Aal-i-Imraan • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَإِنَّ مِنْهُمْ لَفَرِيقًۭا يَلْوُۥنَ أَلْسِنَتَهُم بِٱلْكِتَٰبِ لِتَحْسَبُوهُ مِنَ ٱلْكِتَٰبِ وَمَا هُوَ مِنَ ٱلْكِتَٰبِ وَيَقُولُونَ هُوَ مِنْ عِندِ ٱللَّهِ وَمَا هُوَ مِنْ عِندِ ٱللَّهِ وَيَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلْكَذِبَ وَهُمْ يَعْلَمُونَ ﴾
“And, behold, there are indeed some among them who distort the Bible with their tongues, so as to make you think that [what they say] is from the Bible, the while it is not from the Bible; and who say, "This is from God," the while it is not from God: and thus do they tell a lie about God, being well aware [that it is a lie].”
এখানেও ঐ অভিশপ্ত ইয়াহূদীদেরই বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, তাদের মধ্যে একটি দল এমনও রয়েছে যারা আল্লাহ তা'আলার কথাকে স্বীয় স্থান হতে সরিয়ে দেয়, তাঁর গ্রন্থের মধ্যে পরিবর্তন আনয়ন করে এবং প্রকৃত অর্থ ও সঠিক ভাবার্থ বিকৃত করে দেয়। আর এর মাধ্যমে তারা মূর্খদেরকে এই চক্রে ফেলে দেয় যে, এটাই আল্লাহর কিতাব। আবার তারা ওটাকে আল্লাহর কিতাবের নাম দিয়ে পাঠ করতঃ তাদের বিশ্বাসকে আরও সুদৃঢ় করে। তারা জেনে শুনে এভাবে আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা বলে। এখানে ভাষাকে বক্র বা কুঞ্চিত করার অর্থ হচ্ছে পরিবর্তন করে দেয়া। সহীহ বুখারীর মধ্যে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, ঐ লোকগুলো পরিবর্তন করে দিতো এবং সরিয়ে দিতো। সৃষ্টজীবের মধ্যে এমন কেউ নেই যে আল্লাহ তা'আলার কিতাবের কোন শব্দ পরিবর্তন করতে পারে। তবে হ্য, ঐ লোকগুলো অর্থ পরিবর্তন করতো এবং বাজে ব্যাখ্যা করতো। হযরত অহাব ইবনে মুনাব্বাহ (রাঃ) বলেন যে, তাওরাত ও ইঞ্জীল ঐ রূপই রয়েছে। যেরূপভাবে আল্লাহ তা'আলা ওগুলো অবতীর্ণ করেছেন। ওগুলোর একটি অক্ষরও পরিবর্তিত হয়নি। কিন্তু ঐ লোকেরা অর্থের পরিবর্তন, মনগড়া ব্যাখ্যা করে জনগণকে পথভ্রষ্ট করতো। তারা নিজেদের পক্ষ হতে সে পুস্তকগুলো লিখতো এবং আল্লাহ তা'আলার কিতাব বলে প্রচার করতো, ওগুলো দ্বারাও লোকদেরকে বিপথে চালিত করতো, অথচ ওগুলো আল্লাহ পাকের পক্ষ হতে ছিল না। কিন্তু আল্লাহ তা'আলার প্রকৃত কিতাবগুলো রক্ষিতই রয়েছে, ঐগুলো কখনও পরিবর্তিত হয় না। (মুসনাদ-ই-ইবনে হাতিম) হযরত অহাব (রঃ)-এর এ ঘোষণার ভাবার্থ যদি এই হয় যে, তাদের নিকট এখন যে গ্রন্থসমূহ রয়েছে তবে তো আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি যে, ওগুলো পরিবর্তিত হয়েছে এবং ওগুলো হ্রাস বৃদ্ধি হতে মোটেই পবিত্র নয়। অতঃপর আরবী ভাষায় অনুদিত হয়ে যেগুলো আমাদের হাতে রয়েছে ওগুলো তো বড়ই ত্রুটিপূর্ণ এবং এগুলোর মধ্যে খুবই বাড়াবাড়ি আছে ও মূল হতে বহু ঘাটতিও রয়েছে। তাছাড়া ঐগুলোর মধ্যে স্পষ্ট সন্দেহ ও প্রকাশ্য ক্রটি বিদ্যমান। বরং প্রকৃত প্রস্তাবে ওকে অনুবাদ বলাই শোভনীয় নয়। ওটাতো তাফসীর, তাও আবার এমন তাফসীর যা মোটেই নির্ভরযোগ্য নয়। ওগুলো নির্বোধের লিখা তাফসীর। আর যদি হযরত অহাব (রঃ)-এর ঘোষণার ভাবার্থ হয় আল্লাহ তা'আলার কিতাব, অর্থাৎ যা প্রকৃতপক্ষেই আল্লাহর কিতাব, তবে তা নিঃসন্দেহে রক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে হ্রাস বৃদ্ধি সম্ভবই নয়।