Al-Fath • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَلِلَّهِ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۚ يَغْفِرُ لِمَن يَشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَن يَشَآءُ ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورًۭا رَّحِيمًۭا ﴾
“But God’s is the dominion over the heavens and the earth: He forgives whomever He wills, and imposes suffering on whomever He wills - and [withal,] He is indeed much-forgiving, a dispenser of grace.”
১১-১৪ নং আয়াতের তাফসীর: যেসব আরব বেদুঈন জিহাদ হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সঙ্গ ছেড়ে দিয়েছিল এবং মৃত্যুর ভয়ে বাড়ী হতে বের হয়নি, আর মনে করে নিয়েছিল যে, এতো বড় কুফরী শক্তির সামনে তারা কখনো টিকতে পারবে না এবং যারা তাদের সঙ্গে লড়বে তাদের ধ্বংস অনিবার্য, তারা আর কখনো তাদের ছেলে মেয়েদের মুখ দেখতে পাবে না, যুদ্ধক্ষেত্রেই তারা সবাই নিহত হয়ে যাবে, কিন্তু যখন তারা দেখলো যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বীয় সাহাবীবর্গ (রাঃ) সহ আনন্দিত অবস্থায় ফিরে আসলেন তখন তারা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সামনে মিথ্যা ওযর পেশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলো। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবী (সঃ)-কে পূর্বেই অবহিত করেন যে, এই মন্দ অন্তর বিশিষ্ট লোকেরা তাঁর কাছে। এসে মুখে অন্তরের বিপরীত কথা বলবে এবং মিথ্যা ওযর পেশ করবে। তারা বলবেঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমাদের ধন-সম্পদ ও পরিবার পরিজন আমাদেরকে ব্যস্ত রেখেছে, অতএব তাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।” মহামহিমান্বিত আল্লাহ তাদের এ কথার জবাবে বলেনঃ “তারা মুখে যা বলে তা তাদের অন্তরে নেই। সুতরাং হে নবী (সঃ)! তুমি তাদেরকে বলে দাও- যদি আল্লাহ তোমাদের কারো কোন ক্ষতি কিংবা মঙ্গল সাধনের ইচ্ছা করেন তবে কে তাঁকে নিবৃত্ত করতে পারে? তোমরা জেনে রেখো যে, তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবহিত।” অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা মুনাফিক বা কপটদের কপটতা সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফহাল। তাঁর কাছে কোন কিছুই গোপন থাকে না। তিনি ভালরূপেই জানেন যে, মুনাফিকদের যুদ্ধ হতে পিছনে সরে থাকা কোন ওযরের কারণে ছিল না, বরং প্রকৃত কারণ ছিল তাদের অবাধ্যতা এবং কপটতা। তাদের অন্তর সম্পূর্ণরূপে ঈমান শূন্য। তারা আল্লাহর উপর নির্ভরশীল নয় এবং রাসূল (সঃ)-এর আনুগত্যে যে কল্যাণ রয়েছে এ বিশ্বাস তাদের নেই। তারা নিজেদের প্রাণ ভয়ে ভীত। তারা নিজেরা যুদ্ধে মারা যাবে এ ভয়তো তাদের ছিলই, এমন কি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাহাবীদের (রাঃ) সম্পর্কেও তাদের ধারণা ছিল যে, তাঁরা সবাই নিহত হয়ে যাবেন, একজনও রক্ষা পাবেন না যিনি তাঁদের সংবাদ আনয়ন করতে পারেন। এই ধারণা তাদের অন্তরে প্রীতিকর মনে হয়েছিল। তাই, আল্লাহ তা'আলা তাদের সম্পর্কে বলেনঃ “তোমরা মন্দ ধারণা করেছিলে, তোমরা তো ধ্বংসমুখী এক সম্প্রদায়।”এরপর প্রবল পরাক্রান্ত আল্লাহ বলেনঃ “যারা আল্লাহ ও র সূল (সঃ)-এর প্রতি ঈমান আনে না, আমি ঐ সব কাফিরের জন্যে জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত রেখেছি।”অতঃপর আল্লাহ তা'আলা স্বীয় আধিপত্য, শাসন ক্ষমতা ও স্বেচ্ছাচারিতার বর্ণনা দিচ্ছেন যে, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। তিনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। যে কেউ তার দিকে ঝুঁকে পড়ে এবং তাঁর রহমতের দরযায় করাঘাত করে, তিনি তার জন্যে তাঁর রহমতের দরযা খুলে দেন। তার পাপ যত বেশীই হোক না কেন, যখন সে তাওবা করে তখন করুণাময় আল্লাহ তার তাওবা কবুল করে নেন। এবং তাকে ক্ষমা করে থাকেন।