেরকে তোমরা সৌভাগ্যবান বানিয়ে নাও। হতভাগ্যদের মধ্যে নিজেদেরকে শামিল করো না।হযরত কাতাদা (রঃ) বলেন যে, এর দ্বারা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে যথেষ্ট সান্ত্বনা দেয়া হয়েছে। এর ভাবার্থের চাহিদা তো এই যে, প্রথম বাক্য এখানে শেষ হয়েছে এবং এরপর (আরবি) (২৭:৫৬) পর্যন্ত বাক্যগুলো (আরবি) হিসেবে এসেছে। ইমাম ইবনে জারীর তো স্পষ্ট ভাষায় একথাই বলেছেন। কিন্তু কুরআন কারীমের শব্দ দ্বারা এটা প্রকাশ্যভাবে জানা যাচ্ছে যে, সমুদয়ই হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ (আঃ)-এরই উক্তি। তিনি কিয়ামত কায়েম হওয়ার দলীল প্রমাণাদি পেশ করেছেন। কেননা, এই সমুদয় কালামের পর তাঁর কওমের জবাবের বর্ণনা দেয়া হয়েছে।