Yaseen • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ إِلَّا رَحْمَةًۭ مِّنَّا وَمَتَٰعًا إِلَىٰ حِينٍۢ ﴾
“unless it be by an act of mercy from Us and a grant of life for a [further span of] time.”
৪১-৪৪ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা স্বীয় ক্ষমতার আর একটি নিদর্শন বর্ণনা করছেন যে, তিনি সমুদ্রকে কাজে লাগিয়ে রেখেছেন যাতে নৌযানগুলো বরাবরই যাতায়াত করতে রয়েছে। সর্বপ্রথম নৌকাটি ছিল হযরত নূহ (আঃ)-এর, যার উপর সওয়ার হয়ে স্বয়ং তিনি এবং তার সঙ্গীয় ঈমানদাররা রক্ষা পেয়েছিলেন। তারা ছাড়া সারা ভূ-পৃষ্ঠে আর একটি লোকও রক্ষা পায়নি।মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি তাদের বংশধরদেরকে বোঝাই নৌযানে আরোহণ করিয়েছিলাম। নৌকাটি পূর্ণরূপে বোঝাই থাকার কারণ ছিল এই যে, তাতে প্রয়োজনীয় সমস্ত আসবাবপত্র ছিল এবং সাথে সাথে আল্লাহ তাআলার নির্দেশক্রমে তাতে অন্যান্য জীবজন্তুকেও উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল। প্রত্যেক প্রকারের জন্তু এক জোড়া করে ছিল। নৌযানটি ছিল খুবই দৃঢ়, মযবূত ও বিরাট। এই বিশেষণগুলোও সঠিকভাবে হযরত নূহ (আঃ)-এর নৌকার উপরই বসে। অনুরূপভাবে মহামহিমান্বিত আল্লাহ স্থলভাগের সওয়ারীগুলোও মানুষের জন্যে সৃষ্টি করেছেন। যেমন স্থলে উট ঐ কাজই দেয় যে কাজ সমুদ্রে নৌযান দ্বারা হয়। অনুরূপভাবে অন্যান্য চতুষ্পদ জন্তুগুলোও স্থলভাগে মানুষের কাজে লেগে থাকে। এও হতে পারে যে, হযরত নূহ (আঃ)-এর নৌকাটি নমুনা স্বরূপ হয়, অতঃপর এই নমুনার উপর অন্যান্য নৌকা ও পানি জাহাজ নির্মিত হয়। নিম্নের আয়াতগুলো এর পৃষ্ঠপোষকতা করেঃ (আরবী) অর্থাৎ ‘যখন জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল তখন আমি তোমাদেরকে আরোহণ করিয়েছিলাম নৌযানে। আমি এটা করেছিলাম তোমাদের শিক্ষার জন্যে এবং এই জন্যে যে, শ্রুতিধর কর্ণ এটা সংরক্ষণ করে।”(৬৯-১১-১২)মহান আল্লাহ বলেনঃ তোমরা আমার নিয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়ো না। চিন্তা করে দেখো যে, কিভাবে আমি তোমাদেরকে সমুদ্র পার করে দিলাম। আমি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে সমুদ্রে নিমজ্জিত করে দিতে পারি। গোটা নৌকাটি পানির নীচে বসিয়ে দিতে আমি পূর্ণরূপে ক্ষমতাবান। তখন এমন কেউ হবে না যে তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে এবং তোমাদেরকে বাচাতে পারে। কিন্তু এটা একমাত্র আমারই রহমত যে, তোমরা লম্বা চওড়া সফর আরামে ও নিরাপদে অতিক্রম করছে এবং আমি তোমাদেরকে আমার ওয়াদাকৃত নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সর্বপ্রকারের শান্তিতে রাখছি।