Aal-i-Imraan • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ لَن تَنَالُوا۟ ٱلْبِرَّ حَتَّىٰ تُنفِقُوا۟ مِمَّا تُحِبُّونَ ۚ وَمَا تُنفِقُوا۟ مِن شَىْءٍۢ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِيمٌۭ ﴾
“[But as for you, O believers,] never shall you attain to true piety unless you spend on others out of what you cherish yourselves; and whatever you spend - verily, God has full knowledge thereof.”
হযরত আমর ইবনে মাইমুন (রঃ) বলেন যে, এখানে (আরবী) শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে জান্নাত। অর্থাৎ যে পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের পছন্দনীয় জিনিস হতে আল্লাহর পথে ব্যয় কর সে পর্যন্ত তোমরা কখনই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, সমস্ত আনসারের মধ্যে হযরত আবু তালহা (রাঃ) ছিলেন সবচেয়ে বেশী সম্পদশালী। তিনি তাঁর সমস্ত ধন-সম্পত্তির মধ্যে (আরবী) নামক বাগানটিকে সর্বাপেক্ষা বেশী পছন্দ করতেন। বাগানটি মসজিদই-ই-নববীর সম্মুখে অবস্থিত ছিল। রাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রায়ই ঐ বাগানে গমন করতেন এবং ওর কূপের নির্মল পানি পান করতেন। যখন উপরোক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তখন হযরত আবু তালহা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আল্লাহ তা'আলা এরূপ কথা বলেছেন এবং এ (আরবী) (নামক বাগানটিই) হচ্ছে আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ। এ জন্যে আমি ওটি আল্লাহর পথে সাদকা করছি এ আশায় যে, তার নিকট যে প্রতিদান রয়েছে তাই আমার জন্যে জমা থাকবে। সুতরাং আপনাকে অধিকার দিয়ে দিলাম যেভাবে ভাল মনে করেন ওটা বন্টন করে দিন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) খুশী হয়ে বলেনঃ বাঃ বাঃ! এটা খুবই উপকারী সম্পদ। এর দ্বারা জনগণের বেশ উপকার সাধিত হবে। আমার মত এই যে, তুমি এ সম্পদ তোমার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বন্টন করে দাও।' হযরত আবু তালহা (রাঃ) বলেন, “খুব ভাল। অতঃপর তিনি ওটা তার আত্মীয়-স্বজন এবং চাচাতো ভাইদের মধ্যে বন্টন করে দেন। (মুসনাদ-ই- আহমাদ, সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম) সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে এসেছে যে, একবার হযরত উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর খিদমতে হাযির হয়ে আরয করেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমার সবচেয় প্রিয় ও উত্তম মাল ওটাই যা খাইবারে আমার জমির একটি অংশ রয়েছে। (আমি ওটা আল্লাহর পথে সাদকা করতে চাই) বলুন, কি করি?' তিনি বলেনঃ মূলকে (জমিকে) তোমার অধিকারে রাখ এবং ওর উৎপাদিত শস্য, ফল ইত্যাদি আল্লাহর পথে ওয়াকফ করে দাও। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেনঃ ‘পাঠের সময় যখন আমি উপরোক্ত আয়াতে পৌছি তখন আমি আমার সমস্ত ধন-সম্পদ সম্বন্ধে চিন্তা করি। কিন্তু আমার রুমী দাসীটি অপেক্ষা অধিক প্রিয় কোন জিনিস আমার চোখে পড়লো না। কাজেই আমি ঐ দাসীটিকেই আল্লাহর পথে আযাদ করে দিলাম। আমার অন্তরে ওর প্রতি এত বেশী ভালবাসা রয়েছে যে, যদি আমি আল্লাহর পথে প্রদত্ত কোন জিনিস ফিরিয়ে নিতে পারতাম তবে আমি অবশ্যই তাকে বিয়ে করে নিতাম। (মুসনাদ-ই-বাযযার)