Al-Ankaboot • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَتِلْكَ ٱلْأَمْثَٰلُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ ۖ وَمَا يَعْقِلُهَآ إِلَّا ٱلْعَٰلِمُونَ ﴾
“And so We propound these parables unto man: but none can grasp their innermost meaning save those who [of Us] are aware”
৪১-৪৩ নং আয়াতের তাফসীর যেসব লোক আল্লাহ ব্যতীত অন্যদের পূজা-অর্চনা করে, তাদের পথভ্রষ্টতা ও অজ্ঞানতার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। তারা তাদের সাহায্য প্রার্থী হয় এবং বিপদ আপদে তাদের কাছে উপকার লাভের আশা করে। এদের দৃষ্টান্ত ওদের মত যারা মাকড়সার জালে বৃষ্টি, রৌদ্র ও ঠাণ্ডা হতে আশ্রয় পাওয়ার আশা করে থাকে। যদি তাদের জ্ঞান থাকতো তবে তারা সৃষ্টিকর্তাকে ছেড়ে সৃষ্টের কাছে কোন আশা করতো না। সুতরাং তাদের অবস্থা ঈমানদারদের অবস্থার সম্পূর্ণ বিপরীত। মুমিনরা এক মযবূত লৌহ-কড়াকে ধরে রয়েছে। পক্ষান্তরে এই মুশরিকরা মাকড়সার জালে নিজেদের মস্তক লুকিয়ে রেখেছে। মুমিনদের অন্তর আল্লাহর দিকে এবং তাদের দেহ সৎ আমলের দিকে লিপ্ত রয়েছে। আর এই কাফির ও মুশরিকদের অন্তর সৃষ্টবস্তুর দিকে এবং তাদের দেহ সৃষ্টবস্তুর উপাসনার দিকে আকৃষ্ট রয়েছে।এরপর আল্লাহ তা'আলা মুশরিকদেরকে সতর্ক করে দিচ্ছেন যে, তারা আল্লাহর পরিবর্তে যা কিছুকে আহ্বান করে আল্লাহ তা অবগত আছেন। তিনি তাদেরকে তাদের দুষ্কর্মের স্বাদ গ্রহণ করাবেন। তিনি তাদেরকে যে অবকাশ দিচ্ছেন এতে তার যুক্তি ও নিপুণতা রয়েছে। তাদেরকে অবকাশ দেয়ার অর্থ এটা নয় যে, তিনি তাদের থেকে বে-খবর ।।মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ মানুষের (বুঝের) জন্যে আমি এই সব দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে থাকি। কিন্তু শুধু (আমলকারী) আলেমরাই এটা অনুধাবন করে।এই আয়াত দ্বারাই সাব্যস্ত হয় যে, আল্লাহ তাআলা কর্তৃক বর্ণিত দৃষ্টান্তগুলো বুঝে নেয়া সত্য ও সঠিক ইলমের প্রমাণ।হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) বলেন, “আমি এক হাজার দৃষ্টান্ত রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট শিখেছি ও বুঝেছি।” (এটা ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আমর ইবনে মুররা (রাঃ) বলেনঃ “কুরআন কারীমের যে আয়াত আমি পাঠ করি এবং ওর অর্থ ও ব্যাখ্যা বুঝতে অপারগ হই তখন আমার মনে বড় দুঃখ হয় এবং অন্তরে খুব ব্যথা পাই ও ভীত হই যে, না জানি হয়তো আল্লাহ তা'আলার নিকট আমি মূর্খ বলে গণ্য হয়ে যাই। কেননা, আল্লাহ তাআলা তো বলেছেনঃ “মানুষের সামনে আমি এসব দৃষ্টান্ত পেশ করে থাকি, কিন্তু আলেমরা ছাড়া কেউই এগুলো বুঝতে পারে না।”