An-Nisaa • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ يُرِيدُ ٱللَّهُ أَن يُخَفِّفَ عَنكُمْ ۚ وَخُلِقَ ٱلْإِنسَٰنُ ضَعِيفًۭا ﴾
“God wants to lighten your burdens: for man has been created weak.”
২৬-২৮ নং আয়াতের তাফসীর: কুরআন ঘোষণা করে- হে মুমিনগণ! আল্লাহ তা'আলা তোমাদের উপর হালাল ও হারাম স্পষ্টভাবে বর্ণনা করতে চান, যেমন এ সূরায় এবং অন্যান্য সূরাসমূহে তিনি বর্ণনা করেছেন। তিনি তোমাদেরকে তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের প্রশংসনীয় পথে চালাতে চান, যেন তোমরা তাঁর শরীয়তের উপর আমল করতে থাক যে কাজ তাঁর নিকট প্রিয় ও যে কাজে তিনি সন্তুষ্ট। তিনি তোমাদের তাওবা কবুল করতে চান। যে পাপ ও অন্যায়কার্য হতে তোমরা তাওবা করে থাক সে তাওবা তিনি সতুর কবুল করে থাকেন। তিনি মহাজ্ঞানী ও মহা বিজ্ঞানময়। স্বীয় শরীয়তে, স্বীয় অনুমানে, স্বীয় কার্যে ও স্বীয় ঘঘাষণায় তিনি সঠিক জ্ঞান ও পর্ণ নিপুণতার অধিকারী। প্রবত্তি পূজারীরা অর্থাৎ শয়তানের দাস ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টানেরা এবং অসৎ লোকেরা তোমাদের পদস্খলন ঘটিয়ে তোমাদেরকে সত্য ও সরল পথ হতে সরিয়ে দিয়ে অন্যায় ও অসত্যের পথে চালাতে চায়। আল্লাহ তা'আলা শরীয়তের আহকাম নির্ধাণের ব্যাপারে তোমাদের পথ সহজ করতে চান এবং এর উপর ভিত্তি করেই কতগুলো শর্ত আরোপ করতঃ দাসীদেরকে বিয়ে করে নেয়া তোমাদের জন্যে বৈধ করেছেন। মানুষ জন্মগত দুর্বল বলে মহান আল্লাহ স্বীয় আহকামের মধ্যে কোন কাঠিন্য রাখেননি। মানুষ সৃষ্টিগতই দুর্বল বলে তার আকাঙ্ক্ষা ও প্রবৃত্তি দুর্বল। তারা স্ত্রীদের ব্যাপারে দুর্বল। তারা এখানে এসে একেবারে বোকা বনে যায়।তাই রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন মিরাজের রাত্রে ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ হতে ফিরে আসেন এবং হযরত মূসা কালীমুল্লাহ (আঃ)-এর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয় তখন তিনি রাসূল্লাহ (সঃ)-কে জিজ্ঞেস করেনঃ “আপনার উপর কি ফরয করা হয়েছে?' তিনি বলেনঃ “প্রত্যহ দিন রাতে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায। তখন হযরত মূসা (আঃ) বলেনঃ 'আপনি ফিরে যান এবং মহান আল্লাহর নিকট লঘুকরণের জন্যে প্রার্থনা করুন। আপনার উম্মতের মধ্যে এটা পালনের শক্তি নেই। আপনার পূর্ববর্তী লোকদেরকে আমি পরীক্ষা করেছি। তারা এর চেয়ে বহু কমেও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। আর আপনার উম্মত তো কর্ণের, চক্ষুর এবং অন্তরের দুর্বলতায় তাদেরকেও ছাড়িয়ে গেছে।'অতএব রাসূলুল্লাহ (সঃ) ফিরে যান এবং দশ ওয়াক্ত কমিয়ে আনেন। পুনরায় হযরত মূসা (আঃ)-এর সঙ্গে একই আলোচনা হয়। তিনি পুনরায় ফিরে যান এবং আবার দশ ওয়াক্ত কম করিয়ে আনেন। অবশেষে পাঁচ ওয়াক্ত থেকে যায়।