Az-Zumar • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ بَلِ ٱللَّهَ فَٱعْبُدْ وَكُن مِّنَ ٱلشَّٰكِرِينَ ﴾
“Nay, but thou shalt worship God [alone], and be among those who are grateful [to Him]!”
৬২-৬৬ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা সংবাদ দিচ্ছেন যে, সমস্ত প্রাণী এবং নির্জীব বস্তুর সৃষ্টিকর্তা, মালিক, প্রতিপালক এবং ব্যবস্থাপক আল্লাহ তা'আলা একাই। সব জিনিসই তাঁর অধীনস্থ ও অধিকারভুক্ত। সব কিছুর কর্মবিধায়ক তিনিই। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর চাবিকাঠি তারই নিকট রয়েছে। সমুদয় প্রশংসার যোগ্য এবং সমস্ত জিনিসের উপর ক্ষমতাবান একমাত্র তিনিই। কুফরী ও অস্বীকারকারীরা বড়ই ক্ষতিগ্রস্ততার মধ্যে রয়েছে। ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ) এখানে একটি হাদীস এনেছেন, যদিও এটা সনদের দিক দিয়ে খুবই গরীব, এমনকি এর সত্যতার ব্যাপারেও বাক-বিতণ্ডা রয়েছে, তথাপি আমরা এখানে ওটা বর্ণনা করছি। তাতে রয়েছে যে, হযরত উসমান (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে এই আয়াতের ভাবার্থ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ “হে উসমান (রাঃ)! তোমার পূর্বে কেউই আমাকে এই আয়াতের ভাবার্থ জিজ্ঞেস করেনি। এর তাফসীর হচ্ছে নিম্নের কালেমাগুলোঃ (আরবী) অর্থাৎ “আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, আল্লাহ সবচেয়ে বড়। আমি আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি ও তার প্রশংসা করছি। আল্লাহর নিকট আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আল্লাহ ছাড়া কারো কোন শক্তি নেই। তিনিই প্রথম এবং তিনিই শেষ। তিনিই প্রকাশ্য এবং তিনিই গোপনীয়। সমস্ত মঙ্গল তাঁরই হাতে। তিনিই জীবিত করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান এবং তিনি প্রত্যেক জিনিসের উপর ক্ষমতাবান”। হে উসমান (রাঃ)! যে ব্যক্তি সকালে এটাকে দশবার পড়বে তাকে আল্লাহ তা'আলা ছয়টি ফযীলত দান করবেন। (এক) সে শয়তান ও তার সেনাবাহিনী হতে বেঁচে যাবে। (দুই) সে এক কিনতার বিনিময় লাভ করবে। (তিন) জান্নাতে তার এক ধাপ মান উঁচু হবে। (চার) বড় বড় চক্ষু বিশিষ্ট হূরের সাথে তার বিয়ে হবে। (পাঁচ) তার কাছে বারোজন ফেরেশতা আসবেন। (ছয়) তাকে এই পরিমাণ সওয়াব দেয়া হবে যেমন সওয়াব দেয়া হয় ঐ ব্যক্তিকে যে কুরআন, তাওরাত, ইনজীল ও যবূর পাঠ করে। তাছাড়া তাকে এক ককূল হজ্ব ও ককূল উমরার সওয়াব দেয়া হবে। ঐদিন যদি তার মৃত্যু হয়ে যায় তবে সে শহীদের মর্যাদা লাভ করবে।” (এ হাদীসটি খুবই গরীব এবং এটা স্বীকৃত নয়। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন)হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তাকে মুশরিকরা বলেঃ “এসো, তুমি আমাদের মাবুদগুলোর ইবাদত কর এবং আমরা তোমাদের প্রতিপালকের ইবাদত করি।” তখন (আরবী) হতে (আরবী) পর্যন্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়। এটা আল্লাহ তা'আলার (আরবী)-এই উক্তির মতই। অর্থাৎ “যদি তারা শিরক করে তবে তারা যা আমল করতো সবই নষ্ট হয়ে যাবে।” (৬:৮৯) এখানেও মহান আল্লাহ বলেনঃ (হে নবী সঃ!) তোমার প্রতি ও তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবশ্যই অহী করা হয়েছেঃ তুমি আল্লাহর শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম নিষ্ফল হবে এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্ত। অতএব, তোমার উচিত যে, তুমি আন্তরিকতার সাথে আল্লাহরই ইবাদত করবে এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হবে। এটা তোমার এবং তোমার অনুসারীদের অবশ্য কর্তব্য।