Az-Zukhruf • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ فَلَمَّا كَشَفْنَا عَنْهُمُ ٱلْعَذَابَ إِذَا هُمْ يَنكُثُونَ ﴾
“But whenever We removed the suffering from them, lo! they would break their word.”
৪৬-৫০ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা হযরত মূসা (আঃ)-কে স্বীয় রাসূল করে ফিরাউন, তার সভাষদবর্গ, তার প্রজা কিবতী এবং বানী ইসরাঈলের নিকট প্রেরণ করেন, যাতে তিনি তাদেরকে তাওহীদ শিক্ষা দেন এবং শিরক হতে রক্ষা করেন। আল্লাহ তা'আলা তাঁকে বড় বড় মু'জিযাও দান করেন। যেমন হাত উজ্জ্বল হওয়া, লাঠি সর্প হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। কিন্তু ফিরাউন ও তার লোকেরা তাঁর কোন মর্যাদা দিলো না। বরং তাঁকে অবিশ্বাস করলো এবং ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে উড়িয়ে দিলো। তখন তাদের উপর আল্লাহর আযাব আসলো যাতে তাদের শিক্ষা লাভ হয় এবং হযরত মূসা (আঃ)-এর উপর দলীলও হয়। তুফান আসলো, ফড়িং আসলো, উকুন আসলো, ব্যাঙ আসলো, শস্য, মাল, ফল ইত্যাদি কমতে শুরু করলো। যখনই কোন আযাব আসতো তখনই তারা অস্থির হয়ে উঠতো এবং হযরত মূসা (আঃ)-কে অনুনয় বিনয় করে বলতো যে, তিনি যেন ঐ আযাব সরিয়ে নেয়ার জন্যে আল্লাহ তা'আলার নিকট দু'আ করেন। এবার আযাব সরে গেলেই তারা ম্মান আনবে। এই ভাবে তারা ওয়াদা-অঙ্গীকার করতো। কিন্তু হযরত মূসা (আঃ)-এর দু'আর ফলে যখন আযাব সরে যেতো তখন আবার তারা হঠকারিতায় লেগে পড়তো। আবার আযাব আসতো এবং তারা ঐরূপ করতো।(আরবী) অর্থাৎ যাদুকর দ্বারা তারা খুব বড় আলেমকে বুঝাতো। তাদের যুগের আলেমদের উপাধি এটাই ছিল। তাদের যুগের লোকদের মধ্যে এটা একটা ইলম বলৈ গণ্য হতো এবং তাদের যুগে এটা নিন্দনীয় ছিল না। বরং এটা খুব মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখা হতো। সুতরাং তাদের হযরত মূসা (আঃ)-কে ‘হে যাদুকর’ বলে সম্বোধন করা সম্মানের জন্যে ছিল, প্রতিবাদ হিসেবে ছিল না। কেননা, তাদের কাজ তো চলেই যেতো। প্রত্যেকবার তারা মুসলমান হয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করতো এবং একথাও বলতো যে, তারা বানী ইসরাঈলকে তাঁর সাথে পাঠিয়ে দিবে। কিন্তু যখনই আযাব সরে যেতো তখন তারা বিশ্বাসঘাতকতা করতো এবং অঙ্গীকার ভঙ্গ করে দিতো। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “অতঃপর আমি তাদেরকে পাবন, পঙ্গপাল, উকুন, ভেক ও রক্ত দ্বারা ক্লিষ্ট করি। এগুলো স্পষ্ট নিদর্শন, কিন্তু তারা দাম্ভিকই রয়ে গেল, আর তারা ছিল এক অপরাধী সম্প্রদায়। যখন তাদের উপর শাস্তি আসতো তখন তারা বলতোঃ হে মূসা (আঃ)! তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট আমাদের জন্যে প্রার্থনা কর তোমার সাথে তার যে অঙ্গীকার রয়েছে তদনুযায়ী, যদি তুমি আমাদের উপর হতে শাস্তি অপসারিত কর তবে আমরা তো তোমাকে বিশ্বাস করবোই এবং বানী ইসরাঈলকেও তোমার সাথে যেতে দিবো। অতঃপর যখনই আমি তাদের উপর হতে শাস্তি অপসারিত করতাম এক নির্দিষ্ট কালের জন্যে যা তাদের জন্য নির্ধারিত ছিল, তারা তখনই তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করতো।”(৭:১৩৩-১৩৫)।