Ar-Room • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ فَٱصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ ٱللَّهِ حَقٌّۭ ۖ وَلَا يَسْتَخِفَّنَّكَ ٱلَّذِينَ لَا يُوقِنُونَ ﴾
“Remain, then, patient in adversity: verily, Gods promise [of resurrection] is true indeed - so let not those who are devoid of all inner certainty disquiet thy mind!”
৫৮-৬০ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ সত্যকে আমি এই পাক কালামে পরিপূর্ণভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি ও দৃষ্টান্ত দিয়ে বুঝিয়েছি যাতে সত্য তাদের কাছে প্রকাশিত হয়ে পড়ে। আর যেন তারা তাঁর আনুগত্যে আত্মনিয়োগ করে। তাদের কাছে যে কোন মুজিযাই আসুক না কেন, সত্যের নিদর্শন তারা যতই দেখুক না কেন, কোন চিন্তা-ভাবনা না করেই তারা অবশ্যই বলবেঃ তোমরা তো মিথ্যাশ্রয়ী। এটা যাদু, বাতিল ও মিথ্যা ছাড়া কিছুই নয়। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “যাদের উপর তোমার প্রতিপালকের কথা বাস্তবায়িত হয়েছে তারা সমস্ত নিদর্শন দেখলেও ঈমান আনয়ন করবে না যে পর্যন্ত না তারা বেদনাদায়ক শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।” (১০:৯৬-৯৭)তাই এখানে মহাপ্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ যাদের জ্ঞান নেই আল্লাহ এইভাবে তাদের অন্তরে মোহর করে দেন। হে নবী (সঃ)! তুমি তাদের বিরুদ্ধাচরণ ও শত্রুতার উপর ধৈর্যধারণ কর। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। অবশ্যই তিনি একদিন তোমাকে তাদের উপর জয়যুক্ত করবেন এবং তোমাকে সাহায্য করবেন। দুনিয়া ও আখিরাতে তিনি তোমাকে ও তোমার অনুসারীদেরকে বিরুদ্ধাচরণকারীদের উপর বিজয় দান করবেন। তুমি তোমার কাজ চালিয়ে যাও, কাজের উপর দৃঢ় থাকো। তোমার কাজ হতে এক ইঞ্চি পরিমাণও এদিক-ওদিক হয়ো না। এরই মধ্যে সমস্ত হিদায়াত লুক্কায়িত আছে, বাকীগুলো সবই বাতিলের। হযরত কাতাদা (রঃ) বলেন যে, একদা হযরত আলী (রাঃ) ফজরের নামায পড়ছিলেন এমন সময় একজন খারেজী তার নাম ধরে নিম্নের আয়াতটি পাঠ করেঃ (আরবি)অর্থাৎ “তোমার কাছে এবং তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে অহী করা হয়েছে যে, যদি তুমি শিরক কর তবে অবশ্যই তোমার আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (৩৯:৬৫)এটা শুনে হযরত আলী (রাঃ) নীরব হলেন এবং সে যা বললো তা বুঝলেন অতঃপর নামাযের মধ্যেই তিনি জবাবে (আরবি)-এই আয়াতটিই তিলাওয়াত করলেন। অর্থাৎ “তুমি ধৈর্যধারণ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। যারা দৃঢ় বিশ্বাসী নয় তারা যেন তোমাকে বিচলিত করতে না পারে।” (এটা ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) ও ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। এর ইসনাদও সুন্দর এবং মতনও উত্তম)এই পবিত্র সূরাটির ফযীলত এবং ফজরের নামাযে এটা পড়া মুস্তাহাব হওয়া সম্পর্কে যে হাদীস বর্ণিত হয়েছে তা নিম্নে দেয়া হল :নবী (সঃ)-এর সহাবীদের এক ব্যক্তি হতে বর্ণিত আছে যে, একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদেরকে নিয়ে ফজরের নামায পড়ছিলেন। এই নামাযে তিনি এই সূরায়ে রূম তিলাওয়াত করেন। ইত্যবসরে কিরআতে তাঁর মনে সংশয় সৃষ্টি হয়। নামায শেষে তিনি সাহাবীদেরকে সম্বোধন করে বলেনঃ “তোমাদের মধ্যে এমনও কতকগুলো লোক আমাদের সাথে নামাযে শামিল হয়ে যায় যারা ভালভাবেও নিয়মিত অযু করে না। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা নামাযে দাঁড়াবে তারা যেন উত্তমরূপে অযু করে নেয়। এই হাদীসটি দ্বারা একটি বিস্ময়কর রহস্য উদঘাটিত হলো এবং একটি বড় খবর এই পাওয়া গেল যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর মুক্তাদীদের অযু সম্পূর্ণরূপে ঠিক হওয়ার ক্রিয়া বা প্রভাব তার উপরও পড়েছিল। সুতরাং এটা প্রমাণিত হলো যে, ইমামের নামাযের সাথে মুক্তাদীদের নামাযও মুআল্লাক বা দোদুল্যমান।