Al-Hujuraat • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَلَوْ أَنَّهُمْ صَبَرُوا۟ حَتَّىٰ تَخْرُجَ إِلَيْهِمْ لَكَانَ خَيْرًۭا لَّهُمْ ۚ وَٱللَّهُ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ﴾
“for, if they had the patience [to wait] until thou come forth to them [of thine own accord], it would be for their own good. Still, God is much forgiving, a dispenser of grace.”
৪-৫ নং আয়াতের তাফসীর: এই আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা'আলা ঐ লোকগুলোর নিন্দে করছেন যারা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে তার বাড়ীর পিছন হতে ডাকতো, যেমন এটা আরববাসীদের মধ্যে প্রচলিত ছিল। তাই আল্লাহ পাক বলেন যে, তাদের অধিকাংশই নির্বোধ।অতঃপর এই ব্যাপারে আদব বা দ্রতা শিক্ষা দিতে গিয়ে বলেনঃ “হে নবী (সঃ)! তুমি বের হয়ে তাদের নিকট আসা পর্যন্ত তারা যদি ধৈর্য ধারণ করতে তবে ওটাই তাদের জন্যে উত্তম হতো।' অর্থাৎ তাদের উচিত ছিল যে, তারা নবী (সঃ)-এর অপেক্ষায় থাকতো এবং যখন তিনি বাড়ী হতে বের হতেন তখন তাকে যা বলার ছিল তাই তারা বলতো এবং বাহির হতে তাঁকে ডাক দেয়া তাদের জন্যে মোটেই উচিত ছিল না। এরূপভাবে বাহির হতে তাঁকে ডাক না দিলে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ তারা লাভ করতো। অতঃপর মহান আল্লাহ যেন হুকুম দিচ্ছেন যে, এরূপ লোকদের উচিত আল্লাহ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা। কেননা, তিনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। এ আয়াতটি হযরত আকরা ইবনে হাবিস (রাঃ)-এর ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, একটি লোক রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে হে মুহাম্মাদ (সঃ), হে মুহাম্মাদ (সঃ)! এভাবে নাম ধরে ডাক দেয়। রাসূলুল্লাহ (সঃ) কোন জবাব দিলেন না। তখন সে বলেঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমার প্রশংসা করা শ্রেষ্ঠত্নের কারণ। এবং আমার নিন্দা করা লাঞ্ছনার কারণ।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন বলেনঃ “এরূপ। সত্তা তো হলেন একমাত্র মহামহিমান্বিত আল্লাহ।” হযরত সুফিয়ান সাওরী (রঃ) হযরত হাবীব ইবনে আবি উমরা (রঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, একদা বিশর ইবনে গালিব এবং লাবীদ ইবনে আতারিদ হাজ্জাজের সামনে বসেছিলেন। বিশর ইবনে গালিব লাবীদ ইবনে আতারিদকে বললেনঃ “তোমার কওম বানু তামীমের ব্যাপারে (আরবী)-এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে।” যখন হযরত সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রাঃ)-এর সামনে এটা বর্ণনা করা হলো তখন তিনি বললেনঃ সে যদি আলেম হতো তবে এ সূরার (আরবী)-এই আয়াত পাঠ করে জবাব। দিতো। তারা বলেছিলঃ “আমরা ইসলাম গ্রহণ করেছি, সুতরাং বানু আসাদ গোত্র আপনার সাথে যুদ্ধ করবে না।”হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ কতকগুলো আরব বেদুঈন একত্রিত হয় এবং তারা বলেঃ “চলো, আমরা এ লোকটির (নবী সঃ)-এর কাছে যাই। যদি তিনি নবী হন তাহলে তাঁর নিকট হতে সৌভাগ্য লাভ করার ব্যাপারে আমরাই বড় হকদার। আর যদি তিনি বাদশাহ হন তবে আমরা তার ডানার নীচে পড়ে থাকবো।” আমি গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে এ খবর দিলাম। ইতিমধ্যে তারা এসে পড়লো এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে তার ঘরের পিছন হতে হে মুহাম্মাদ (সঃ)! হে মুহাম্মাদ (সঃ)! বলে ডাকতে লাগলো। তখন আল্লাহ তা'আলা (আরবী) আয়াতটি অবতীর্ণ করলেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন আমার কান ধরে বললেনঃ “হে যায়েদ (রাঃ)! আল্লাহ তোমার কথা সত্যরূপে দেখিয়েছেন। হে যায়েদ (রাঃ)! অবশ্যই আল্লাহ তোমার কথা সত্যরূপে দেখিয়েছেন।”