Az-Zumar • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ أَمَّنْ هُوَ قَٰنِتٌ ءَانَآءَ ٱلَّيْلِ سَاجِدًۭا وَقَآئِمًۭا يَحْذَرُ ٱلْءَاخِرَةَ وَيَرْجُوا۟ رَحْمَةَ رَبِّهِۦ ۗ قُلْ هَلْ يَسْتَوِى ٱلَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَٱلَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ ۗ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُو۟لُوا۟ ٱلْأَلْبَٰبِ ﴾
“Or [dost thou deem thyself equal to] one who devoutly worships [God] throughout the night, prostrating himself or standing [in prayer], ever- mindful of the life to come, and hoping for his Sustainer’s grace?” Say: “Can they who know and they who do not know be deemed equal?” [But] only they who are endowed with insight keep this in mind!”
মহামহিমান্বিত আল্লাহ্ বলেন যে, যাদের মধ্যে উপরোক্ত গুণাবলী রয়েছে। তারা আল্লাহ্ তা'আলার নিকট মুশরিকদের সমতুল্য নয়। যেমন আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তারা সবাই এক রকম নয়। কিতাবীদের মধ্যে অবিচলিত একদল আছে। তারা রাত্রিকালে আল্লাহর আয়াত আবৃত্তি করে এবং সিজদা করে।”(৩:১১৩)(আরবী) দ্বারা এখানে নামাযের খুশু-খুযু’ (বিনয় ও নম্রতা) বুঝানো হয়েছে, শুধু দাঁড়ানো অবস্থাকে বুঝানো হয়নি। হযরত ইবনে মাসউদ (রা) হতে (আরবী)-এর অর্থ ‘অনুগত ও বাধ্য বর্ণিত হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) প্রমুখ সাহাবী হতে বর্ণিত আছে যে, (আরবী) দ্বারা অর্ধ রাত্রি বুঝানো হয়েছে। মানসূর (রঃ) বলেন যে, এটা হলো মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়। কাতাদা (রঃ) প্রমুখ গুরুজন বলেন যে, এর দ্বারা প্রথম, মধ্য ও শেষ রাত্রিকে বুঝানো হয়েছে।এই আবেদ লোকগুলো একদিকে আল্লাহর ভয়ে থাকেন ভীত-সন্ত্রস্ত এবং অপরদিকে থাকেন তাঁর করুণার আশা পোষণকারী। সক্কর্মশীলদের অবস্থা এই যে, তাদের জীবদ্দশায় তাঁদের উপর আল্লাহর ভয় তার রহমতের আশার উপর বিজয়ী থাকে। কিন্তু মৃত্যুর সময় ভয়ের উপর আশাই জয়যুক্ত হয়।হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোকের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসলে রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) তার নিকট গমন করেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “নিজেকে তুমি কি অবস্থায় পাচ্ছ?” উত্তরে লোকটি বলেঃ “নিজেকে আমি এ অবস্থায় পাচ্ছি যে, আমি আল্লাহকে ভয় করছি ও তাঁর রহমতের আশা করছি।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “এরূপ সময়ে যার অন্তরে এ দুটো জিনিস একত্রিত হয় তার আশা আল্লাহ্ পুরো করে থাকেন এবং যা হতে সে ভয় করে তা হতে তাকে মুক্তি দান করেন। (এ হাদীসটি ইমাম আবৃদ ইবনে হুমায়েদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। জামে তিরমিযী ও সুনানে ইবনে মাজাহতেও এটা বর্ণিত হয়েছে)হযরত ইবনে উমার (রাঃ) ... (আরবী)-এই আয়াতটি তিলাওয়াত করার পর বলেনঃ “এই গুণ তো হযরত উসমান (রাঃ)-এর মধ্যে ছিল। তিনি রাত্রিকালে বহুক্ষণ ধরে (তাহাজ্জুদ) নামায পড়তেন এবং তাতে কুরআন কারীমের লম্বা কিরআত করতেন, এমনকি কখনো কখনো তিনি একই রাকাআতে কুরআন খতম করে দিতেন।” যেমন এটা হযরত আবু উবাইদা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। কবি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “সকালে তাঁর মুখমণ্ডল সিজদার কারণে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, কেননা, তিনি তাসবীহ ও কুরআন পাঠে রাত্রি কাটিয়ে দেন।” হযরত তামীমুদ দারী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি এক রাত্রে একশটি আয়াত পাঠ করে, তার আমলনামায় সারা রাত্রির কুনূতের সওয়াব লিখা হয়।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) ও ইমাম নাসাঈ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)সুতরাং এরূপ লোক এবং মুশরিকরা কখনো সমান হতে পারে না। অনুরূপভাবে যারা আলেম এবং যারা আলেম নয় তারাও মর্যাদার দিক দিয়ে কখনো সমান হতে পারে না। প্রত্যেক বিবেকবান ব্যক্তির কাছে এই দুই শ্রেণীর লোকের পার্থক্য প্রকাশমান।